তিব্বতের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর একটি বিশাল বাঁধ নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে চীন। এই প্রকল্প বাঁধের আশপাশ এবং এর ভাটিতে অবস্থিত অঞ্চলে পরিবেশগত প্রভাব এবং চীন-ভারত সম্পর্কের ওপর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
ইয়ারলুন সাংপো (ভারত-বাংলাদেশে ব্রহ্মপুত্র নামে পরিচিত) নদীর ভাটিতে বাঁধটি নির্মিত হলে এটি হবে বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ প্রকল্প। এটি চীনের তৈরি আরেকটি বিশাল বাঁধ থ্রি গর্জেসের চেয়ে তিন গুণ বেশি শক্তি উৎপাদনে সক্ষম হতে পারে। এই বাঁধের নির্মাণ চীনের তিব্বত মালভূমির জলবিদ্যুৎ সম্ভাবনা কাজে লাগানোর পরিকল্পনায় একটি বড় পদক্ষেপ। তবে এটি চীন-ভারত সীমান্ত অঞ্চলে বাঁধ নির্মাণ প্রতিযোগিতা তীব্র করতে পারে বলে কূটনৈতিক ও পরিবেশগত বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, চীন সরকার সম্প্রতি বিশাল প্রকল্পটি অনুমোদন করেছে। এই প্রকল্প বেইজিংয়ের ২০২১-২৫ সালের ১৪তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত ছিল।
প্রতিবেদনে প্রকল্পটির সঠিক স্থান সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি। তবে এটি তিব্বতের দীর্ঘতম নদী ইয়ারলুন সাংপোর এমন একটি কৌশলগত স্থানে নির্মাণ করা হবে, যা বাঁধটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প হওয়ার সুযোগ দেবে। এই নদ ব্রহ্মপুত্র নামে ভারতের অরুণাচল-আসাম প্রদেশে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে এবং এরপর এটির একটি শাখা যমুনা নামে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আদি খাতকে পুরোনো ব্রহ্মপুত্র বলা হয়।
জানা গেছে, প্রকল্পটি নির্মিত হবে ইয়ারলুন সাংপোর ভাটিতে অবস্থিত গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন বা ‘গ্রেট বেন্ড’ এলাকায়। চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত পাওয়ার কনস্ট্রাকশন করপোরেশন ২০২০ সালে একটি অনুমান প্রকাশ করেছিল যে এই বাঁধ বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জলবিদ্যুৎ সম্ভাবনাময় অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি এবং এটি প্রায় ৩০০ বিলিয়ন কিলোওয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে প্রতি বছর।
এটি বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাঁধ থ্রি গর্জেস বাঁধকে ছাড়িয়ে যাবে। থ্রি গর্জেস জলবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে প্রতি বছর ৮৮ দশমিক ২ বিলিয়ন কিলোওয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। সিনহুয়া প্রস্তাবিত বাঁধটিকে ‘একটি নিরাপদ প্রকল্প’ বলে উল্লেখ করেছে। তারা দাবি করেছে, এই প্রকল্প ‘পরিবেশগত সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দেয়’ এবং ‘এটি একটি সবুজ প্রকল্প, যা কম কার্বন নিঃসরণকে’ উৎসাহিত করতে সাহায্য করবে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং শুক্রবার বলেছেন, প্রকল্পটি নিয়ে কয়েক দশক ধরে গবেষণা করা হয়েছে। যার মধ্যে প্রকল্পের নিরাপত্তা এবং পরিবেশগত প্রভাব মোকাবিলার জন্য পদক্ষেপ এবং ভাটিতে নেতিবাচক প্রভাব প্রতিরোধের ব্যবস্থা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘চীন বর্তমানে ভাটির দেশগুলোর সঙ্গে বিদ্যমান যোগাযোগের চ্যানেল বজায় রাখবে এবং বিপর্যয় প্রতিরোধ ও প্রশমনে সহযোগিতা বাড়াবে।’
