চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলে (সিইপিজেড) শ্রমিকদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় অন্তত ১৮ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। আজ শনিবার সিইপিজেডের ১ নম্বর সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে শিল্প পুলিশের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পুলিশ সুপার মো. সুলাইমান বলেন, ‘কাছাকাছি দুই কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে বিরোধ থেকে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। আহত কয়েকজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরে পুলিশ, সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার পর কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। শ্রমিকেরা যে যার মতো বাসায় চলে গেছেন। এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে।’
সরেজমিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল) হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, বেলা দেড়টা পর্যন্ত ১৮ জন শ্রমিককে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এঁদের কারও মাথা ফাটা, কেউ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন।
শ্রমিকেরা জানান, গত বুধবার থেকে বেতন-ভাতা বৃদ্ধি ও সুযোগ-সুবিধা দেওয়া নিয়ে সিইপিজেডের বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকেরা আন্দোলন শুরু করেন। এ সময় কারখানা বন্ধ ছিল। মেরিকো নামে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরাও আন্দোলনে নামেন। পরে কারখানার মালিক শ্রমিকদের দাবিদাওয়া মেনে নিলে সেখানকার শ্রমিকেরা আজ সকাল থেকে কাজে যোগ দেন।
তবে জেএমএস কারখানার শ্রমিকেরা বেতন-ভাতা নিয়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখেন। সকালে তাঁরা কারখানা থেকে বেরিয়ে বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে কারখানার শ্রমিকেরা মেরিকো কারখানায় গিয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। পরে দুই কারখানার শ্রমিকেরা লাঠিসোঁটা নিয়ে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষে জড়ান। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চমেক হাসপাতালে মেরিকো কারখানার আহত এক শ্রমিক বলেন, ‘সকাল ৮টা থেকে আমাদের শ্রমিকেরা সবাই কাজ যোগ দিয়েছেন। তার কিছুক্ষণ পর মেরিনকো কারখানার শ্রমিকেরা আমাদের ওপর হামলা করে বসে। পরে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি শুরু হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের যেসব দাবিদাওয়া ছিল, কোম্পানি সেটা মেনে নিয়েছে। সে জন্য আমরা শনিবার থেকে কাজ যোগ দিয়েছে। কিন্তু তারা (জেএমএস শ্রমিকেরা) আমাদের সঙ্গে ঝামেলা করছে।’
সিইপিজেডের পৃথক একটি কারখানার কর্মকর্তা জানান, বুধবার থেকে আন্দোলন চলাকালে জেএমএস কারখানার শ্রমিকদের মারধরের অভিযোগে মেরিকো কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে বিরোধ ছিল। ওই বিরোধের কারণে আজ জেএমএস কারখানার শ্রমিকেরা তাঁদের ওপর হামলা চালালে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।