গাজার উত্তর অংশ থেকে বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার জন্য ইসরায়েলি বাহিনীর বেঁধে দেওয়া সময়সীমা শেষ হয়ে গেছে। এবার সবুজ সংকেত পেলেই গাজা শহরের ভেতরে প্রবেশ করবে ইসরায়েলের পদাতিক সেনারা। একই সময়ে আকাশ ও সমুদ্র পথেও অভিযান চালানো হবে।
এ অবস্থায় গাজার পরিস্থিতি নিয়ে আল-জাজিরার লাইভ প্রতিবেদনে সর্বশেষ অবস্থার কথা জানিয়েছেন সংবাদ সংস্থাটির সাংবাদিক স্টেফানি ডেকার।
বাংলাদেশ সময় রোববার রাত ১১টার দিকে স্টেফানি জানান, গাজা থেকে তিনি মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছেন। এর আগে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে গাজার উত্তর অংশে ইসরায়েলি বিমান হামলা বেড়েছে বলে তাঁর মনে হয়েছে।
এদিকে গাজায় প্রবেশের জন্য ইসরায়েলি বাহিনীর অবস্থানে ভারী অস্ত্রে সজ্জিত কিছু আর্টিলারি অবস্থান করতেও দেখেছেন স্টেফানি। আছে বিপুলসংখ্যক রকেট ও ব্যারেজ। এর অর্থ হলো-ইসরায়েলের সম্মুখ সারির যোদ্ধারা (ফ্রন্ট লাইন) খুব সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
নিরাপদ দূরত্ব থেকে সাংবাদিকেরা অনুমান করছেন খুব দ্রুত স্থল অভিযান শুরু করবে ইসরায়েলি বাহিনী। অভিযান শুরু করার জন্য এই বাহিনীর আর কোনো প্রস্তুতি বাকি নেই।
এর আগে শনিবার রাতে এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানিয়েছিল, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় একই সময়ে স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে হামলা চালানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তবে এই হামলা কখন শুরু হবে, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে কিছু উল্লেখ করেনি তারা।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে আসন্ন অভিযানকে বিস্তৃত পরিসরের আক্রমণ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। বলা হয়, প্রয়োজনীয় যুদ্ধ সরঞ্জাম ইতিমধ্যে যথাস্থানে পাঠানো হয়েছে। কৌশলগত কারণে সারা দেশে সেনা মোতায়েনের কথাও জানানো হয় ওই বিবৃতিতে। অভিযানে বিপুলসংখ্যক রিজার্ভ সেনাও অংশ নিচ্ছেন।
গাজায় একটি বড় ধরনের স্থল অভিযান শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছে ইসরায়েলে সেনাবাহিনী। এই লক্ষ্যে গত শুক্রবার গাজার উত্তর অংশ থেকে সব বেসামরিক বাসিন্দাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উপত্যকার দক্ষিণে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। উত্তর অংশে প্রায় ১১ লাখ মানুষের বসবাস। ইসরায়েলের নির্দেশের পর ওই অঞ্চল থেকে অসংখ্য মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে ইতিমধ্যেই পালিয়ে গেছেন।
জানা গেছে, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের মাটিতে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী দল হামাসের আকস্মিক হামলায় নিহত ইসরায়েলির সংখ্যা ১ হাজার ৪০০ ছুঁয়েছে। জবাবে ইসরায়েলও বিমান হামলা শুরু করে গাজা শহরে। হাজার হাজার বোমার আঘাতে ইতিমধ্যেই গাজা শহরের নিহতের সংখ্যা প্রায় আড়াই হাজারে উন্নীত হয়েছে।
গাজা শহরের মাটির নিচে হামাসের শক্তিশালী সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্ক ধ্বংস ও অপহৃত নাগরিকদের উদ্ধার করার জন্য স্থল অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল।