হোম > বিশ্ব > মধ্যপ্রাচ্য

গাজার হাসপাতালের নিচে বাংকারগুলো ইসরায়েলেরই তৈরি: সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইহুদ বারাক

অনলাইন ডেস্ক

আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৩, ২০: ৫২

ইসরায়েল এত দিন দাবি করে আসছিল, তারা আল-শিফা হাসপাতালের নিচে ৫৫ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি টানেলের খোঁজ পেয়েছে, যেখান থেকে হামাস তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। গতকাল সোমবার গাজার আল-শিফা হাসপাতালের নিচে পাওয়া বাংকারটি ইসরায়েলই নির্মাণ করেছিল বলে দাবি করেছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইহুদ বারাক।

সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী বলেন, কয়েক দশক আগে হাসপাতালের কার্যক্রম পরিচালনার স্থান সংকুলান করতে হাসপাতালের ভূগর্ভে এই বাংকার নির্মাণ করে ইসরায়েল। তখন গাজা তেল আবিবের দখলে ছিল। 

সংবাদমাধ্যম সিএনএনের সাংবাদিক ক্রিস্টিন আমানপোরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইহুদ বারাক বলেন, ‘এটি কয়েক বছর ধরেই জানা যে হামাস মূলত আল-শিফার নিচে ইসরায়েলিদের তৈরি বাংকার ব্যবহার করছে।’ 

তিনি বলেন, ‘এটি হামাসের কমান্ড পোস্ট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি মূল টানেল নেটওয়ার্কের একটি সংযোগস্থল। আমি জানি না, এ টানেল কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ। হতে পারে এটিই একমাত্র টানেল নয়। এখানে আরও হাসপাতাল ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে। তবে অবশ্যই এ টানেল হামাস ব্যবহার করেছে।’ 

কোনো ভুল হচ্ছে কি না তা—আমানপোর এমন সতর্ক করলে ইহুদ বারাক স্পষ্ট করে বলেন, ‘না, চার দশক আগে আমরা এই হাসপাতাল চালিয়েছি। তখন আমরা হাসপাতালের স্থান সংকটের কারণে এ বাংকারগুলো নির্মাণ করতে সহায়তা করি।’ 

 ২০০৯ সালে ইসরায়েলের সংবাদ সংস্থা হারেৎজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৮০-এর দশকে তেল আবিব আল-শিফা হাসপাতালটির সম্প্রসারণ করে। এ সময় বিশাল বেসমেন্ট তৈরি করা হয়, যেখানে হাসপাতালের লন্ড্রি ও বিভিন্ন প্রশাসনিক সেবার ব্যবস্থা রাখা হয়। ১৯৬০-এর দশকে গাজা উপত্যকা মিসরের শাসনাধীনে থাকার সময় হাসপাতালটি নির্মাণ করা হয়। 

বারাকের দাবি, হয়তো হামাস এটির আরও সম্প্রসারণ করে অন্যান্য টানেল ও বাংকারের সঙ্গে যুক্ত করে। সময় নিয়ে সতর্কতার সঙ্গে হাসপাতালে প্রবেশ করার কারণে হামাস সদস্যরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির ভূগর্ভস্থ অবকাঠামোতে তাঁদের কর্মকাণ্ডের প্রমাণ মুছে ফেলার সুযোগ পেয়েছেন। 

গত সপ্তাহে ইসরায়েলি ট্যাংক প্রথমে হাসপাতালটি ঘিরে ফেলে। এতে হাসপাতালে খাবার, জ্বালানি, পানি ও ওষুধ সংকট দেখা দেয়। 

তিনি সাংবাদিক আমানপোরকে বলেন, ‘আমরা এদিকে অভিযান চালানো নিয়ে অনেক দিন ধরেই সতর্ক করে আসছি। এরপর চিকিৎসক ও রোগীদের প্রাণহানি এড়াতে অত্যন্ত সতর্কভাবে সেখানে গেছি। এতে হামাস প্রমাণ সরাতে যথেষ্ট সময় পেয়েছে। তবে আমরা নিশ্চিত যে হামাসের কর্মকাণ্ডের প্রধান বা অপ্রধান ঘাঁটি হিসেবে কয়েক বছর ধরেই এটি ব্যবহার করা হচ্ছে।’ 

ইসরায়েল বরাবরই হামাসের বিরুদ্ধে গাজার বৃহত্তম হাসপাতালটির নিচে একটি টানেল নেটওয়ার্কের কমান্ড সেন্টার পরিচালনার অভিযোগ করে আসছে। ইসরায়েলের এ দাবি যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাও সমর্থন করেছে। তবে বরাবরই অস্বীকার করে আসছে হামাস। 

ফিলিস্তিনে গুপ্ত সুড়ঙ্গ ও বাংকারের বিশাল নেটওয়ার্ক নির্মাণ কথা অবশ্য স্বীকার করে হামাস। তবে সেগুলো হাসপাতালের মতো বেসামরিক অবকাঠামোর সঙ্গে যুক্ত নয় বলে দাবি তাদের। 

গত সপ্তাহে ইসরায়েল হাসপাতালের নিচে বাংকার ও টানেলে প্রবেশমুখের ফুটেজ প্রকাশ করেছে। ইসরায়েলের দাবি, এই টানেল এক হামাস সদস্যদের ঘরের কাছেই। এটি হাসপাতালের নিচে এবং কংক্রিট নির্মিত টানেলটি শক্তিশালী বোমার আঘাতেও ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। 

এ ছাড়া ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী কয়েকটি অস্ত্রের ছবি প্রকাশ করেছে। তাদের দাবি, এ অস্ত্রগুলো তারা টানেল ও বাংকারের ভেতরে পেয়েছে। তবে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব দাবিকে মিথ্যা ও ‘সস্তা প্রোপাগান্ডা’ আখ্যা দিয়েছে হামাস। 

হাসপাতালের নিচে হামাসের ঘাঁটি ছিল—এ দাবি এখনো নিশ্চিত করা হয়নি। তবে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ বেড়ে যাওয়ায় ইসরায়েল তাদের এ দাবিকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করবে। গত ৭ অক্টোবরের পর ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত ১৪ হাজার ১০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। 

এদিকে আজ বুধবার কাতারের মধ্যস্থতায় চার দিনের যুদ্ধবিরতি দিতে জন্য সম্মত হয়েছে ইসরায়েল ও হামাস। এতে হামাস অন্তত ৫০ বন্দী নারী ও শিশুকে মুক্তি দেবে। বিনিময়ে ইসরায়েল থেকে ১৫০ ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুকে কারামুক্তি দেওয়া হবে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা factcheck@ajkerpatrika.com

সেনাপ্রধানকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করল লেবানন

ভারত গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও অর্থনৈতিক অংশীদার: তালেবান

নেতানিয়াহুকে ‘কুচকুচে কালো কুকুরছানা’ বলে গালি দেওয়ার ভিডিও শেয়ার ট্রাম্পের

ভিনদেশে আইনি পদক্ষেপের মুখোমুখি হচ্ছে সৈন্যরা, নতুন বিধিনিষেধ ইসরায়েলের