হোম > সারা দেশ > ঢাকা

ঢাকার ধামরাই

বন্ধ অবৈধ ইটভাটা ফের চালু

অরূপ রায়, সাভার 

প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০২: ০০
ঢাকার ধামরাইয়ের কুল্লা এলাকার স্বর্ণ ব্রিকস (এমএলই-১)। বৈধতা না থাকায় বন্ধ করে দেওয়ার পরেও চলছে কার্যক্রম। ছবিটি সম্প্রতি তোলা। আজকের পত্রিকা

ঢাকার ধামরাইয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন সাতটি অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ করে দিলেও সেগুলো পুনরায় চালু হয়েছে। ভাটাগুলোতে ইট উৎপাদন ও বিক্রি—কোনো কিছুই বন্ধ হয়নি।

গত ২৪ ডিসেম্বর পরিবেশ অধিদপ্তর ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়নের মাহী ব্রিকস ও স্বর্ণ ব্রিকস (এমএলই-১ ব্রিকস) এবং সুয়াপুর ইউনিয়নের দেলধা এলাকার সততা ব্রিকস-৪ ও সততা ব্রিকস-৫ এবং পাশের হিরু এন্টারপ্রাইজ, সোহাগ ব্রিকস ও এ কে ব্রিকসে অভিযান চালায়।

অভিযানের পর পরিবেশ অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে অবৈধভাবে ভাটা পরিচালনা করে বায়ুদূষণ করার অপরাধে দেলধা এলাকার সততা ব্রিকস-৪ ও সততা ব্রিকস-৫ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার কথা জানানো হয়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, একই কারণে দেলধা এলাকার হিরু এন্টারপ্রাইজ, সোহাগ ব্রিকস ও এ কে ব্রিকসসহ পাশের এলাকার মেসার্স মাহী এন্টারপ্রাইজ ও স্বর্ণ ব্রিকসের (এমএলই-১ ব্রিকস) কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে অভিযানের কয়েক দিন পর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুধু মাহী ব্রিকসের সামনে ভাটাটির লাইসেন্স ও ছাড়পত্র বাতিলের নোটিশ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। ওই নোটিশে ইট বিক্রি ও উৎপাদন বন্ধ রাখতে বলা হয়।

পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে সততা ব্রিকস-৪ ও সততা ব্রিকস-৫ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার কথা বলা হলেও গত শুক্রবার দেলধা গিয়ে ভাটা দুটিতে ইট পোড়াতে দেখা যায়। অথচ ইটভাটা দুটির ইট পোড়ানোর কোনো অনুমতি নেই বলে জানা গেছে।

সততা ব্রিকস-৪ ও সততা ব্রিকস-৫-এ কর্মরত শ্রমিকেরা জানান, পরিবেশ অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে দুটি ভাটার চিমনির আংশিক ভেঙে দিয়েছিল। পরে তা মেরামত করে ইট পোড়ানো হচ্ছে।

জানতে চাইলে ইটভাটা দুটির মালিক ওবায়দুর রহমান আলাল বলেন, ‘অনেক টাকা লগ্নি করা হয়েছে। তাই নিরুপায় হয়ে ভাটা চালু করা হয়েছে।’

পাশের হিরু এন্টারপ্রাইজ, সোহাগ ব্রিকস ও এ কে ব্রিকসে গিয়েও ইট পোড়াতে দেখা যায়।

জানতে চাইলে এ কে ব্রিকসের ব্যবস্থাপক হযরত আলী বলেন, ‘আমাদের ইটভাটার ছাড়পত্র ও লাইসেন্সের মেয়াদ রয়েছে। শুধু ইট তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত মাটি কাটার অনুমতি না থাকায় পরিবেশ অধিদপ্তর আমাদের ভাটার কার্যক্রম বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু ভাটা চালু না রাখলে তো অনেক লোকসান গুনতে হবে। তাই ভাটার কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে।’

কুল্লা এলাকায় এমএলই ব্রিকস-১-এ গিয়ে ভাটাটিতে ইট পোড়ানোর পাশাপাশি কাঁচা ইট তৈরি ও ইট বিক্রি করতে দেখা যায়। ভাটার সামনে ভাটার কার্যক্রম বন্ধে জেলা বা উপজেলা প্রশাসনের কোনো নোটিশ পাওয়া যায়নি।

জানতে চাইলে ভাটার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ লাভলু বলেন, ‘আগে ভাটাটির নাম ছিল স্বর্ণ ব্রিকস এবং ওই নামে কাগজপত্র ছিল। কয়েক বছর আগে স্থানীয় কুল্লা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের নেতা লুৎফর রহমান ভাটাটি কিনে নেন। এর পর এর নাম দেওয়া হয় এমএলই-১ ব্রিকস।’

এমএলই-১ ব্রিকস থেকে কয়েক শ গজ দূরেই মেসার্স মাহী এন্টারপ্রাইজ। ভাটাটির পরিবেশের ছাড়পত্রের মেয়াদ ও ২০২৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ইট পোড়ানোর অনুমতি ছিল। এরপরেও পরিবেশ অধিদপ্তর ২৪ ডিসেম্বর অভিযান চালিয়ে ভাটার কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেয়। এরপর উপজেলা প্রশাসন ভাটার কার্যক্রম বন্ধ রাখতে নোটিশ ঝুলিয়ে দেয়।

স্থানীয়রা জানান, পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসন মাহী ব্রিকসের কার্যক্রম বন্ধ করে দিলেও গোপনে ইট বিক্রিসহ ভাটার কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

তবে মেসার্স মাহী এন্টার প্রাইজের মালিক মো. সোলাইমান হোসেন বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসন ভাটার কার্যক্রম বন্ধ করার পর থেকে ইট বিক্রি ও উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়েছে।

ধামরাইয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামনুন আহমেদ অনীক বলেন, ‘জেলা প্রশাসন থেকে মেসার্স মাহী এন্টারপ্রাইজের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। তাই ভাটাটির কার্যক্রম বন্ধ করে নোটিশ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

পরিবেশ অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. ইলিয়াস মাহমুদ বলেন, ‘অভিযোগ আমরাও পেয়েছি। যেসব ইটভাটার মালিক নির্দেশনা অমান্য করে ইট পোড়াচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।’

শাবিপ্রবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি তারেক, সেক্রেটারি তুহিন পুনর্নির্বাচিত

স্ত্রী-ছেলেসহ নাফিজ সরাফতের ২২ ফ্ল্যাট, বাড়ি ও জমি ক্রোকের নির্দেশ

কমলগঞ্জে তরুণীকে অপহরণের পর ধর্ষণ, খবর শুনে বাবার হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু

রাস্তায় রাখা স মিলের গাছচাপায় প্রাণ গেল শিশুর