টাকা না দেওয়ায় বাবাকে কুপিয়ে জখম করল ছেলে

মাগুরা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৩ নভেম্বর ২০২১, ২৩: ১৯

জমি কেনা নিয়ে বিরোধের জেরে বাবাকে ধারালো ছুরি দিয়ে কুপিয়ে জখম করেছে ছেলে। গরু কাটার ধারালো ছুরি দিয়ে ছোট ছেলের এলোপাতাড়ি কোপে বৃদ্ধ বাবা সাইদুল হক মিয়ার (৭৫) বাম হাত সবগুলো আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর জখম অবস্থায় শহীদুল হক মাগুরা সদর হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। 

মঙ্গলবার সকালে মাগুরা সদর উপজেলার হাজরাপুর ইউনিয়নে উথলি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে ছোট ছেলে হানিফ মিয়া (৪৫) পলাতক রয়েছেন। 

আহত সাইদুল হকের বড় ছেলে গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘আমরা দুই ভাই। আমি বড় আর হানিফ ছোট। হানিফের সাথে আব্বার কিছুদিন আগে একটা জমি কেনা নিয়ে বিরোধ হয়। জমিটা আমার মেয়ের জামাই সিঙ্গাপুর থেকে টাকা পাঠিয়ে কিনে দেওয়ার ব্যবস্থা করে। আব্বা এখানে মধ্যস্থতাকারী। কিন্তু শহীদুলের ধারণা এটা বাবারই জমি। তাই সে ভাগ চাইতে আসে এক সপ্তাহ ধরে। না দিলে বাবাকে হত্যার হুমকি দেয়, আমাদেরও বলে যা খুশি তাই করবে। পরে গ্রামের মেম্বার ও চেয়ারম্যানকে জানালে তারা পুলিশের কাছে অভিযোগ দিতে বলেন।’ 

তিনি আরও জানান, অভিযোগ দেওয়া হয় কয়েকবার। এরপর তাঁকে এই বাবদ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সেই জরিমানার টাকা পরে সালিসের পক্ষ থেকে তাঁর বাবাকে ফেরত দেওয়া হয়। ফেরত দেওয়া জরিমানার কথা জানতে পারেন হানিফ। পরে সেই টাকা ফেরত নেওয়ার জন্য সে তাঁর বাবাকে চাপ দেন। মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় ইছাখাদা বাজার এলাকায় জাহাঙ্গীরের দোকানে চা খাওয়া অবস্থায় হানিফ দা নিয়ে উপস্থিত হন। 

বড় ছেলে আরও বলেন, ‘সে বাবাকে বলে, টাকা দিবি নাকি বল, না হলে কুপিয়ে মেরে ফেলব! বাবা বিষয়টা গুরুত্ব দেয় না। তখনই হানিফ চায়ের দোকানের সবার সামনে গরু জবাই করা ছুরি নিয়ে আব্বার ওপরে অতর্কিত এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। ছুরির কোপে বাবার বাম হাতের কবজি কেটে সেখানে পড়ে যায়। এ সময় দোকানে থাকা অন্যান্য লোকজন চিৎকার দিলে হানিফ পালিয়ে যায়। পরে গ্রামবাসীর সহযোগিতায় বাবাকে মাগুরা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি।’ 

হাজরাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবির হোসেন বলেন, ‘হানিফ একটা বেয়াদব ছেলে। সে নেশাগ্রস্ত। এলাকা থেকে তাঁকে নিয়ে অনেকবার সালিস হয়েছে। কিন্তু দুদিন পর সে আবার নানা জনের সঙ্গে ঝামেলা করে। আমি এই ঘটনা শোনার পর এলাকার সবাইকে বলেছি যেখানে তাঁকে পাবে ধরে পুলিশের হাতে যেন বুঝিয়ে দেওয়া হয়।’ 

মাগুরা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক অমর প্রসাদ জানান, বয়স্ক মানুষ বলে তাঁর অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণে অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। রক্ত দেওয়া হয়েছে। আপাতত সদর হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁর বাম হাতের সবগুলো আঙুল শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন পাওয়া গেছে। 

মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর আলম বলেন, ‘গুরুতর জখম শহীদুল হকের চিকিৎসা চলছে। আমরা হাসপাতালে তাঁকে দেখে এসেছি। আপাতত লিখিতভাবে কেউ অভিযোগ না করলেও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত ছোট ছেলে হানিফ মিয়াকে আটকের চেষ্টা চলছে।’ 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত