মানিকগঞ্জে এক ব্যবসায়ীকে হত্যার দায়ে চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া অপর এক আসামিকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। 

আজ সোমবার দুপুরে মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সাবিনা ইয়াসামিন এই রায় দেন। 

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন সিঙ্গাইর উপজেলার জ্যাইল্যা গ্রামের শাহীনুর রহমান, একই উপজেলার দাসেরহাটি গ্রামের লিটন হোসেন, রিপন হোসেন এবং দক্ষিণ চারিগ্রাম গ্রামের উজ্জ্বল হোসেন। তাঁদের মধ্যে আসামি শাহীনুর ও লিটন রায় দেওয়ার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রিপন ও উজ্জ্বল দীর্ঘদিন ধরে পলাতক রয়েছে। 

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালের ২ অক্টোবর রাতে উপজেলার চারিগ্রাম বাজারে নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে মোটরসাইকেলে করে দাসেরহাটি গ্রামের বাড়ি যাচ্ছিলেন আলম হোসেন (৩৫)। পথে দাসেরহাটি গ্রামের একটির সেতুর কাছে তাঁকে ছুরিকাঘাত করে হত্য করা হয়। খুন হওয়ার পর আলমের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, মোবাইল ফোন এবং নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে যান হত্যাকারীরা। পরের দিন ভোরে সেতুর পাশে আলমের লাশ দেখতে পান স্থানীয় লোকজন। এ ঘটনায় সিঙ্গাইর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) তৎকালীন চেয়ারম্যান মাজহারুল হক বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেন। 

এরপর যশোরের ঝিকরগাছা থেকে আসামি শহিদুল ইসলামের কাছ থেকে নিহত আলমের মোটরসাইকেল উদ্ধার করে পুলিশ। এর পর তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

২০০৬ সালের ৩১ আগস্ট মামলার তদন্তকর্মকর্তা ও সিঙ্গাইর থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আইয়ুব খান পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। সকল সাক্ষীর সাক্ষ্য ও তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়া আজ সোমবার আদালতের বিচারক চার আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। একই মামলার আসামি শহীদুল ইসলামের কাছ থেকে চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার ও তা প্রমাণ হওয়ায় তাঁকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। 

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত সরকারি কৌসুঁলি (এপিপি) মথুর নাথ সরকার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করলেও আসামীপক্ষের আইনজীবী মেজবাউল হক উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানিয়েছেন।