মো. আকতারুজ্জামান, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা)
জাহাঙ্গীর আলমের তিন মেয়ে। বড় মেয়ে পড়াশোনা করত। কিন্তু করোনায় এমনিতেই দরিদ্র জাহাঙ্গীরের আয় আরও কমে যায়। এ অবস্থায় প্রবাসী পাত্রের সঙ্গে বড় মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেন বাবা। জাহাঙ্গীর আলমের দাবি—‘গরিব মানুষ, আয় রোজগার নেই। ছেলে প্রবাসী। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করেই বিয়ে দিয়েছি।’ বাবা মেয়ের সুখের কথা ভেবে বিয়ে দিলেও এমন ঘটনায় গত দেড় বছরে বহু ছাত্রীর শিক্ষাজীবন ধ্বংস হয়ে গেছে।
জাহাঙ্গীর আলমের বড় মেয়ের মতো উপজেলার ১০৫টি মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসার দেড় শতাধিক ছাত্রী বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছে। এসব বিয়ের আবার কোনো কাবিননামাও হচ্ছে না বলে জানিয়েছে কয়েকটি সূত্র। নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে লিখিতভাবে উভয় পক্ষের ১৮ বছর পূর্ণ হলে ওই ছাত্রীদের কাবিননামা হবে উল্লেখ করে বিয়ের কাজ সম্পন্ন হচ্ছে। অনেক ছাত্রী ইতিমধ্যে সন্তানের মা হয়ে গৃহবধূ হিসেবে সংসার করে যাচ্ছে।
দীর্ঘ ৫৪৪ দিন পর গত ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খোলে। উপজেলার ১০৫টি মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসায় ৩৫ হাজার ৬৭৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে ছাত্রী সংখ্যা ২১ হাজার ৩৫৬ ও ছাত্রসংখ্যা ১৪ হাজার ৩১৯। কিন্তু এত দিন পর খুললেও চৌদ্দগ্রামের মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে সব শিক্ষার্থী ফেরেনি। উপস্থিতি আশঙ্কাজনক হারে কমেছে। এর মধ্যে ছাত্রী অনুপস্থিতির হারই বেশি। করোনায় লম্বা সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বিশেষত মেয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন হুমকির মুখে পড়েছে। অনেকেরই বিয়ে হয়ে গেছে।
এমনই এক শিক্ষার্থীর বাবা হারাধন চন্দ্র পাল। তাঁর মেয়ে বাতিসা বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে পড়ত। বললেন, ‘পাত্র সাউথ আফ্রিকা থাকে। ছেলেটি ভালো হওয়ায় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি।’ এত অল্প বয়সে কেন বিয়ে দিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শারীরিকভাবে মেয়ে বড় হয়ে গেছে। পড়ালেখা করে কী করবে? পাত্র ভালো, তাই বিয়ে দিয়েছি।’
একইভাবে মো. স্বপনও তাঁর দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েকে বাহরাইন প্রবাসী এক ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে অভিভাবকেরা মূলত মেয়ের নিরাপত্তা, নিজের দারিদ্র্য ও পাত্রের আয়-উপার্জনের কথাই ভেবেছেন। করোনাকালে সবচেয়ে বড় বিপাকে ছিল নিম্ন আয়ের মানুষ। এতে এই নিম্ন আয়ের পরিবারের মেয়ে সন্তানদের শিক্ষা সবচেয়ে বড় ঝুঁকিতে পড়েছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানদের আশা—ধীরে ধীরে ছাত্রীদের উপস্থিতি বাড়বে। মিয়াবাজার তোষণ রফিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আয়েশা রায়হান বলেন, ‘আমার স্কুলে একজন এসএসসি পরীক্ষার্থীর (ছাত্রী) বিয়ে হয়ে গেছে। সবে মাত্র স্কুল খোলা হয়েছে। ধীরে ধীরে জানতে পারব আর কতজন ছাত্রীর বিয়ে হয়েছে।’
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, করোনাকালে ৫৪৪ দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অষ্টম থেকে দশম শ্রেণির অনেক ছাত্রীর বিয়ে হয়ে গেছে। তার মধ্যে বাতিসা বালিকা বিদ্যালয়েরই ২৪ ছাত্রীর বিয়ে হয়েছে। এদের অধিকাংশেরই বিয়ে হয়েছে প্রবাসী ছেলের সঙ্গে।
বাতিসা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহনাজ বেগম বলেন, ‘স্কুল খোলার পর জেনেছি অনেক ছাত্রীর বিয়ে হয়েছে। তাৎক্ষণিক পরিসংখ্যানে আমার স্কুলে অষ্টম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ২৪ ছাত্রীর বিয়ে হয়েছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমাদের অভিভাবকেরা অসচেতন বলেই অল্প বয়সে তাঁদের মেয়েকে বিয়ে দিয়েছে।’
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু তৈয়ব হোসেন বলেন, ‘সরকার ধাপে ধাপে ষষ্ঠ থেকে ডিগ্রি পর্যন্ত ছাত্রীদের পড়ালেখায় উৎসাহিত করার জন্য উপবৃত্তি দিয়ে যাচ্ছে। করোনাকালে ছাত্রীদের অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে যাওয়ায় আমি মর্মাহত। অল্প বয়সে এসব ছাত্রী সংসার সম্পর্কে বুঝে উঠতে পারবে না। এতে পারিবারিক কলহ বাড়বে। আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। অন্যথায় এসব বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়।’
বাল্যবিবাহের বিষয়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে আগেই আলোচনা হলেও এ সম্পর্কিত সচেতনতা কার্যক্রমে সহযোগিতা চেয়েও পাওয়া যায়নি বলে জানালেন চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মঞ্জুরুল হক। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘সারা দেশের মতো চৌদ্দগ্রামেও করোনাকালীন বেশ কিছু ছাত্রী বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছে। আমরা স্কুল প্রধানদের নিয়ে একাধিকবার মিটিং করে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের বিষয়ে সতর্ক করেছি। কিন্তু স্কুলপ্রধানেরা আমাকে এ বিষয়ে কোনো সহযোগিতা করেননি। তবে এখনো যদি এমন কিছু শুনি, তাহলে আমি ওই অভিভাবকদের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
জাহাঙ্গীর আলমের তিন মেয়ে। বড় মেয়ে পড়াশোনা করত। কিন্তু করোনায় এমনিতেই দরিদ্র জাহাঙ্গীরের আয় আরও কমে যায়। এ অবস্থায় প্রবাসী পাত্রের সঙ্গে বড় মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেন বাবা। জাহাঙ্গীর আলমের দাবি—‘গরিব মানুষ, আয় রোজগার নেই। ছেলে প্রবাসী। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করেই বিয়ে দিয়েছি।’ বাবা মেয়ের সুখের কথা ভেবে বিয়ে দিলেও এমন ঘটনায় গত দেড় বছরে বহু ছাত্রীর শিক্ষাজীবন ধ্বংস হয়ে গেছে।
জাহাঙ্গীর আলমের বড় মেয়ের মতো উপজেলার ১০৫টি মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসার দেড় শতাধিক ছাত্রী বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছে। এসব বিয়ের আবার কোনো কাবিননামাও হচ্ছে না বলে জানিয়েছে কয়েকটি সূত্র। নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে লিখিতভাবে উভয় পক্ষের ১৮ বছর পূর্ণ হলে ওই ছাত্রীদের কাবিননামা হবে উল্লেখ করে বিয়ের কাজ সম্পন্ন হচ্ছে। অনেক ছাত্রী ইতিমধ্যে সন্তানের মা হয়ে গৃহবধূ হিসেবে সংসার করে যাচ্ছে।
দীর্ঘ ৫৪৪ দিন পর গত ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খোলে। উপজেলার ১০৫টি মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসায় ৩৫ হাজার ৬৭৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে ছাত্রী সংখ্যা ২১ হাজার ৩৫৬ ও ছাত্রসংখ্যা ১৪ হাজার ৩১৯। কিন্তু এত দিন পর খুললেও চৌদ্দগ্রামের মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে সব শিক্ষার্থী ফেরেনি। উপস্থিতি আশঙ্কাজনক হারে কমেছে। এর মধ্যে ছাত্রী অনুপস্থিতির হারই বেশি। করোনায় লম্বা সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বিশেষত মেয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন হুমকির মুখে পড়েছে। অনেকেরই বিয়ে হয়ে গেছে।
এমনই এক শিক্ষার্থীর বাবা হারাধন চন্দ্র পাল। তাঁর মেয়ে বাতিসা বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে পড়ত। বললেন, ‘পাত্র সাউথ আফ্রিকা থাকে। ছেলেটি ভালো হওয়ায় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি।’ এত অল্প বয়সে কেন বিয়ে দিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শারীরিকভাবে মেয়ে বড় হয়ে গেছে। পড়ালেখা করে কী করবে? পাত্র ভালো, তাই বিয়ে দিয়েছি।’
একইভাবে মো. স্বপনও তাঁর দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েকে বাহরাইন প্রবাসী এক ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে অভিভাবকেরা মূলত মেয়ের নিরাপত্তা, নিজের দারিদ্র্য ও পাত্রের আয়-উপার্জনের কথাই ভেবেছেন। করোনাকালে সবচেয়ে বড় বিপাকে ছিল নিম্ন আয়ের মানুষ। এতে এই নিম্ন আয়ের পরিবারের মেয়ে সন্তানদের শিক্ষা সবচেয়ে বড় ঝুঁকিতে পড়েছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানদের আশা—ধীরে ধীরে ছাত্রীদের উপস্থিতি বাড়বে। মিয়াবাজার তোষণ রফিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আয়েশা রায়হান বলেন, ‘আমার স্কুলে একজন এসএসসি পরীক্ষার্থীর (ছাত্রী) বিয়ে হয়ে গেছে। সবে মাত্র স্কুল খোলা হয়েছে। ধীরে ধীরে জানতে পারব আর কতজন ছাত্রীর বিয়ে হয়েছে।’
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, করোনাকালে ৫৪৪ দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অষ্টম থেকে দশম শ্রেণির অনেক ছাত্রীর বিয়ে হয়ে গেছে। তার মধ্যে বাতিসা বালিকা বিদ্যালয়েরই ২৪ ছাত্রীর বিয়ে হয়েছে। এদের অধিকাংশেরই বিয়ে হয়েছে প্রবাসী ছেলের সঙ্গে।
বাতিসা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহনাজ বেগম বলেন, ‘স্কুল খোলার পর জেনেছি অনেক ছাত্রীর বিয়ে হয়েছে। তাৎক্ষণিক পরিসংখ্যানে আমার স্কুলে অষ্টম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ২৪ ছাত্রীর বিয়ে হয়েছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমাদের অভিভাবকেরা অসচেতন বলেই অল্প বয়সে তাঁদের মেয়েকে বিয়ে দিয়েছে।’
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু তৈয়ব হোসেন বলেন, ‘সরকার ধাপে ধাপে ষষ্ঠ থেকে ডিগ্রি পর্যন্ত ছাত্রীদের পড়ালেখায় উৎসাহিত করার জন্য উপবৃত্তি দিয়ে যাচ্ছে। করোনাকালে ছাত্রীদের অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে যাওয়ায় আমি মর্মাহত। অল্প বয়সে এসব ছাত্রী সংসার সম্পর্কে বুঝে উঠতে পারবে না। এতে পারিবারিক কলহ বাড়বে। আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। অন্যথায় এসব বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়।’
বাল্যবিবাহের বিষয়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে আগেই আলোচনা হলেও এ সম্পর্কিত সচেতনতা কার্যক্রমে সহযোগিতা চেয়েও পাওয়া যায়নি বলে জানালেন চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মঞ্জুরুল হক। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘সারা দেশের মতো চৌদ্দগ্রামেও করোনাকালীন বেশ কিছু ছাত্রী বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছে। আমরা স্কুল প্রধানদের নিয়ে একাধিকবার মিটিং করে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের বিষয়ে সতর্ক করেছি। কিন্তু স্কুলপ্রধানেরা আমাকে এ বিষয়ে কোনো সহযোগিতা করেননি। তবে এখনো যদি এমন কিছু শুনি, তাহলে আমি ওই অভিভাবকদের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
রাজধানীর বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপসসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী এক ব্যক্তি। ৫০০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণের কথা মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
৩৩ মিনিট আগেযশোর টেকনিক্যাল অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কলেজকে পারিবারিক প্রতিষ্ঠান বানিয়ে নজিরবিহীন অনিয়ম-দুর্নীতি করার অভিযোগ উঠেছে অধ্যক্ষ জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ১৪ বছর ধরে কর্মস্থলে না গিয়ে একই সঙ্গে দুটি প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হিসেবে বেতন ভাতা উত্তোলন করেছেন। স্ত্রীকে হিসাব সহকারী পদে নিয়োগ দিয়ে প্রায় ১৪ বছর ধরে
১ ঘণ্টা আগে২ মার্চকে ‘জাতীয় পতাকা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ২ মার্চ পতাকা দিবস ঘোষণার দাবিতে ‘হৃদয়ে পতাকা ২ মার্চ’ আয়োজিত প্রতিবাদী সমাবেশে তিনি এই আহ্বা
২ ঘণ্টা আগেদেশের বিশিষ্ট সম্পাদক এবং প্রবীণ সাংবাদিক নূরুল কবীর সম্প্রতি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে অন্তর্বতীকালীন সরকারের প্রেস উইং।
২ ঘণ্টা আগে