সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য বাসভবন নির্মাণে ১৯৪৯ সালে সিঅ্যান্ডবি (বর্তমানে গণপূর্ত বিভাগ) আটটি মৌজায় ৪৭২ দশমিক ৬৪ একর জমি অধিগ্রহণ করে। এর মধ্যে ধানমন্ডি মৌজার ১৬ দশমিক ০৬ একর জমির দখলে যেতে পারেনি সরকার। ওই জমির মালিকেরা সেখানে বহুতল আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন করে ভোগ দখলে আছেন। ১৯৬৮ সালে এদের উচ্ছেদ সরকার নোটিশ দিলেও সুপ্রিম কোর্ট থেকে পক্ষে রায় পান তারা। ধানমন্ডি মৌজার ১৬ একর জমি দখলে থাকা মালিকদের কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত দিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়। 

ভূমি মন্ত্রণালয়ে বুধবার এক আন্তমন্ত্রণালয় সভায় ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এই নির্দেশ দেন। এসব ভূমি অবমুক্ত প্রক্রিয়া যেন স্বচ্ছতার সঙ্গে হয় সেদিকে দৃষ্টি রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী। 

ধানমন্ডি মৌজার সিএস ৬৭ নম্বর দাগের অধিগ্রহণকৃত ১৬ দশমিক ৮৭ একর জমির মধ্যে ১৬ দশমিক ০৬ একর জমির দখল পায়নি সরকার। এর মধ্যে ১৪ দশমিক ০০৪৬ একর জমি সিএস, এসএ, আরএস এবং মহানগর জরিপে ব্যক্তির নামে এবং ২ দশমিক ৮৬৫৪ এর জমি সিটি জরিপে গণপূর্ত বিভাগের নামে রেকর্ড হয়। 

জমির মালিকেরা ২০১৮ সালে স্থানীয় সংসদ সদস্যের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেন। প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসনের প্রেক্ষিতে বিষয়টি মন্ত্রিপরিষদে উত্থাপিত হয়। এই জটিলতা নিরসনে মন্ত্রিপরিষদ ভূমি মন্ত্রণালয়কে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেন। গত বছরের ১ মার্চ ভূমি মন্ত্রণালয় চার সদস্যের কমিটি করে দেয়। 

গতকাল আন্তমন্ত্রণালয় সভায় কমিটির প্রতিবেদনসহ ঢাকা জেলা প্রশাসকের বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ ও অন্যান্য সংস্থার মতামত পর্যালোচনা করে ভূমিমন্ত্রী ব্যক্তির নামে রেকর্ডকৃত ও দখলে থাকা জমি সেসবের মালিকদের কাছে অবমুক্ত করার সিদ্ধান্ত দেন। 

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ভূমি মন্ত্রণালয় বলছে, আইনি জটিলতা থাকায় এসব জমির মালিক ও তাদের ওয়ারিশরা ৭০ বছর ধরে জমির খাজনা খারিজ বা হস্তান্তর করতে পারছেন না। এ ছাড়া এই সম্পদের আনুষ্ঠানিক কিংবা অর্থনৈতিকভাবে ফলপ্রসূ ব্যবহারও করতে পারছিলেন না তারা। ভূমি অবমুক্তের ফলে তাদের দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসান হবে।