তবে বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞ এটি নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাঁরা বলছেন, প্রকল্পটি তিব্বত মালভূমির নাজুক বাস্তুতন্ত্র, স্থানীয় সম্প্রদায় এবং ভাটির দেশগুলোর ওপর কেমন প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। এ ছাড়া এর বিশাল প্রকৌশল খরচ এবং চ্যালেঞ্জগুলো তো আছেই।
সিচুয়ান প্রদেশের ভূতাত্ত্বিক ফান সিয়াও বলেছিলেন, বাঁধটির অবস্থান একটি বিরল ‘জৈববৈচিত্র্য হটস্পটে’ এবং ভূতাত্ত্বিকভাবে একটি অস্থিতিশীল অঞ্চলে এটি অবস্থিত। বিষয়টি পরিবেশের জন্য ‘অপ্রত্যাবর্তনীয় ক্ষতির’ কারণ হতে পারে। তিনি বলেন, ‘এই এলাকা খুব বেশি ভূমিকম্পপ্রবণ। ভূমিকম্পের ফলে এ ধরনের মহা জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের ঝাঁকুনি ভূমিধস এবং অন্যান্য বিপর্যয়ের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।’
ফান সিয়াও আরও বলেন, ‘ইয়ারলুন সাংপো গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের ভূতাত্ত্বিক অস্থিতিশীলতা এবং ভূতাত্ত্বিক বিপর্যয়ের সম্ভাবনা চীনের পশ্চিমাঞ্চলের অন্যান্য নদীর চেয়ে অনেক বেশি।’ তাঁর মতে, ‘আমার ভয়, প্রস্তাবিত জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটি নির্মাণে বিশাল খরচ হবে এবং বিপর্যয়ের ব্যাপক আশঙ্কা তৈরি হবে এতে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে গত দুই দশকে বাঁধ নির্মাণের ক্ষেত্রে যে তাণ্ডবলীলা ঘটেছে, তার ফলে ওই অঞ্চলের জলবিদ্যুৎ শক্তির অতিরিক্ত উৎপাদন হয়েছে। কিন্তু দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা কমে যাওয়ায় উদ্বৃত্ত তৈরি হয়েছে।’
ফান সিয়াও চীন সরকারের দাবিগুলোর প্রতি সন্দেহ পোষণ করেন। তিনি উল্লেখ করেন, বড় বাঁধ প্রকল্পগুলো মূলত অর্থনৈতিক চিন্তা এবং বিভিন্ন গোষ্ঠীগুলোর স্বার্থে হাতে নেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে এসব গোষ্ঠী যথাযথ বৈজ্ঞানিক সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে খুব একটা গুরুত্ব দেয় না এবং এগুলোতে জনসাধারণের যথাযথ অংশগ্রহণ থাকে না।
এই বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, ‘এটি এখনো অস্পষ্ট যে ভূতাত্ত্বিক বিপর্যয়ের সম্ভাব্য প্রভাব, পরিবেশগত ক্ষতি এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাব মূল্যায়ন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে কি না। কিংবা ভাটির ব্রহ্মপুত্রের খাত এবং উপমহাদেশের সমতল ভূমির ওপর এই বাঁধের পরিবেশগত ও বাস্তুতান্ত্রিক প্রভাব পুরোপুরি বিবেচনা করা হয়েছে কি না।’
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব অ্যারিজোনার আন্তসীমান্ত নদী এবং নদীশাসন-সম্পর্কিত গবেষক সায়ানাংশু মোদক বলেন, ভারতের প্রধান একটি উদ্বেগ হলো অপ্রত্যাশিত আবহাওয়া বা ভূমিকম্পজনিত ঘটনাগুলোর কারণে বাঁধটিতে কী ধরনের বিপর্যয় তৈরি হতে পারে। তিনি বলেন, ‘এই এলাকা অত্যন্ত ভূমিকম্পপ্রবণ। ২০২১ সালের মার্চে গ্রেট বেন্ড এলাকায় এক বিশাল হিমবাহ বিপর্যয়ের কারণে নদীর প্রবাহ থমকে গিয়েছিল এবং পানির স্তর ৩৩ ফুট পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছিল। এই ধারাবাহিক প্রভাবগুলো অঞ্চলটির ভঙ্গুরতা এবং বিশাল আকারের জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত গুরুতর ঝুঁকিগুলোই তুলে ধরে।’
