ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার বিমান হামলা ও সাধারণ মানুষ হত্যার প্রতিবাদে আজ শুক্রবার লেবাননে সমাবেশ করেছে সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ। এর আগে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস শুক্রবার তাঁদের সমর্থনে আরব বিশ্বের সব দেশে সমাবেশের আয়োজনের আহ্বান জানায়।
হামাসের এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে লেবাননে অবস্থিত ফিলিস্তিনি বুর্জ আল-সেমালি শরণার্থী ক্যাম্পেও জড়ো হন অনেক মানুষ। এই শরণার্থী ক্যাম্পে বেশ কয়েকটি ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীর উপস্থিতি রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হলো ইসলামিক জিহাদ।
সেই শরণার্থী ক্যাম্পে যান ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির সাংবাদিক হুগো বাচেগা। ওই ক্যাম্পে আজাব মুসা নামের এক মায়ের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। আজাব মুসার ছেলে গত সোমবার ইসরায়েলে প্রবেশ করেন এবং সেখানে হামলা চালান। যদিও পরে তিনি ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে প্রাণ হারান।
ছেলে হারানো ৪৫ বছর বয়সী এ মা বিবিসিকে জানিয়েছেন, তিনি তার ২২ বছর বয়সী ছেলে হামজাকে নিয়ে গর্বিত এবং তিনি তার ছেলেকে ইসরায়েলে হামলা চালাতে উৎসাহ দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ‘হামজা আমাকে বলেছে সে কি করতে যাচ্ছে...আমি তাঁর পাশে দাঁড়াই এবং বলি সে যেন তাঁর লড়াই ছেড়ে না দেয়।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘যদি আমার ১০ ছেলে থাকত, আমি তাদের সবাইকে ইসরায়েলে হামলার জন্য পাঠাতাম। কারণ আমাদের নিজেদের মাটি দখলমুক্ত করতে হবে।’
ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে নিহত হামজার পরিবার ২০১১ সালে সিরিয়া থেকে লেবাননে আসে। সে বছর সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এরপর তারা আর কখনো সেখানে ফিরে যাননি।
হামজার ভাই ২০ বছর বয়সী মোহাম্মদ এখনো কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত নন। কিন্তু বড় ভাইয়ের মতো তিনিও একদিন যোদ্ধা হবেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখানকার সব মানুষ আমার ভাইয়ের জন্য গর্বিত।’
গত শনিবার থেকে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ চললেও এখন পর্যন্ত শান্ত আছে লেবানন-ইসরায়েল সীমান্ত। তবে এরমধ্যেই লেবানন থেকে ইসরায়েলে প্রবেশ করে হামলা চালিয়েছেন কয়েকজন সশস্ত্র যোদ্ধা। তাদেরই একজন হলেন হামজা। তিনি ইসলামিক জিহাদ নামের সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্য ছিলেন।