রাজধানী থেকে গত তিন দিনে কোরবানির পশু ও হাটের ৩২ হাজার ২৫১ মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণ করেছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। 

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ঈদুল আজহার দিনদুপুর থেকে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শুরু করে। এই বর্জ্য অপসারণে দুই সিটি করপোরেশনের ২১ হাজারের বেশি কর্মী কাজ করে। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে সাড়ে এগারো হাজার কর্মী এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে দশ হাজার কর্মী কাজ করে। 

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ঈদুল আজহার দিনদুপুর থেকে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ কাজ শুরু করে। এর আগে ডিএসসিসি ঈদের আগের দিন রাত থেকেই অস্থায়ী পশুর হাট থেকে বর্জ্য অপসারণ শুরু করে। ডিএসসিসি ঈদের দিন রাত পর্যন্ত ৭৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৮টি ওয়ার্ডের শতভাগ কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করে। ঈদের দ্বিতীয় দিনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ৭৫টি ওয়ার্ডের বর্জ্য সম্পূর্ণ অপসারণ করার ঘোষণা দেয়। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের হিসাব অনুযায়ী তাঁরা ১৬ হাজার ৫১৮ মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণ করেছে। 

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম ঈদুল আজহার দিনদুপুরে রাজধানীর সাইদনগরের অস্থায়ী হাট থেকে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। ডিএনসিসি ঈদের দিন রাতেই ১২ ঘণ্টার মধ্যে কোরবানির বর্জ্য সম্পূর্ণ অপসারণের ঘোষণা দেয়। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ডিএনসিসির হিসাব অনুযায়ী তাঁরা ১৫ হাজার ৭শ ৩৩ মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণ করেছে। 

তবে এখনো রাজধানীর কয়েকটি জায়গায় মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা দাম না পেয়ে যেখান–সেখানে চামড়া ফেলে রেখেছে। এতে চারপাশে দুর্গন্ধে ভোগান্তিতে পড়েছে নগরবাসী। দক্ষিণ সিটির লালবাগ, ধূপখোলা ও গেন্ডারিয়া এলাকার রাস্তায় বর্জ্য ও চামড়া ফেলে রাখায় পচা গন্ধ ছড়াচ্ছে চারপাশে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। 
 
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর বদরুল আমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বৃহস্পতিবার রাতেই আমাদের মূল কোরবানির বর্জ্য অপসারণ কাজ শেষ হয়েছে। তবে এখনো নগরবাসী কিছু কিছু জায়গায় কোরবানি করছে এবং বর্জ্য ফেলে রাখছে। তাই ঈদের তৃতীয় দিনেও আমাদের বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম চলছে। এ ছাড়া অস্থায়ী হাটগুলোতে মাটিসহ কিছু বর্জ্য আছে সেগুলো সরানোর কাজ চলছে। 
 
তিনি বলেন, অস্থায়ী হাটগুলোর বর্জ্য প্রায় অপসারণ শেষ। শুধুমাত্র ধোলাইখালের হাটে কিছু বর্জ্য ছিল সেগুলোও সরানো হচ্ছে। আর ৪২ ও ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের জায়গা দুই অঞ্চলের মাঝে হওয়ায় বর্জ্য অপসারণে একটু দেরি হয়েছে। তা ছাড়া সব জায়গার বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া কিছু অস্থায়ী চামড়া ব্যবসায়ীরা হয়তো দাম না পাওয়ায় রাস্তায় চামড়া ফেলছে আমাদের কর্মীরা সেগুলোও সরানোর কাজ করছে। 

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা আজকের পত্রিকাকে বলেন, আমরা কোরবানির বর্জ্য শতভাগ অপসারণের কাজ সম্পূর্ণ করেছি। তবে বর্জ্য অপসারণ একটি চলমান প্রক্রিয়া। মূল বর্জ্য আমরা অপসারণ করেছি। তবে হাটগুলোতে এখনো হয়তো কিছু কিছু বাঁশ এবং অন্যান্য বর্জ্য রয়েছে। তবে এগুলো চোখে পড়ার মত না। তারপরও ইজারাদাররা হাটের বর্জ্য ঠিকমতো না সরালে আমরা তাঁদের জামানতের টাকা আটকে দেব।