হোম > সারা দেশ > রংপুর

লালমনিরহাটে কৃষি কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে রাখলেন কৃষকেরা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি 

আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮: ০৫
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজাদকে অবরুদ্ধ করে রাখেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

সার কেনার টোকেন দেওয়া বন্ধ করায় কৃষকদের তোপের মুখে পড়েছেন লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজাদ। আজ বুধবার দুপুরে উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদে এ ঘটনা ঘটে। সারের জন্য টোকেন দিতে গেলে উপস্থিত কৃষকেরা তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে কৌশলে সেখান থেকে সরে পড়েন ওই কর্মকর্তা।

কৃষকেরা বলেন, সারের সংকট নিরসনে কৃষকদের চাহিদা বিবেচনা করে বিশেষ টোকেন চালু করে কৃষি বিভাগ। কৃষি বিভাগের স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের স্বাক্ষরিত টোকেন নিয়ে ডিলার পয়েন্টে গেলে সরকারি দামে সার মিলছে। অনিবন্ধিত বিক্রেতার কাছ থেকে বস্তাপ্রতি ৫০০ থেকে হাজার টাকা বেশি দামে কিনতে হয়। তাই ন্যায্যমূল্যে সার পেতে কৃষকেরা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের পিছু ছুটছেন। তাঁরা ইউনিয়ন পরিষদে বসে কৃষকদের টোকেন দিচ্ছেন। সেই টোকেন দিয়ে সরকারি দামে সার কিনছেন চাষিরা।

আজ চন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে কৃষকদের সারের টোকেন দিতে বসেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজাদ। এ সময় শত শত কৃষক লাইনে দাঁড়িয়ে যান টোকেন নিতে। সেখানে ৩৫-৪০ কৃষককে টোকেন দিয়ে পরে তা বন্ধ করা হয় এবং সার শেষ বলে জানানো হয়। এতে ক্ষুব্ধ হন চাষিরা। তাঁরা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন।

কৃষক সুমন কুমার বলেন, ‘আজ কাজ ফেলে এসে কোনো লাভ হলো না। কৃষি বিভাগের লোকজন আর ডিলার মিলে সার অনিবন্ধিতদের কাছে বিক্রি করছেন। নিবন্ধিত ডিলাররা কৃষকদের সার না দিয়ে অনিবন্ধিত বিক্রেতাদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করছেন। সার তো কেউ বাড়িতে উৎপাদন করে না। তাহলে অনিবন্ধিত বিক্রেতারা সার পেলেন কোথায়?’

চাপারহাটের কৃষক হাসান বলেন, ‘লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও সার পাচ্ছি না। অথচ রাতের আঁধারে নিবন্ধিতরা বেশি দামে অনিবন্ধিত বিক্রেতাদের কাছে সার বিক্রি করছেন। তা না হলে গত রাতে দুই ট্রাক সার এল। সকালেই ৩০-৩৫ জনকে সার দিতেই সব শেষ হলো কী করে?’

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজাদকে তাঁর ব্যবহৃত নম্বরে একাধিকবার কল করেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তুষার কান্তি বলেন, কিছু কৃষক সংকটের আতঙ্কে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি করে কিনে মজুত করে রাখছে। ক্ষুদ্র কিছু চাষি সার পাচ্ছেন না বলে সংকটের গুজব ছড়িয়ে পড়ছে। আমরা যে পরিমাণ সার পেয়েছি, তা যাতে কৃষকদের মাঝে সমহারে পৌঁছে দেওয়া যায়; তার জন্য টোকেন সিস্টেম চালু করেছি। সারের বরাদ্দের চেয়ে অতিরিক্ত কৃষক লাইনে দাঁড়ানোর কারণে চাপারহাট পয়েন্টে বুধবার সার দেওয়া বন্ধ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার আবার দেওয়া হবে। এতে কৃষকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আজাদকে অবরুদ্ধ করেছিলেন। পরে তিনি কৌশলে চলে এসেছেন।’

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, ‘চলতি মাসে চাহিদার অর্ধেক বরাদ্দ পেয়েছি। যার কারণে সার নিয়ে কিছুটা জটিলতা তৈরি হয়েছে। তবে বরাদ্দ করা সার পুরোটা আমরা পেয়েছি। কিছু কৃষক বর্তমান চাহিদার চেয়ে বেশি কিনে আগামী মৌসুমের জন্য মজুত করছেন। যার কারণে হয়তো কোনো কোনো চাষি বঞ্চিত হচ্ছেন।’ সার পর্যায়ক্রমে আসছে এবং আসবে। তাই মজুত না করে যতটুকু প্রয়োজন, ততটুকু ডিলার পয়েন্টে ক্রয় করতে কৃষকদের অনুরোধ জানান তিনি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা factcheck@ajkerpatrika.com

শিশুর লাশ উদ্ধার, শরীরে আঘাতের চিহ্ন

অর্থাভাবে সংস্কার নেই ক্ষতবিক্ষত সড়ক

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে গুলিতে নিহত আশিকুলের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন