বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর প্রযুক্তিগত নির্ভরশীলতা কমাতে চেষ্টা করছে রাশিয়া। এরই ধারাবাহিকতায় গেমিং কনসোল তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে দেশটি। গত ২৫ শে ডিসেম্বর ঘরোয়া ভিডিও গেইম কনসোল সম্পর্কে কিছু তথ্য প্রকাশ করেছেন রাশিয়ার ‘স্টেট ডুমা কমিটি অন ইনফরমেশন পলিসি’র ডেপুটি চেয়ারম্যান অ্যান্টন গোরেলকিন। শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তৈরি কনসোলটিতে রাশিয়ার নিজস্ব এলব্রস প্রসেসর এবং আরোরা বা অল্ট লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা হবে।
প্রযুক্তি বিষয়ক সাইট টেকস্পটের প্রতিবেদন অনুসারে, এলব্রাস প্রসেসরটি মূলত রুশ প্রতিরক্ষা এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর জন্য তৈরি করা হয়েছিল। এটি বর্তমানে ইন্টেল, এএমডি বা এআরএম চিপসেটের মতো শক্তিশালী নয়। তবে অ্যান্টন গোরেলকিন দাবি করেছেন যে, এই কনসোলটি পুরোনো গেম খেলার জন্য ডিজাইন করা হয়নি বরং এটি নতুন ‘দেশীয় ভিডিও গেমিং’ চালানোর জন্য তৈরি হবে। এই লক্ষ্য পূরণে নিজস্ব গেমিং ডেভেলপমেন্ট কমিউনিটি গড়ে তুলতে হবে রাশিয়াকে। এটি দেশটির গেমিং শিল্পের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।
এ ছাড়া, ‘ফগ প্লে’ নামে আরেকটি কনসোল নিয়ে কাজ করছে রাশিয়া। এটি মূলত ক্লাউড-গেমিং ডিভাইস হিসেবে কাজ করবে। ব্যবহারকারীরা উচ্চমানের কম্পিউটার ভাড়া দিয়ে ফগ প্লে মালিকদের গেম খেলার সুযোগ দিতে পারবেন।
রাশিয়ার প্রযুক্তিগত স্বাধীনতা অর্জনের প্রচেষ্টার একটি অংশ এই কনসোলগুলো। ইউক্রেন আক্রমণের পর রাশিয়ার ওপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে পশ্চিমা দেশগুলো। এ জন্য প্রযুক্তিগত দিক থেকে আরও স্বতন্ত্র হওয়ার চেষ্টা করছে দেশটি। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে তারা সরকার, সেনাবাহিনী এবং শিক্ষাব্যবস্থায় অ্যাস্ট্রা লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার বাড়ানোর চেষ্টা করছে। এ ছাড়া মার্কিন সরকারের হস্তক্ষেপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য গুগল-এর মালিকানাধীন ফাইল এবং ওয়েবসাইট স্ক্যানার ভাইরাসটোটাল পরিবর্তে তাদের নিজস্ব মাল্টিস্ক্যানার প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছে রাশিয়া।
তবেএই প্রযুক্তিগত স্বাধীনতার লক্ষ্যে অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে রাশিয়ার। চীনের প্রযুক্তির ওপর রাশিয়ার নির্ভরতাও অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। যেমন: চীনের ইলেকট্রনিকস ও ডুয়েল-ইউজ টেকনোলজি (যেগুলো সাধারণ মানুষ ও সামরিক উভয়ই ক্ষেত্রই ব্যবহৃত হতে পারে)। চীনা স্মার্টফোনগুলো রাশিয়ায় ব্যাপক জনপ্রিয়। তবে এই প্রযুক্তিগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
পিএস ৫ বা এক্সবক্সের মতো চিপ তৈরির সক্ষমতা নেই রাশিয়ার। এ কারণে তাদের প্রযুক্তিগত স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণে অনেক সময় আরও সময় লাগবে।