টেসলা ও স্পেসএক্সের সিইও ইলন মাস্ককে যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ বলে আখ্যা দিয়েছেন তাঁর জীবনীকার সেথ অ্যাব্রামসন। পাশাপাশি তিনি গুরুতর অসুস্থ বলে দাবি করেছেন সেথ। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, মাস্কের প্রভাব ও কার্যকলাপ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। মাস্কের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম ‘এক্সে’ শেয়ার করা একাধিক পোস্টে অ্যাব্রামসন অভিযোগ করেছেন যে, মাস্ক ‘পাগল হয়ে যাচ্ছেন’।
অ্যাব্রামসন দাবি করেছেন, তিনি গত দুই বছর ধরে মাস্কের আচরণ ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন। উল্লেখ করেছেন, মাস্ক তাঁর মানসিক স্বাস্থ্য, মাদক ব্যবহার এবং চাপের সঙ্গে লড়াইয়ের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমি মাস্কের জীবনীকার, আমি গত দুই বছর ধরে তাঁর অনলাইন আচরণ ট্র্যাক করছি। যেহেতু তিনি মানসিক অসুস্থতা, অতিরিক্ত মাদক সেবন এবং বিধ্বংসী চাপের কথা স্বীকার করেছেন—তাই এটি ভাবাই যুক্তিযুক্ত যে, তিনি গভীরভাবে অসুস্থ। আমেরিকাকে ইলন মাস্কের হাত থেকে রক্ষা করুন।’
সেথ অ্যাব্রামসন উল্লেখ করেছেন, মাস্ক অ্যারোস্পেস বা মহাকাশ গবেষণা, বৈদ্যুতিক যানবাহন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করছেন। পাশাপাশি তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিশিয়েন্সির প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হচ্ছেন। অ্যাব্রামসন যুক্তি দিয়েছেন, ‘সভ্যতার জন্য অপরিহার্য শিল্পসমূহে মাস্কের নিয়ন্ত্রণ এবং সরকারে তাঁর অবস্থান জাতীয় স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে।’
অ্যাব্রামসন লিখেছেন, ‘তাঁর (মাস্কের) মালিকানাধীন গুরুত্বপূর্ণ শিল্পসমূহ এবং তিনি আসন্ন প্রেসিডেন্ট হওয়ার কারণে তার পাগলামি ও সহিংসতার উসকানি আমাদের সবার জন্য বিপজ্জনক।’ অ্যাব্রামসন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রশাসনকে মাস্কের সঙ্গে সরকারি চুক্তি বাতিল এবং সরকারি দায়িত্বে অসাংবিধানিক উপায়ে মাস্ককে নিয়োগের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আর মাত্র ১৪ দিন বর্তমান প্রশাসন এই পদক্ষেপ নিতে পারবে। আমেরিকাকে ইলন মাস্কের হাত থেকে রক্ষা করুন।’
অ্যাব্রামসনের সতর্কতা এক্স ব্যবহারকারীদের মধ্যে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। কেউ কেউ তাঁর উদ্বেগের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন এবং মাস্কের অস্থির আচরণকে সমালোচনা করেছেন। আবার কেউ কেউ মাস্কের দৃষ্টিভঙ্গির পক্ষে কথা বলেছেন। এক ব্যবহারকারী মাস্ককে ‘চিন্তাশীল, মাদকাসক্ত খলনায়ক’ বলে অভিহিত করেছেন। অন্য একজন ধারণা করেছেন যে, মাস্ক নিজেকে পশ্চিমা সংস্কৃতির রক্ষক হিসেবে দেখছেন।
মাস্কের মানসিক স্বাস্থ্য এর আগেও জল্পনার বিষয় ছিল। গত বছর সান ফ্রান্সিসকোতে ডেভ চ্যাপেলের এক অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে তিরস্কারের পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার খবর প্রকাশিত হয়েছিল। সেই সময় তিনি ৪৪ বিলিয়ন ডলার খরচ করে টুইটার অধিগ্রহণ করেছিলেন।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি