হোম > বিশ্ব > ইউরোপ

মন্ত্রিত্ব হারাতে পারেন টিউলিপ, বিকল্প ভাবছে লেবার পার্টি

অনলাইন ডেস্ক

আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ২২: ১৯
টিউলিপের জায়গায় নতুন কাউকে স্থলাভিষিক্ত করার চিন্তা করছে তাঁর দল লেবার পার্টি। ছবি: সংগৃহীত

লন্ডনে শেখ হাসিনা ঘনিষ্ঠের কাছ থেকে বিনা মূল্যে ফ্ল্যাট পাওয়া ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ মাথায় নিয়ে ব্যাপক চাপে রয়েছেন যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির আর্থিক সেবাবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক। এরই মধ্যে টিউলিপের বিরুদ্ধে তদন্তের সিদ্ধান্তও হয়েছে। এ ছাড়া নিজেও তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমন পরিস্থিতির মধ্যে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের বিষয়টি জোরালো হচ্ছে। টিউলিপ যদি পদত্যাগে বাধ্য হন, তাহলে নতুন কাউকে স্থলাভিষিক্ত করার চিন্তা করছে তাঁর দল লেবার পার্টি।

দ্য টাইমস বলছে, টিউলিপের বিকল্প বিবেচনা করছেন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের জ্যেষ্ঠ মিত্ররা। বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দুর্নীতির সম্পৃক্ততার কারণে টিউলিপ পদত্যাগ করতে বাধ্য হলে কে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হতে পারেন, তার একটি সংক্ষিপ্ত তালিকাও এরই মধ্যে জানা যাচ্ছে।

গত সোমবার ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর নীতিবিষয়ক পর্যবেক্ষক সংস্থার কাছে নিজের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে তদন্তের দাবি জানান টিউলিপ। তবে এর আগেই টিউলিপের বিকল্প প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা করেছেন কর্মকর্তারা।

তবে স্টারমার বলছেন, টিউলিপের ওপর তাঁর পূর্ণ আস্থা রয়েছে। এ ছাড়া ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের (প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়) একজন মুখপাত্র টিউলিপকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে ওই পদে দায়িত্ব পালনের জন্য সম্ভাব্য ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরির বিষয়টিকে ‘সম্পূর্ণ অসত্য’ বলে দাবি করেছেন।

তবে টাইমস এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে পেরেছে, স্টারমারের বেশ কয়েকজন ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিকে আনুষ্ঠানিকভাবে টিউলিপের বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

গণমাধ্যমটি বলছে, গত বছরের আগস্টে গণ-অভ্যুত্থানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির তদন্তের মধ্যে ব্রিটেনের স্বার্থসংশ্লিষ্ট স্বাধীন উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাসের কাছে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন টিউলিপ।

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক অপরাধ বিভাগের কর্মকর্তারা এরই মধ্যে টিউলিপ এবং তাঁর পরিবারের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের নথি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। এ ছাড়া তাঁদের বিরুদ্ধে রাশিয়ার অর্থায়নে পরিচালিত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে অর্থ আত্মসাতের বিষয়টিও তদন্ত করছে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই অর্থ কেলেঙ্কারিতে টিউলিপের ভূমিকা কী ছিল, তা খতিয়ে দেখছেন তাঁরা।

দ্য টাইমস বলছে, ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের জন্য টিউলিপের বিকল্প হিসেবে যাঁদের বিবেচনা করা হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন মন্ত্রী র‍্যাচেল রিভসের দুই সহকারী। তাঁরা হচ্ছেন অ্যালিস্টার স্ট্রাথার্ন ও ইমোজেন ওয়াকার।

ইমোজেন ওয়াকার (ওপরে বাঁ থেকে প্রথম), কনিষ্ক নারায়ণ (ওপরে মাঝে), রাচেল ব্লেক (ওপরে ডানে), অ্যালিস্টার স্ট্র্যাথার্ন (নিচে বাঁয়ে), ক্যালাম অ্যান্ডারসন (নিচে ডানে)। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) টিউলিপ ও তাঁর পরিবারের সাত সদস্যের ব্যাংক হিসাবের তথ্য তলব করেছে।

অন্যদিকে বাংলাদেশে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে রাশিয়ার সঙ্গে হওয়া চুক্তির মাধ্যমে কয়েক বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাৎ করতে টিউলিপ সহায়তা করেছিলেন কি না, তা অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

টিউলিপের পদে যেসব ব্যক্তি ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের বিবেচনায় আরও যাঁরা আছেন, তাঁরা হলেন প্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রীর পার্লামেন্টারি প্রাইভেট সেক্রেটারি (পিপিএস) ক্যালাম অ্যান্ডারসন, পরিবেশবিষয়ক মন্ত্রীর পিপিএস কনিষ্ক নারায়ণ, বিচারবিষয়ক মন্ত্রীর পিপিএস জশ সিমন্স ও রাচেল ব্লেক।

বিবেচনায় আসতে পারেন যুক্তরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল লুসি রিগবি ও অর্থনীতিবিদ টরস্টেন বেল। বেল একজন মন্ত্রীর সহকারীও। তাঁরা দুজনই শক্তিশালী বিকল্প হিসেবে বিবেচিত হতে পারেন।

ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির একটি সূত্র বলেছে, অভিযোগ তদন্তের ব্যাপারে টিউলিপের আহ্বান (রেফারেল) এই ইঙ্গিত দেয়, তিনি দায় নিয়ে পদত্যাগ করতে ইচ্ছুক।

খালা শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের একজন সমর্থক লন্ডনে টিউলিপকে ৭ লাখ পাউন্ডের একটি ফ্ল্যাট দিয়েছেন। আবার শেখ হাসিনার একজন উপদেষ্টা টিউলিপের বোনকে ৬ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ডের ফ্ল্যাট দিয়েছেন—এসব তথ্য সামনে আসার পর তিনি ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে পড়েন।

টিউলিপের একজন মুখপাত্র বলেছেন, যে সম্পত্তিগুলো টিউলিপ বা তাঁর পরিবার পেয়েছেন, তার সঙ্গে আওয়ামী লীগকে সমর্থন করার সম্পর্ক আছে—এমনটা ভাবা ‘স্পষ্টতই ভুল’।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা factcheck@ajkerpatrika.com

আত্মহত্যার চেষ্টাকে ‘অপরাধ’ গণ্য করা অসাংবিধানিক: কেনিয়ার হাইকোর্ট

যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ির মূল্যবৃদ্ধির গুমর ফাঁস করল লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানল

স্বপ্নে পাওয়া নম্বরে লটারি জিতলেন মার্কিন নারী

বিশ্বকে শব্দহীন নির্মাণযন্ত্রের পথ দেখাল নরওয়ের অসলো