ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং থ্রেডসের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা যুক্তরাষ্ট্রে তাদের থার্ড পার্টি ফ্যাক্টচেকিং সেবা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবর্তীতে অন্যান্য দেশেও এটি বন্ধ করা হবে। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) মেটার ওয়েবসাইটে একটি ভিডিও বার্তায় সহপ্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ এ তথ্য জানান।
মার্ক জাকারবার্গ জানান, ইলন মাস্কের প্ল্যাটফর্ম এক্স (সাবেক টুইটার)–এর মতো ‘কমিউনিটি নোটস’ নামে একটি নতুন ব্যবস্থা চালু করবে মেটা। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মেটা ব্যবহারকারীদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সেন্সরশিপের অভিযোগের ভারসাম্য বজায় রাখতে চায়। এতে স্বাধীন ফ্যাক্টচেকিং সংস্থাগুলোর ওপর নির্ভরতা কমবে।
থার্ডপার্টি ফ্যাক্টচেকিং বন্ধ করার বিষয়ে মেটা জানায়, যারা অভিজ্ঞ হিসেবে কাজ করেন তাঁদের নিজস্ব পক্ষপাত ও দর্শন আছে। আর সেই মোতাবেক তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন যে, কোন কনটেন্টের ফ্যাক্টচেক করবেন আর কোনটির করবে না।
ওয়েবসাইটে মেটা জানায়, মেটা আরও বেশি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দেবে। তাই মূলধারার আলোচনার কনটেন্টগুলোর ক্ষেত্রে কমিউনিটি গাইডলাইন শিথিল করা হবে। তবে অবৈধ ও সংবেদনশীল বিষয়গুলো আরও কঠোর নজরদারির আওতায় আসবে।
এ ছাড়া রাজনৈতিক বিষয়বস্তুকে মেটা ব্যক্তিগত পছন্দ বিবেচনায় ব্যবস্থা নেবে। যারা যেসব কনটেন্ট পছন্দ করেন তাঁদের ফিডে সেগুলো বেশি দেখাবে।
কমিউনিটি নোটস কীভাবে কাজ করবে
কমিউনিটি নোটস ব্যবস্থার মাধ্যমে মেটা ব্যবহারকারীরা নিজেরাই বিভ্রান্তিকর বা প্রশ্নবিদ্ধ পোস্টগুলো চিহ্নিত করতে পারবেন এবং সেগুলোর সঙ্গে প্রাসঙ্গিক তথ্য যোগ করতে পারবেন।
মেটা মনে করে, এই পদ্ধতি ফ্যাক্টচেকিংয়ে আরও বেশি মানুষকে যুক্ত করা যাবে এবং থার্ডপার্টি প্ল্যাটফর্মগুলোর বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ কিছুটা এড়ানো যাবে। এ ছাড়া কিছু কিছু ফ্যাক্টচেক রাজনৈতিক মতামতকে প্রভাবিতও করে। সেসব ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীরাই যখন প্রাসঙ্গিক নোট দেবেন, তখন বিষয়টি পর্যালোচনায় পক্ষপাতের ঝুঁকি কমবে।
মেটা জানায়, যখন এই প্রোগ্রাম চালু হবে তখন মেটা নিজে থেকে কমিউনিটি নোটসে কিছুই লিখবে না বা সিদ্ধান্ত নেবে না। এখানে কন্ট্রিবিউটররা লেখা ও রেটিং দেওয়ার কাজ করবেন। এক্সের মতো কমিউনিটি নোট দেওয়ার ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্ব দূর করতে দুই পক্ষের মানুষেরই সম্মতি লাগবে।
কমিউনিটি নোটস মেটা ব্যবহারকারীদের বিভ্রান্তিকর পোস্ট চিহ্নিত করে সে সম্পর্কে তথ্য বা প্রাসঙ্গিক ব্যাখ্যা যোগ করার অনুমতি দেবে।
এদিকে কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণ নীতিতেও পরিবর্তন আনতে চলেছে মেটা। অবৈধ এবং বেশি সংবেদনশীল বিষয়বস্তুর জন্য বিদ্যমান স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা বহাল থাকবে। যেমন: সন্ত্রাস, শিশু যৌনতা, মাদক, জালিয়াতি এবং কেলেঙ্কারির বিষয়ে আগের মতোই সেন্সর চলবে।