নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার বারদী বাজারে আধিপত্য বিস্তার ও বারদী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাবেক চেয়ারম্যান জহিরুল হক ও বর্তমান চেয়ারম্যান লায়ন বাবুলের সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, সংঘর্ষ ও বাড়িঘর ভাঙচুরসহ অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। আজ বুধবার দুপুরে দফায় দফায় এ সংঘর্ষ ঘটে। এ সংঘর্ষে দুপক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

স্থানীয়রা বলছে, উপজেলার বারদী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাবেক চেয়ারম্যান জহিরুল হক ও বর্তমান চেয়ারম্যান লায়ন বাবুলের সমর্থকদের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। বুধবার দুপুরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বারদী বাজারে জহিরুল হকের ভাই তাজুল ইসলামকে মারধর করে লায়ন বাবুলের সমর্থকেরা। পরে জহিরুল হকের লোকজন একত্রিত হয়ে ঘটনাস্থলে এসে তাদের ওপরও হামলা চালায়। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, সংঘর্ষ ও দোকানপাট–বাড়িঘর ভাঙচুরসহ অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে সাবেক চেয়ারম্যান জহিরুল হকের পক্ষের ইউপি সদস্য নাজমুল হোসেন, তাজুল ইসলাম, হযরত আলী, নাজিম মিয়া, বরকত উল্লাহ, আলী মোহাম্মদ, আমজাদ হোসেন, মজিবুল্লাহ, সোহেল সরকার, কবির এবং বর্তমান চেয়ারম্যান লায়ন বাবুল পক্ষের মাসুম সরকার, বাসেদ সরকার, মামুন সরকার, হুমায়ূন সরকারসহ দুপক্ষের ২০ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

আহতদের সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে হযরত আলী ও আলী মোহাম্মদ নামের দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনা প্রসঙ্গে বর্তমান চেয়ারম্যান লায়ন বাবুলের সমর্থক ইব্রাহিম খলিল ইবু বলেন, ‘নির্বাচনের পর থেকে বারদি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জহিরুল হক ও তাঁর সমর্থক ইউপি সদস্য নাজমুল হোসেনের লোকজন প্রভাব দেখিয়ে আসছে। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটি নিয়ে তাঁরা আমাদের বাড়িঘরে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করে। আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে পিটিয়ে আহত করে।’

অপরদিকে জহিরুল হকের সমর্থক ও ইউপি সদস্য নাজমুল হোসেন বলেন, ‘ইবু ও তাঁর লোকজন হামলা চালিয়ে আমাকেসহ আমার লোকজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে। পরে তাঁদের নিজেদের বাড়িতে নিজেরাই অগ্নিসংযোগ করে ও বাড়িঘর ভাঙচুর করে আমাদের লোকজনের ওপর দায় চাপাচ্ছেন।’

এ বিষয়ে বারদি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জহিরুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বারদি মারকার্জ মসজিদের পাশে একটি সরকারি পুকুর রয়েছে। ওই পুকুরে মাছ চাষ করে মসজিদের আয় ও ব্যয় নির্বাহ করা হয়। সম্প্রতি বর্তমান চেয়ারম্যান লায়ন বাবুলের ছোট ভাই আমিনুল ইসলাম ও তাঁর লোকজন ওই পুকুর লিজ নিতে উঠে পড়ে লাগে। এতে কথাকাটাকাটি হওয়ার একপর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, ‘সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। বর্তমানে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’