গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার জের ধরে গাজায় এবার স্থল অভিযান চালাতে যাচ্ছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। গাজায় প্রবেশ করে তারা যে কোনো পরিস্থিতিতে যে কাউকে গুলি করতে পারবে—এমন অনুমতি দিয়েছে ইসরায়েল সরকার।
এর আগে গত মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) গাজা শহরের গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির লাইন বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় দুর্বিষহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে সেখানে। বহু বছর ধরে এই শহরে অবস্থান করছেন মালয়েশিয়াভিত্তিক একটি সাহায্য সংস্থার কর্মকর্তা জিয়াদ শেহাদা। বুধবার আল-জাজিরাকে জানান, বর্তমানে জীবনের সবচেয়ে ভয়ংকর সময় পাড়ি দিচ্ছেন তিনি।
মর্মান্তিক পরিস্থিতির মধ্যে থাকা গাজার বাসিন্দাদের মধ্যে খাবার, কম্বল, বালিশসহ বিভিন্ন জিনিস বিতরণের চেষ্টা করছে শেহাদার সংস্থাটি। কিন্তু সমস্যা হলো—এসব জিনিস শহরের সীমান্ত এলাকায় মজুত করে রাখা আছে। সেখানে পৌঁছার মতো পরিস্থিতি এখন আর নেই। তাঁদের সঙ্গে থাকা মজুতও এখন শেষ হয়ে গেছে।
বিদ্যুৎ না থাকায় নিজের প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য কর্মী এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারছেন না শেহাদা। তিনি বলেন, ‘এটাই এ যাবৎকালের সবচেয়ে ভয়ংকর যুদ্ধ।’
তবে বিদ্যুৎ না থাকায় সবচেয়ে বিপদে পড়েছে হাসপাতালে অবস্থান করা রোগী ও শিশুরা। শহরের আল-ওয়াফা হাসপাতালের স্বাস্থ্য পরিচালক হাসান খালাফ জানিয়েছেন, হাসপাতালগুলোকে এখন জেনারেটরের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। কিন্তু এসব হাসপাতালে অত্যাবশ্যকীয় কিছু জরুরি সেবা রয়েছে যেগুলো জেনারেটর দিয়ে পরিচালনা করা সম্ভব নয়।
খালাফ আরও জানান, গাজার হাসপাতালগুলোতে বর্তমানে ১০০ নবজাতক রয়েছে যাদের বাঁচিয়ে রাখার সব সম্ভাবনা শেষ হয়ে যাচ্ছে। কারণ এসব শিশুকে জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপের জন্য বিদ্যুৎ চালিত চিকিৎসা সরঞ্জামের ওপর করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘তারা খুব ছোট। খুবই দুর্বল।’
এদিকে ডায়ালাইসিস করে বেঁচে থাকা এক হাজারের বেশি রোগীও এখন মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। কারণ ডায়ালাইসিস মেশিনগুলো বিদ্যুৎ ছাড়া চালানো সম্ভব হচ্ছে না।
এই অবরোধকে ‘গণহত্যা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন শেহাদা।