হোম > বিশ্ব > ভারত

স্বামী ও ৬ সন্তান ফেলে ভিক্ষুকের সঙ্গে পালালেন নারী

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭: ৪৫
আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১২: ২৩
হারপালপুর থানা। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের হারদোই জেলার হারপালপুরের এক শান্ত-সমাহিত গ্রামের বাসিন্দা রাজু। স্ত্রী রাজেশ্বরী ও ছয় সন্তানকে নিয়ে নির্ঝঞ্ঝাট জীবনযাপন করছিলেন। গায়েগতরে খেটে খাওয়া রাজু সম্প্রতি মহিষ বিক্রি করে কিছু টাকা জমিয়েছিলেন, পরিবারের প্রয়োজন মেটানোর জন্য। কিন্তু গত ৩ জানুয়ারির এক অদৃশ্য ঝড়ে তাঁর শান্ত জীবন হঠাৎই পাল্টে গেছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ৩ জানুয়ারি বেলা ২টার দিকে রাজেশ্বরী তাঁদের বড় মেয়ে খুশবুকে বলেছিলেন, ‘আমি বাজারে যাচ্ছি। কাপড় আর সবজি কিনে এনে দেব তোকে।’ রাজেশ্বরী প্রায়ই বাজারে যেতেন বলে পরিবারের কারও কাছে বিষয়টি অস্বাভাবিক বলে মনে হয়নি। আর রাজেশ্বরীর স্বামী রাজু তখন বাড়িতেও ছিলেন না।

কিন্তু দিন গড়িয়ে রাত হলেও রাজেশ্বরী আর বাড়ি ফিরলেন না। রাজু বাড়ি ফিরে স্ত্রীর না ফেরার খবর পাওয়ার পরপরই খুঁজতে শুরু করলেন। প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসা করলেন, পরিচিত সবাইকে খবর দিলেন। কিন্তু রাজেশ্বরীর কোনো সন্ধান পেলেন না।

ধীরে ধীরে রাজুর সন্দেহ বাড়তে শুরু করল। কারণ, কয়েক দিন ধরেই রাজেশ্বরীর সঙ্গে ভিক্ষুক ননহে পণ্ডিতের কথাবার্তা নিয়ে তাঁর মনে খটকা লাগছিল। ননহে মাঝে মাঝেই তাঁদের পাড়ায় ভিক্ষা চাইতে আসত। রাজু লক্ষ করেছিলেন, ননহে প্রায়ই রাজেশ্বরীর সঙ্গে গল্প করত। শুধু পাড়াতে সামনাসামনি নয়, তারা ফোনেও কথা বলত।

রাজু জানান, তিনি মহিষ বিক্রি করে যে টাকা জমিয়েছিলেন, সেগুলোও রাজেশ্বরী নিয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘আমি বুঝতে পারি না, কীভাবে এমন কিছু ঘটল। আমার স্ত্রী, আমার ছয়টি সন্তান, আর এত বছরের সংসার—সবকিছু ছেড়ে এমন একজন ভিক্ষুকের সঙ্গে পালিয়ে গেল!’

এরপর স্থানীয় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন রাজু। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ধারা ৮৭-এর আওতায় এই অভিযোগ রুজু করা হয়। এতে বলা হয়েছে, যদি কোনো নারীকে জোরপূর্বক বা প্ররোচিত করে অপহরণ বা অবৈধ শারীরিক সম্পর্কের জন্য বাধ্য করা হয়, তবে অভিযুক্তের শাস্তি ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং জরিমানা হতে পারে।

পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে এবং ননহে পণ্ডিতের খোঁজে মাঠে নেমেছে। এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আমরা পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখছি। ননহে পণ্ডিতের খোঁজ চলছে। আশা করি শিগগিরই তাঁকে খুঁজে বের করতে পারব।’

রাজু আজও স্ত্রী এবং তাঁর সন্তানের মায়ের ফিরে আসার অপেক্ষায় আছেন। রাজেশ্বরীর এই সিদ্ধান্ত কেন, কীভাবে—এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না তাঁরা। রাজুর চোখের দিকে তাকালেই দেখা যাচ্ছে অসহায়ত্বের ছাপ। তিনি বলেন, ‘সন্তানরা মায়ের জন্য কাঁদছে। আমি চাই সে ফিরে আসুক। এই ভুল-বোঝাবুঝি শেষ হোক। আমাদের সংসার আবার আগের মতো হোক।’

কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায়—এই ঘটনা কি শুধুই ভুল-বোঝাবুঝি, নাকি এর পেছনে লুকিয়ে আছে আরও গভীর কোনো গল্প? মানুষ যে কত অদ্ভুত এবং জটিল সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তা যেন এই ঘটনাই প্রমাণ করে।

২০২৫ সালে সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্টের তালিকা প্রকাশ, পেছাল বাংলাদেশ

চুল পড়ে টাক হয়ে যাচ্ছেন গ্রামের বাসিন্দারা, মহারাষ্ট্রজুড়ে আতঙ্ক

হিজাব পরতে বলায় মোল্লার পাগড়ি খুলে মাথায় পরলেন নারী

মুক্তিপণের বার্তায় ভুল বানান পুলিশকে দিল অপহরণকারীর সন্ধান