নারায়ণগঞ্জে র‍্যাবের অভিযানে বৃদ্ধের মৃত্যু: নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি এমএসএফের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০২৩, ১৯: ১৪
আপডেট : ১৯ মার্চ ২০২৩, ১৯: ৫৫

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে গত শুক্রবার দিবাগত রাতে র‍্যাবের অভিযানকালে হট্টগোলের মধ্যে গুলিতে আবুল কাসেমের (৬৫) মৃত্যু ও হ‌ুমায়ূন কবির নামের আরেকজন গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)।

গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিশেষ করে র‍্যাবের বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের এমন অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ও নিরপেক্ষ তদন্তের জোর দাবি জানিয়েছেন সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল। 

বিবৃতিতে বলা হয়, গণমাধ্যমসূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার সকালে গজারিয়াপাড়া এলাকায় রোজিনা আক্তার নামের এক পোশাক শ্রমিককে হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মো. সেলিমকে আটকের উদ্দেশ্যে দিবাগত রাত দেড়টার দিকে সাদা পোশাকে র‍্যাব সদস্যরা অভিযান চালায়। ফলে এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়। একপর্যায়ে তাঁদের ডাকাত বলে দাবি করে চ্যালেঞ্জ করলে র‍্যাবের সঙ্গে এলাকাবাসীর তর্ক শুরু হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গুলি ও হতাহতের ঘটনা ঘটে। 

ঘটনার বিষয়ে নিহত আবুল কাসেমের স্ত্রী রমিজা বেগম জানান, শার্ট ও গেঞ্জি পরা একদল লোক গার্মেন্টস শ্রমিক সেলিমকে ধরে নিয়ে যাওয়ার একপর্যায়ে আবুল কাসেম তাদের কাছে গিয়ে কেন সেলিমকে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জানতে চান। তাঁরা তাঁকে মারধর ও গালাগাল করে এবং একজন নিজেকে র‍্যাব সদস্য পরিচয় দিয়ে তাঁর স্বামীর পেটে গুলি করে। গুলিবিদ্ধ আবুল কাসেমকে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে রাত ২টার সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। 

বিবৃতিতে বলা হয়, হ‌ুমায়ূন কবিরের স্বজনেরা জানান, বৃদ্ধ আবুল কাসেমকে গুলি করায় এলাকাবাসী ক্ষেপে ওঠে সাদা পোশাকের লোকদের ঘিরে ফেলে। হ‌ুমায়ূন কবির এগিয়ে যায় ও এ সময় ছয়-সাত রাউন্ড গুলি চলে। এতে তিনি বাঁ পায়ে দুটি ও ডান পায়ে একটি  গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনার পর রাত ২টার পর গাড়িভর্তি পুলিশ এসে গ্রামের কয়েকটা ঘর ভাঙচুর করে এবং গ্রামের অন্তত ২২ জনকে আটক করে নিয়ে যায়। 

ঘটনার বিষয়ে র‍্যাব-১১–এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা দাবি করেন, রোজিনা ইসলাম নামের এক পোশাক শ্রমিককে হত্যা মামলার আসামি সেলিমকে গ্রেপ্তার করে গাড়িতে তোলার সময় সে চিৎকার দিলে লোকজন জড়ো হয়ে দেশি অস্ত্রশস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে র‍্যাবের ওপর হামলা চালায়। এ সময় স্থানীয় লোকজন র‍্যাবকে গুলি করে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। আত্মরক্ষার্থে র‍্যাব পাল্টা গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় হতাহতের কোনো ঘটেনি। তবে সকালে জানতে পারেন একজন মারা গেছেন। সে কার গুলিতে মারা গেছে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। 

নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল জানান, শুক্রবার রাতে হত্যা মামলার আসামি ধরতে গিয়ে সোনারগাঁয়ে লোকজনের সঙ্গে র‍্যাবের সংঘর্ষ হয় এবং একজন নিহত হন। বৃদ্ধ আবুল কাসেম কীভাবে মারা গেছেন, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। 

এমএসএফ মনে করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে এ ধরনের মৃত্যু অনাকাঙ্ক্ষিত ও অগ্রহণযোগ্য। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আসামি কিংবা সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটক কিংবা গ্রেপ্তারের সময় বন্দুকযুদ্ধের মতো ঘটনায় জড়িয়ে পড়ছে এবং যা হতাহতের মতো ঘটনার সৃষ্টি করছে। এমএসএফ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিশেষ করে র‍্যাবের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগ ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে এবং নিরপেক্ষ তদন্ত ও দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত