অতীতে বিভিন্ন সময়ে নারায়ণগঞ্জবাসীর পক্ষে দাবি আদায়ে লড়াই-সংগ্রাম করেছেন উল্লেখ করে মেয়র পদপ্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, ‘আমাকে আপনারা পাঁচ বছরের জন্য খেদমত করার সুযোগ দেন। আমার বাবার মতো আমিও আপনাদের খেদমত করতে করতে…। আমার জীবন বাজি রেখেছি। যেকোনো সময় আমার জীবনে অনেক কিছু ঘটতে পারে। আপনাদের জন্য মৃত্যুবরণ করতে রাজি আছি।’

আজ শুক্রবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের (নাসিক) প্রচারণার শেষ দিনে গণমিছিল-পূর্ব পথসভায় এসব কথা বলেন আইভী। নগরীর ২ নম্বর রেলগেটে অস্থায়ী মঞ্চে এই পথসভা করা হয় আওয়ামী লীগের উদ্যোগে। পথসভা শেষে আইভীর নেতৃত্বে গণমিছিল করা হয়। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। গণমিছিলের মাধ্যমে শেষ হয় আনুষ্ঠানিক প্রচারণা।

আইভী বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে ত্বকী, চঞ্চল ও বাবু হত্যাকাণ্ডের জন্য আমার নিজের জীবন বাজি রেখেছি। পুনরায় বাজি রাখতে রাজি আছি। নিজের ঘর ও সংসারের দিকে তাকাই নাই। এসেছি আপনাদের সেবা করতে। নিশ্চয়ই আপনারা আমাকে বিমুখ করবেন না। আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিবেন।’

সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আস্থা রেখে আমার হাতে নৌকা তুলে দিয়েছেন। তাই তাঁর প্রতি নারায়ণগঞ্জবাসীর পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। যাঁরা এখানে এসে আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন, অপশক্তির বিরুদ্ধে, সত্যের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। এখনকার ভোটারদের আশ্বস্ত করেছেন শেখ হাসিনা উন্নয়ন চান। নৌকা মানে হলো সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এবং উন্নয়নের পক্ষে।’ 

• আচরণবিধি ভেঙে আইভীর প্রচারে সাংসদ নজরুল ইসলাম বাবু

আইভী আরও বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ একটি সমৃদ্ধ শহর। কিন্তু কালেভদ্রে এই শহরকে কলঙ্কিত, দূষিত ও বিষাক্ত করা হয়েছে। এই দূষণ ও বিষাক্ততা থেকে নারায়ণগঞ্জকে মুক্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী হাসিনার পয়গাম হলো নৌকা আইভীকে দেওয়া।’ 

বিগত বছরগুলোতে শহরের মাটি ও মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন বলে দাবি করেন আইভী। বলেন, ‘আমার বাবা (আলী আহমদ চুনকা) আমাকে শিক্ষা দিয়েছেন মানুষের মাঝে আল্লাহ, খোদা ও ঈশ্বর বিরাজমান। যদি মানুষের সেবা করতে চাও, তাদের কাছে যাও। তাহলে তুমি তোমার কাঙ্ক্ষিত জিনিস পেয়ে যাবে। বাবার কথা শুনে আপনাদের কাছে এসেছি। ডাকে সাড়া দিয়েছি। দীর্ঘ ১৮ বছর মানুষের কল্যাণে কাজ করেছি।’ 

সরকারদলীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের দিকে ইঙ্গিত করে আইভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যখন বিরোধী দলের নেত্রী ছিলেন, এই দুঃসময়ে যখন নারায়ণগঞ্জে কেউ ছিল না, পালিয়ে ছিল অনেকেই। সেই সময় নেত্রী আমাকে সমর্থন করেছিলেন। ২০০৩-এ আমি নির্বাচিত হয়েছিলাম। মানুষের কল্যাণ ও শেখ হাসিনার জন্য কাজ করেছি।’ 

২০১১ ও ২০১৬ সালের নির্বাচনে বিজয়ের কথা তুলে ধরে আইভী বলেন, ‘আবারও আপনাদের দরবারে এসেছি। আপনাদের দুয়ারে এসেছি শান্তির বার্তা নিয়ে। অন্যায়, অত্যাচার, অবিচার, খুন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে।’ 

• নির্বাচনের এক দিন আগে যা বললেন আইভী    

আইভী বলেন, ‘নৌকাকে রুখবার ক্ষমতা কারও নাই। কারণ বিগত পাঁচ বছরে নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন হয়েছে। নিশ্চয় সেই ধারাবাহিকতা আপনারা বজায় রাখবেন। এই নারায়ণগঞ্জকে সুন্দর নগরী হসেবে গড়ে তোলার জন্য, শীতলক্ষ্যা ও কদমরসুল ব্রিজ, পরিবেশবান্ধব, দুর্নীতিমুক্ত এবং সন্ত্রাসমুক্ত করার জন্য নিশ্চয়ই আপনারা নৌকায় ভোট দিবেন।’ 

আইভী আরও বলেন, ‘আমি প্রতিটি ওয়ার্ড ঘুরে দেখেছি, মাটি ও মানুষ বলছে নৌকা। এই নৌকার বিজয় হবে সুনিশ্চিত।’ 

• আমি লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে পাস করব: আইভী 

পথসভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, ত্রাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, জাতীয় কমিটির সদস্য আনিসুর রহমান দীপু প্রমুখ।

আরও পড়ুন:

• নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন
• জয়ের পথে আইভীর সামনে যত চ্যালেঞ্জ
• আমি কোনো ট্যাক্স বাড়াইনি