হোম > বিশ্ব > চীন

ব্রহ্মপুত্রের বাঁধ বাংলাদেশ-ভারতের কোনো ক্ষতি করবে না: চীন

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ : ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬: ৩১
ইয়ারলুন সাংপো বা ব্রহ্মপুত্র নদের একটি অংশ। ছবি: উইকিপিডিয়ার সৌজন্যে

চীন দাবি করেছে, তিব্বতে ব্রহ্মপুত্র (যা ইয়ারলুন সাংপো নামেও পরিচিত চীনে) নদের ওপর যে বিশাল বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তা ভাটির দেশগুলো অর্থাৎ ভারত ও বাংলাদেশে কোনো ‘নেতিবাচক প্রভাব’ ফেলবে না। ভারতে চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র ইউ জিং গতকাল শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করা এক পোস্টে এ কথা বলেছেন।

ইয়ারলুন সাংপো নদী তিব্বত থেকে প্রবাহিত হয়ে ভারত ও বাংলাদেশ হয়ে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মিশে যায়। চীনের তিব্বত থেকে সাংপো নামে প্রবাহিত হয়ে ভারতের অরুণাচলে প্রবেশ করে আসাম প্রদেশ হয়ে ব্রহ্মপুত্র নামে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। পরে এর একটি শাখা যমুনা নাম নিয়ে পদ্মা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়। চীনের এ দাবি এমন একসময় এল, যখন ভারত এই প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

চীনের দূতাবাসের মুখপাত্র ইউ জিং তাঁর পোস্টে বলেছেন, ‘এই প্রকল্পের নিম্নাঞ্চলগুলোতে, অর্থাৎ ভারত ও বাংলাদেশের ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘চীন যেসব দেশ ব্রহ্মপুত্রের ভাটিতে অবস্থিত, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখবে এবং নদীর তীরবর্তী মানুষের উপকারের জন্য বিপর্যয় প্রতিরোধ ও উদ্ধার কার্যক্রমে সহযোগিতার হাত বাড়াবে।’

এর আগে, গত শুক্রবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল চীনের এই বাঁধ প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘ভারত (ব্রহ্মপুত্রের) নিম্ন অববাহিকার দেশ এবং এই নদীর পানির ওপর ভারতের অধিকার প্রতিষ্ঠিত। আমরা দীর্ঘদিন ধরে বিশেষজ্ঞ স্তর ও কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে আমাদের উদ্বেগ ও মতামত চীনকে জানিয়েছি। ভারত চীনকে অনুরোধ করেছে, যেন ব্রহ্মপুত্রের ভাটির দেশগুলোর স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তাদের প্রকল্পগুলোর কারণে।’

চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র ইউ জিং আরও বলেছেন, ‘চীন সব সময় সীমান্তবর্তী নদীগুলোর উন্নয়নে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে। সাংপো নদীতে চীনের জলবিদ্যুৎ উন্নয়ন প্রকল্পটি মূলত ক্লিন এনার্জি তথা পরিষ্কার শক্তি উৎপাদন বাড়াতে এবং জলবায়ু পরিবর্তন ও চরম জলবায়ু বিপর্যয়ের প্রতিক্রিয়া হিসেবে করা হচ্ছে।’

ইউ জিং জানান, এই জলবিদ্যুৎ উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য দীর্ঘদিন ধরে ব্যাপক গবেষণা ও পরিকল্পনা করা হয়েছে এবং প্রকল্পের নিরাপত্তা ও পরিবেশ রক্ষার জন্য সুরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

চীনের এ বক্তব্যে পরিষ্কার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে তারা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে আশপাশের দেশের স্বার্থ এবং পরিবেশের ক্ষতি করার কোনো উদ্দেশ্য রাখে না। তবে ভারতের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আগের মতোই সন্দেহ ও উদ্বেগ রয়েছে। বিশেষ করে ব্রহ্মপুত্রের পানিবণ্টনের বিষয়ে চীনের একতরফা উদ্যোগ নিয়ে।