হোম > সারা দেশ > খুলনা

১৭৫ হেক্টরে আবাদ অনিশ্চিত

মো. সেলিম হায়দার, তালা (সাতক্ষীরা) 

প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯: ০৪
আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯: ০৪
সাতক্ষীরার তালার জাতপুর বিলে জলাব্ধতা। বোরো ইরি রোপণের মৌসুম শুরু হলেও কৃষকেরা জমি প্রস্তুত করতে পারছেন না। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার জাতপুর, আলাদীপুর ও পাঁচরোখী বিলে স্থায়ী জলাবদ্ধতার কারণে ১৭৫ হেক্টর জমিতে ইরি বোরো চাষে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তালার কপোতাক্ষ নদ ও খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ভদ্রা নদীর সঙ্গে এসব বিলের সংযোগ খাল দীর্ঘদিন খনন না হওয়ায় এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে বিলের জমির মালিক ও দরিদ্র কৃষকেরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, জাতপুর, আলাদীপুর, পাঁচরোখী ও ডুমুরিয়া উপজেলার কাঞ্চনপুর বিলে কোমরপানি। শুষ্ক মৌসুমেও বিলে জলাবদ্ধতার কারণে এবার বোরো ইরি আবাদ করতে পারছেন না কৃষকেরা। খাল খনন না করার পাশাপাশি এলাকার জমির মালিক ও গ্রামবাসী এগুলো অবৈধভাবে দখল করে রেখেছেন।

এ ছাড়া পাঁচরোখী গ্রামের বাদশা আলী সরকারি কালভার্টের মুখ আটকে দেওয়া হয়। ফলে বর্ষা মৌসুমে অতিবৃষ্টির ফলে বিলে জমে থাকা পানি আর নদীতে নামতে পারছে না। ফলে এলাকার দরিদ্র কৃষক থেকে শুরু করে এসব বিলের জমির মালিকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। বিলে উৎপাদিত ফসলের ওপর নির্ভর করে দরিদ্র কৃষকদের সংসার চলে। যদি ইরি বোরো চাষ না করতে পারেন, তাহলে সারা বছর অভাব-অনটনের মধ্যে দিন কাটাতে হবে তাঁদের।

আলাদীপুর গ্রামের কৃষক মোসলেম উদ্দীন মোড়ল বলেন, ‘এই বিলে আমার প্রায় ১০ বিঘা জমি আছে। বিলে যে ধান হতো, তা দিয়ে আমার সারা বছরের খোরাকি চলত। এবার যদি ধান চাষ করতে না পারি, তাহলে সংসার চালাতে খুবই কষ্ট হয়ে যাবে। যদি পানি নামানোর ব্যবস্থা করা না হয়, তাহলে এসব বিলের কৃষকেরা এ বছর আর ধান চাষ করতে পারবেন না।’

জাতপুর গ্রামের হোসেন আলী খাঁ বলেন, ‘বিলে আমার প্রায় ২ বিঘা জমিতে ধান চাষ করি। আমার পাঁচ সদস্যের সংসার। এখানে ধান চাষ করে সারা বছরের খাবার জোগাড় করতে হয়। ছোট একটি মুদিদোকান আছে। তা থেকে যে আয় হয়, তা দিয়ে সংসারের অন্যান্য খরচ মেটাই। কিন্তু এবার এই জমিতে ধান চাষ করতে না পারলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে। পাঁচরোখী গ্রামের জাতপুর শুকদেবপুর রাস্তার সরকারি কালভার্টের মুখ বাদশা আলী বেঁধে দেওয়ার কারণে এই বিলের পানি মোটেই নামতে পারছে না।’

পাঁচরোখী গ্রামের বাবলু শেখ বলেন, ‘এ বিলে আমার দেড় বিঘা জমি আছে। এই জমিতে যে ধান হয়, তা দিয়ে আমার সংসার চলে। এবার যদি ধান চাষ করতে না পারি তাহলে সংসার কীভাবে চলবে, তা বুঝতে পারছি না। উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে জোর দাবি, বিলের পানি সরানোর ব্যবস্থা করে আমাদের ধান চাষের সুযোগ করে দিন।’

তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের প্রায় সব ক’টি বিল জলাবদ্ধ। এখন ধান রোপণের মৌসুম। পানি সরানোর ব্যবস্থা করা না গেলে, এসব বিলে এবার ধান চাষ করা সম্ভব হবে না।’

তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন বলেন, এ বছর তালায় ১৯ হাজার ১৫৫ হেক্টরে ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে জলাবদ্ধতার কারণে বিভিন্ন বিলের ১৭৫ হেক্টরে আবাদ করা সম্ভব হচ্ছে না। জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য সেচ প্রকল্প চালু করা হয়েছে। এটা ফলপ্রসূ হলে হয়তো আরও ১২০ হেক্টরে আবাদ করা সম্ভব হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মো. রাসেল বলেন, বিলের পানি সরানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর ও নরনিয়া অঞ্চল দিয়ে পানি না নামার কারণে এই এলাকায় স্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা factcheck@ajkerpatrika.com

ইবিতে শহীদ জিয়া স্মৃতি সংগ্রহশালা স্থাপনে কমিটি গঠন

চুয়াডাঙ্গায় এক দিনে তাপমাত্রা কমল ৫ ডিগ্রি

বাগেরহাটে বিএনপির দুই পক্ষের বিরোধে ৮ বাড়িতে আগুন, আহত ২৫

কোটচাঁদপুরে মেছো বাঘ মেরে ফেসবুকে ছবি দেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা