জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে নিখোঁজের তিন দিন পর বিদেশফেরত যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের নাম মিজানুর রহমান ওরফে আব্দুল্লাহ (২৬)। আজ শুক্রবার সকালে ঝিনাই নদী থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে নিখোঁজ হন তিনি। 

নিহত মিজানুর রহমান সরিষাবাড়ী উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের চর নান্দিনা গ্রামের আমজাদ আলীর একমাত্র ছেলে। 

পুলিশ ও নিহতের পরিবার বলছে, আব্দুল্লাহ ২০১৭ সালে চাকরি করতে সৌদি আরবে যান। সৌদি আরবে থাকাকালে আব্দুল্লাহ বিভিন্ন সময়ে প্রতিবেশী এক ভাবি কল্পনা আক্তারের কাছে ৪-৫ লাখ টাকা জমা রাখেন। ২০২১ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন। দেশে আসার পর সেই টাকা ফেরত চান আব্দুল্লাহ। কল্পনা আক্তার তার টাকা নেননি বলে জানান। এ নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি কল্পনা আক্তারের কাছে আবার টাকা চান আব্দুল্লাহ। এদিন টাকা দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন কল্পনা ও তাঁর পরিবার। আব্দুল্লাহ জানান, টাকা না নিয়ে যাবেন না। এতে কল্পনার পরিবারের লোকজন উত্তেজিত হয়ে আব্দুল্লাহকে মারধর করেন এবং বাড়ি থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে দেন। এর কয়েক দিন পর গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাড়ির পাশের রৌহা বাজারে গিয়ে নিখোঁজ হন আব্দুল্লাহ। আব্দুল্লাহর বাবা আমজাদ আলী তাঁকে খুঁজে না পেয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সরিষাবাড়ী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। আজ শুক্রবার সকালে বাড়ির পাশের ঝিনাই নদীতে আব্দুল্লাহর মরদেহ ভেসে ওঠে। পরে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। 

নিহতের মা মেহেরুন বেগম অভিযোগ করে বলেন, তাঁর ছেলে আব্দুল্লাহ ২০১৭ সালে সৌদি আরবে যান। আব্দুল্লাহ তাঁর পরিবারের কাছে টাকা না পাঠিয়ে কল্পনার কাছে পাঠাতেন। এভাবে তাঁর ৪-৫ লাখ টাকা জমে যায়। এখন তিনি টাকার বিষয়টি অস্বীকার করছেন। টাকা চাইতে গিয়ে ওই পরিবারের কাছে মারধরেরও শিকার হয়েছেন আব্দুল্লাহ। পরে গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাতে তিনি নিখোঁজ হন। 

নিহতের বোন আমেনা বেগম বলেন, ‘আমার ভাইয়ের জমানো টাকা ফেরত না দেওয়ার জন্য তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এই হত্যাকারীর বিচার চাই।’ 

এদিকে কল্পনা আক্তার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আব্দুল্লাহ পুনরায় বিদেশ যাওয়ার জন্য তাঁর কাছে ৫০ হাজার টাকা ধার চান। তিনি টাকা ধার দিতে অস্বীকার করলে আরও কয়েক দফায় আব্দুল্লাহ টাকা ধারের জন্য তাঁর বাড়িতে এসেছিলেন। 

এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর রকিবুল হক বলেন, মিজানুর রহমান আব্দুল্লাহ নিখোঁজ হলে তাঁর বাবা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। শুক্রবার সকালে ওই যুবকের লাশ নদীতে ভেসে উঠলে স্থানীয়রা থানায় খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। এখনো নিহতের পরিবার থেকে কোনো মামলা করা হয়নি।