ইসরায়েলে হামাস যোদ্ধাদের হাতে নয়জন আমেরিকান নিহত হয়েছেন। আরও বেশ কয়েকজন মার্কিন নাগরিক নিখোঁজ রয়েছেন। যেখানে গত শনিবার ইসরায়েলে হামাসের আকস্মিক ও নজিরবিহীন হামলায় এখন পর্যন্ত ৯০০ ইসরায়েলি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
সোমবার (৯ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে নয় নাগরিক নিহত ও বেশ কয়েকজন নিখোঁজ থাকার কথা জানানো হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি, নয়জন আমেরিকান নাগরিক নিহত হয়েছেন। আরও বেশ কয়েকজন নাগরিক নিখোঁজ রয়েছেন বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি, তবে তাদের সঠিক সংখ্যার ব্যাপারে নিশ্চিত তথ্য নেই। তাঁদের অবস্থান জানার জন্য আমরা ইসরায়েল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করছি।’
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা বিভাগের মুখপাত্রও নয় মার্কিন নাগরিক নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তবে সংঘাতের দুই দিন পেরিয়ে গেলেও নিহত আমেরিকানদের পরিচয় শনাক্ত করতে পারেননি যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা।
গত শনিবার হামলার সময় ৯০০ ইসরায়েলিকে হত্যা এবং বেশ কয়েকজনকে জিম্মি করেছে হামাস। ৫০ বছর আগে সিরিয়া এবং মিসর যেভাবে আকস্মিক হামলায় ইসরায়েলকে বিপর্যস্ত করে ফেলেছিল, ঠিক সেভাবেই বা তার চেয়েও কার্যকরভাবে ভেতরে ঢুকে হামলা চালিয়ে চমকে দিয়েছে হামাস। হামাসের এই নজিরবিহীন হামলার জবাবে এরই মধ্যে গাজায় ব্যাপক বোমা হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। এতে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫০০ ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে বিমানবাহী জাহাজ এগিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। বিবিসির প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, বিমানবাহী জাহাজ ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড, একটি মিসাইল ক্রুজার এবং চারটি মিসাইল ডেস্ট্রয়ার এই এলাকার দিকে যাচ্ছে। পরে যুদ্ধবিমানও পাঠানো হবে।
হোয়াইট হাউস থেকে জানানো হয়েছে, আগামী দিনগুলোতে ইসরায়েলের জন্য সামরিক সহায়তা পাঠানো হবে। ইসরায়েলের কোনো শত্রু যেন চলমান পরিস্থিতির সুযোগ নিতে না পারে সে ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র সতর্ক রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতায় এটি স্পষ্ট যে, ওয়াশিংটন বিশেষ করে লেবাননের হিজবুল্লাহকে নিয়ে চিন্তিত। এই সংগঠনটি ইরানের মদদপুষ্ট। ইরান হামাসকেও অস্ত্র সহায়তা দেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এরই মধ্যে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি হামাসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এই অঞ্চলকে বিপদে ফেলার জন্য তিনি ইসরায়েলকেই দায়ী করেছেন। হামাসও জানিয়েছে, ইসরায়েলে এই হামলায় সহায়তা দিয়েছে ইরান।
ফলে গাজা–ইসরায়েল যুদ্ধ আরও বিস্তৃত হওয়ার আশঙ্কা প্রবল হচ্ছে। সেই শঙ্কা থেকেই কাছাকাছি জলসীমায় যুদ্ধজাহাজ মোতায়েনের পদক্ষেপ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।