প্রকল্পটি দীর্ঘদিন ধরে চীন এবং ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকায় অবস্থিত দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনার কারণ। ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশও চীনের ব্রহ্মপুত্র নদের উজানে বাঁধ নির্মাণ পরিকল্পনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
সায়ানাংশু মোদক জানান, এই প্রকল্প থেকে চীনকে বিরত রাখার জন্য ভারত খুব সামান্যই বিকল্প দিতে পারবে বেইজিংকে। বিষয়টি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ওপর নতুন অনিশ্চয়তা তৈরি করবে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের মধ্যে গত অক্টোবরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে দুই পক্ষই হিমালয় অঞ্চলে সীমান্ত উত্তেজনা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। চীনের শীর্ষ কূটনীতিক (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) ওয়াং ই এবং ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালও চলতি মাসের শুরুতে বেইজিংয়ে উচ্চপর্যায়ের সীমান্ত আলোচনা করেছেন; যা বিগত পাঁচ বছরের মধ্যে প্রথম।
মোদক বলেন, ‘ভারতের উদ্বেগ ব্যাপক ও ন্যায্য। বিশাল বাঁধ প্রকল্প দুই দেশের মধ্যে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করবে কি না; এই বিষয়ে মন্তব্য করা খুব চটজলদি হয়ে যাবে।’ তিনি বলেন, ‘চীনের জন্য এই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প দেশটির কারিগরি সক্ষমতা এবং হাইড্রোলিক প্রকৌশলে শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরবে।’
এই পানি বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, ‘নামচা বারওয়া পর্বতের কাছে ইয়ারলুন সাংপো প্রায় ২ মিটার খাড়াভাবে নিচে নেমে গেছে। এই এলাকা পৃথিবীর অন্যতম সুবিধাজনক জলবিদ্যুৎ প্রবাহের জন্য উপযোগী।’ তিনি বলেন, ‘ভারত ক্রমবর্ধমানভাবে এই বিশাল বাঁধ এবং পানি সংরক্ষণ ও প্রবাহের বিষয়গুলোকে জাতীয় নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছে এবং এই চিন্তা একই নদীর ভাটিতে নিজ অঞ্চলে বাঁধ নির্মাণে নয়াদিল্লির সিদ্ধান্তকে ত্বরান্বিত করছে।’
গত জুলাইয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারত চীনের পরিকল্পিত বাঁধ প্রকল্পের প্রতিক্রিয়ায় অরুণাচলে ১২টি জলবিদ্যুৎ স্টেশন নির্মাণে ১ বিলিয়ন ডলার খরচের পরিকল্পনা করছে।
২০২২ সালে ইউনাইটেড স্টেটস ইনস্টিটিউট অব পিসের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, চীন ও ভারত ব্রহ্মপুত্র নদের পানি এবং বাঁধ প্রকল্প নিয়ে প্রতিযোগিতা বাড়াচ্ছে। এতে বলা হয়, তথাকথিত গ্রেট বেন্ড বাঁধ ব্রহ্মপুত্রের মূলধারায় সবচেয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং বিতর্কিত প্রকল্প। এরই মধ্যে এই নদীর ওপর স্যাটেলাইট চিত্র থেকে প্রায় ২০টি বাঁধ চিহ্নিত করা হয়েছে।
থিংকট্যাংকটি জানিয়েছে, ভারত ২০০০ সালের শুরু থেকে অরুণাচল প্রদেশে ১৫০টির মতো বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে। বিষয়টি কেবল পানির প্রবাহ নয়, আঞ্চলিক নিয়ন্ত্রণেরও সংকেত দেয়।
মোদকও বাঁধ নির্মাণের ফলে সৃষ্ট ব্যাপক ‘পারিপার্শ্বিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাব’ সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন; বিশেষ করে তিব্বত ও অরুণাচল প্রদেশে এই বাঁধের কারণে মানুষের বাস্তুহারা হওয়ার বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘ভারত-চীনের মধ্যে একমাত্র একটি বিষয়ই নিশ্চিতভাবে উঠে আসে—এই অঞ্চলের অনন্য জীববৈচিত্র্য এবং এর আদিবাসী জনগণের ঐতিহ্য অবশ্যম্ভাবীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
সাংহাইভিত্তিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক নি লেক্সিওং বলেছেন, ‘এই মেগা বাঁধ প্রকল্প সম্ভবত দুই দেশের মধ্যে একটি ‘শব্দযুদ্ধ’ পুনরায় উসকে দেবে। এখানে অবধারিতভাবেই এই প্রশ্ন উঠবে যে বেইজিং কি ব্রহ্মপুত্রের প্রবাহকে কৌশলগত অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে দিল্লির ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে।’
এই বিশ্লেষক আরও বলেন, ‘ভারতীয় গণমাধ্যমে পানিযুদ্ধ নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। চীনে একটি বাঁধ নির্মাণ বিষয়ে যদি দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকত, তাহলে তা হয়তো বড় কোনো ব্যাপার হতো না। কিন্তু যখন তারা একে অপরকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখতে শুরু করেছে, তখন যেকোনো কিছুই অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে, যার মধ্যে পানির সমস্যা অন্যতম।’
যদিও বেইজিং দাবি করেছে, ইয়ারলুন সাংপো নদীর সম্ভাবনা ব্যবহার করা একটি সার্বভৌমত্বের বিষয়। নি লেক্সিং বলেন, গ্রেট বেন্ডে একটি মেগা বাঁধ প্রকল্প ভারতকে মোকাবিলার ক্ষেত্রে চীনকে কৌশলগত সুবিধা দেবে। তিনি বলেন, ‘ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত—যা-ই হোক না কেন, এটি কার্যত ভারত-সম্পর্কিত কূটনৈতিক ক্ষেত্রে চীনকে কৌশলগত অবস্থানে এগিয়ে রাখবে। ভারত যে এটিকে একটি হুমকি হিসেবে দেখছে, এটাও আশ্চর্য হওয়ার মতো কিছু নয়। কিন্তু এটি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জন্যও ক্ষতির কারণ হতে পারে।’
তবে সাংহাই ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সাউথ এশিয়া অ্যান্ড চায়না সেন্টারের সিনিয়র ফেলো লিউ ঝংই বলেছেন, বেইজিং ভাটির দেশগুলোর উদ্বেগের বিষয়টি মাথায় নিয়েই বাঁধ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে। তিনি বলেন, ‘চীনের বাঁধ নির্মাণ কার্যক্রমের ফলে ব্রহ্মপুত্রের প্রবাহে যে প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, তার চেয়ে কমই পড়বে।’
আবার বেইজিং এই প্রকল্পের মাধ্যমে ভারতকে কৌশলগতভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছে—এমন ধারণা লিউ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প চীনের আঞ্চলিক সীমানার মধ্যে। ভারত অরুণাচল প্রদেশে বাঁধ নির্মাণের কাজ ত্বরান্বিত করতে যে পরিকল্পনা করেছে, তা স্পষ্ট করে দেয় যে তারা ওই এলাকার ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ শক্তিশালী করতে মনোযোগ দিয়েছে। কারণ, এই অঞ্চলকে চীন দক্ষিণ তিব্বত হিসেবে দাবি করে।’
এ সময় লিউ অভিযোগ করে বলেন, ভারত এবং এর পশ্চিমা মিত্ররা সম্ভবত এই প্রকল্প নিয়ে তাদের হতাশা থেকে চীনের বিরুদ্ধে গিবত করবে। তিনি বলেন, ‘তবে আমি মনে করি না যে বাঁধ প্রকল্পটি চীন-ভারত সম্পর্কের ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলবে। তবে এর কারণে সম্ভবত চীন-ভারত সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের পথে বাধা আসবে; বিশেষ করে ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর।’
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট থেকে অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান