চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
১ লাখ টাকা জামানত রাখলে মাসে লাভ দেওয়া হবে ১ হাজার ৩৫০ টাকা। যখন ইচ্ছে চাইলেই টাকা ফেরত পাওয়া যাবে। ৭ বছর মেয়াদে টাকা রাখলে পাওয়া যাবে জামানতের দ্বিগুণ টাকা। লোভনীয় এসব প্রতিশ্রুতি দিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জে কয়েকশ গ্রাহকের প্রায় কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে অনিবন্ধিত ও অবৈধ ক্ষুদ্র ঋণদানকারী ভুয়া এনজিওর দুই মালিক।
জামানতের টাকা ফেরতের দাবি জানিয়ে আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলা শহরের শান্তিমোড়স্থ এক গ্রাহকের বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী গ্রাহক ও এনজিওর কর্মীরা। গত ১ মাসেরও বেশি সময় ধরে গ্রাহকেরা ওই ভুয়া এনজিও মালিকদের সন্ধান পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন।
ওই ভুয়া এনজিওটির নাম- সজাগ দারিদ্র্য উন্নয়ন সংস্থা। এর দুজন মালিক হলেন—ইরানী খাতুন (৫০) ও মাসুদ রানা (৩৪)।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সায়েমা খাতুন নামের এক গৃহবধূ। তিনি জানান, তাঁর মা আদিনা বেগম ৪ বছর গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেছেন সৌদি আরবে। দেশে ফিরে সব উপার্জনের টাকা রেখেছিলেন ব্যাংকে। কিন্তু মেয়ে সায়েমা খাতুন মায়ের ৬ লাখ টাকা নিয়ে জামানত রাখেন ‘সজাগ দারিদ্র্য উন্নয়ন সংস্থা’ নামের একটি এনজিওতে। গত ১ বছর ধরে টাকা ফেরত চাইলেও ফেরত না দিয়ে নানারকম টালবাহানা শুরু করে এনজিওর দুই মালিক।
বেবী বেগম নামের এক নারী জানান, প্রবাসী ছেলের উপার্জনের ১৩ লাখ টাকা জমা ছিল আল আরাফা ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড চাঁপাইনবাবগঞ্জ শাখায়। মাসে ১ হাজার ৩৫০ টাকা লাভের আশায় ওই এনজিওর মালিক ইরানী খাতুন ও মাসুদ রানার প্রলোভনে পড়ে তিনি ব্যাংক থেকে টাকা তুলে জমা রাখেন তাঁদের এনজিওতে। গত কয়েক মাস আগে এনজিওর মালিক উধাও হওয়ায় নিজেকে অসহায় বোধ করছেন তিনি।
জেলা শহরের সোনারমোড় এলাকার মৃত নুরুল ইসলামের স্ত্রী বেবী বেগম বেবী বেগম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমার ছেলে এখনো এনজিওতে টাকা রাখার বিষয়টা জানে না। আমি তাঁকে বলতেও পারব না। এনজিওর মালিকদের দুজনই পালিয়েছে। কোথায় যাব, কার যাব কিছুই বুঝতে পারছি না। চোখের পানি ফেলা ছাড়া কোনো উপায় নাই। পরিবারের লোকজনকে বলেছি, আমি মারা যাওয়ার পর ছেলেকে এনজিও-তে টাকা রাখার কথা বলিও। তার আগে জানলে ছেলে হার্ট অ্যাটাকে মারা যাবে।’
সদর উপজেলার চুনারীপাড়া মহল্লার আসলাম আলীর স্ত্রী পলি বেগম বলেন, ‘স্বামীর অনেক কষ্টে জমানো টাকাগুলো এনজিওতে জমা নেওয়ার জন্য বাসায় অনেকবার এসেছিল সজাগ দারিদ্র্য উন্নয়ন সংস্থার মালিক ইরানী খাতুন ও মাসুদ রানা। টাকা নেওয়ার সময় বলেছিল, যখন আপনাদের প্রয়োজন হবে, টাকা পেয়ে যাবেন। এখন গত ৮-৯ মাস থেকে টাকা চাইলেও বিভিন্ন অজুহাতে দেব-দিছি বলে ঘুরাচ্ছে। তাঁরা দুজনই এখন পালিয়েছে। এখন আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি।’
এনজিওটির মাঠকর্মী ফাতেমা বেগম বলেন, ‘আমাকে দিয়ে গ্রাহকদের টাকা আদায় করেছে। তারা পালিয়ে যাওয়ায় গ্রাহকেরা আমার ওপর চাপ দিচ্ছে। আমার নিজেরও ৫০ হাজার টাকা জামানত ও ৮০ হাজার টাকা বেতন বাবদ পাওনা রয়েছে। অথচ তাঁরা দুজনই এসব টাকা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় জমি ও বাড়ি কিনেছে। প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে আমাদের জামানতের টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করবে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন—ভুক্তভোগী গ্রাহক লতা বেগম, আসলাম আলী, ইশরাত জাহানসহ আরও অনেকে।
এ বিষয়ে সজাগ দারিদ্র্য উন্নয়ন সংস্থার দুই মালিক ইরানী খাতুন ও মাসুদ রানার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাদের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। এমনকি বাড়িতে গিয়েও তাদের পাওয়া যায়নি।
এনজিও মালিক ইরানী খাতুনের ছেলে লুৎফর রহমান ইমু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মাসুদ রানা ও আমার মায়ের যৌথ মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সজাগ দারিদ্র্য উন্নয়ন সংস্থা। আমার জানামতে, জনগণের প্রায় ৪০ লাখ টাকা জামানত রয়েছে এবং ৩০ লাখ টাকা ঋণ প্রদান করা আছে। কিন্তু অজানা কারনে মাসখানেক আগে থেকে আমার মা নিখোঁজ রয়েছে। মাকে সন্ধান করার পর মাসুদ রানা ও গ্রাহকদের সাথে কথা বলে এর সমাধান করতে উদ্যোগ নেব।’
তাহলে মা নিখোঁজের ঘটনায় থানায় জিডি করা হয়েছে কি না, এ প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
এ দিকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের নিবন্ধনের বিষয়ে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোসা. উম্মে কুলসুম বলেন, ‘এই এনজিওটি সম্ভবত আমাদের নিবন্ধিত নয়। তবে আমাদের নিবন্ধন নিয়ে কোনো প্রতিষ্ঠান আর্থিক লেনদেন করতে পারবে না। আমরা শুধুমাত্র সমাজসেবামূলক কাজের জন্য নিবন্ধন দিয়ে থাকি। মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথোরিটি বা এমআরএর নিবন্ধন ছাড়া ক্ষুদ্র ঋণের কার্যক্রম পরিচালনা সম্পূর্ণভাবে অবৈধ।’
আরও খবর পড়ুন:
১ লাখ টাকা জামানত রাখলে মাসে লাভ দেওয়া হবে ১ হাজার ৩৫০ টাকা। যখন ইচ্ছে চাইলেই টাকা ফেরত পাওয়া যাবে। ৭ বছর মেয়াদে টাকা রাখলে পাওয়া যাবে জামানতের দ্বিগুণ টাকা। লোভনীয় এসব প্রতিশ্রুতি দিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জে কয়েকশ গ্রাহকের প্রায় কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে অনিবন্ধিত ও অবৈধ ক্ষুদ্র ঋণদানকারী ভুয়া এনজিওর দুই মালিক।
জামানতের টাকা ফেরতের দাবি জানিয়ে আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলা শহরের শান্তিমোড়স্থ এক গ্রাহকের বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী গ্রাহক ও এনজিওর কর্মীরা। গত ১ মাসেরও বেশি সময় ধরে গ্রাহকেরা ওই ভুয়া এনজিও মালিকদের সন্ধান পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন।
ওই ভুয়া এনজিওটির নাম- সজাগ দারিদ্র্য উন্নয়ন সংস্থা। এর দুজন মালিক হলেন—ইরানী খাতুন (৫০) ও মাসুদ রানা (৩৪)।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সায়েমা খাতুন নামের এক গৃহবধূ। তিনি জানান, তাঁর মা আদিনা বেগম ৪ বছর গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেছেন সৌদি আরবে। দেশে ফিরে সব উপার্জনের টাকা রেখেছিলেন ব্যাংকে। কিন্তু মেয়ে সায়েমা খাতুন মায়ের ৬ লাখ টাকা নিয়ে জামানত রাখেন ‘সজাগ দারিদ্র্য উন্নয়ন সংস্থা’ নামের একটি এনজিওতে। গত ১ বছর ধরে টাকা ফেরত চাইলেও ফেরত না দিয়ে নানারকম টালবাহানা শুরু করে এনজিওর দুই মালিক।
বেবী বেগম নামের এক নারী জানান, প্রবাসী ছেলের উপার্জনের ১৩ লাখ টাকা জমা ছিল আল আরাফা ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড চাঁপাইনবাবগঞ্জ শাখায়। মাসে ১ হাজার ৩৫০ টাকা লাভের আশায় ওই এনজিওর মালিক ইরানী খাতুন ও মাসুদ রানার প্রলোভনে পড়ে তিনি ব্যাংক থেকে টাকা তুলে জমা রাখেন তাঁদের এনজিওতে। গত কয়েক মাস আগে এনজিওর মালিক উধাও হওয়ায় নিজেকে অসহায় বোধ করছেন তিনি।
জেলা শহরের সোনারমোড় এলাকার মৃত নুরুল ইসলামের স্ত্রী বেবী বেগম বেবী বেগম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমার ছেলে এখনো এনজিওতে টাকা রাখার বিষয়টা জানে না। আমি তাঁকে বলতেও পারব না। এনজিওর মালিকদের দুজনই পালিয়েছে। কোথায় যাব, কার যাব কিছুই বুঝতে পারছি না। চোখের পানি ফেলা ছাড়া কোনো উপায় নাই। পরিবারের লোকজনকে বলেছি, আমি মারা যাওয়ার পর ছেলেকে এনজিও-তে টাকা রাখার কথা বলিও। তার আগে জানলে ছেলে হার্ট অ্যাটাকে মারা যাবে।’
সদর উপজেলার চুনারীপাড়া মহল্লার আসলাম আলীর স্ত্রী পলি বেগম বলেন, ‘স্বামীর অনেক কষ্টে জমানো টাকাগুলো এনজিওতে জমা নেওয়ার জন্য বাসায় অনেকবার এসেছিল সজাগ দারিদ্র্য উন্নয়ন সংস্থার মালিক ইরানী খাতুন ও মাসুদ রানা। টাকা নেওয়ার সময় বলেছিল, যখন আপনাদের প্রয়োজন হবে, টাকা পেয়ে যাবেন। এখন গত ৮-৯ মাস থেকে টাকা চাইলেও বিভিন্ন অজুহাতে দেব-দিছি বলে ঘুরাচ্ছে। তাঁরা দুজনই এখন পালিয়েছে। এখন আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি।’
এনজিওটির মাঠকর্মী ফাতেমা বেগম বলেন, ‘আমাকে দিয়ে গ্রাহকদের টাকা আদায় করেছে। তারা পালিয়ে যাওয়ায় গ্রাহকেরা আমার ওপর চাপ দিচ্ছে। আমার নিজেরও ৫০ হাজার টাকা জামানত ও ৮০ হাজার টাকা বেতন বাবদ পাওনা রয়েছে। অথচ তাঁরা দুজনই এসব টাকা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় জমি ও বাড়ি কিনেছে। প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে আমাদের জামানতের টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করবে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন—ভুক্তভোগী গ্রাহক লতা বেগম, আসলাম আলী, ইশরাত জাহানসহ আরও অনেকে।
এ বিষয়ে সজাগ দারিদ্র্য উন্নয়ন সংস্থার দুই মালিক ইরানী খাতুন ও মাসুদ রানার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাদের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। এমনকি বাড়িতে গিয়েও তাদের পাওয়া যায়নি।
এনজিও মালিক ইরানী খাতুনের ছেলে লুৎফর রহমান ইমু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মাসুদ রানা ও আমার মায়ের যৌথ মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সজাগ দারিদ্র্য উন্নয়ন সংস্থা। আমার জানামতে, জনগণের প্রায় ৪০ লাখ টাকা জামানত রয়েছে এবং ৩০ লাখ টাকা ঋণ প্রদান করা আছে। কিন্তু অজানা কারনে মাসখানেক আগে থেকে আমার মা নিখোঁজ রয়েছে। মাকে সন্ধান করার পর মাসুদ রানা ও গ্রাহকদের সাথে কথা বলে এর সমাধান করতে উদ্যোগ নেব।’
তাহলে মা নিখোঁজের ঘটনায় থানায় জিডি করা হয়েছে কি না, এ প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
এ দিকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের নিবন্ধনের বিষয়ে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোসা. উম্মে কুলসুম বলেন, ‘এই এনজিওটি সম্ভবত আমাদের নিবন্ধিত নয়। তবে আমাদের নিবন্ধন নিয়ে কোনো প্রতিষ্ঠান আর্থিক লেনদেন করতে পারবে না। আমরা শুধুমাত্র সমাজসেবামূলক কাজের জন্য নিবন্ধন দিয়ে থাকি। মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথোরিটি বা এমআরএর নিবন্ধন ছাড়া ক্ষুদ্র ঋণের কার্যক্রম পরিচালনা সম্পূর্ণভাবে অবৈধ।’
আরও খবর পড়ুন:
গাজীপুরের শ্রীপুরের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) প্রো-ভিসি অধ্যাপক রাকিবুল ইসলাম বলেছেন, ‘দুর্ঘটনা তো আর বলে-কয়ে আসে না। এটা হঠাৎ ঘটে গেছে। এখন আমি মনে করব, কাউকে দোষ দেওয়ার চেয়ে ঘটনা উত্তরণে সবাইকে কাজ করতে হবে।
৮ মিনিট আগেবিরামপুর উপজেলা থেকে বিশনী পাহান (৫৩) নামের এক সাঁওতাল নারীর হাত বাঁধা লাশ উদ্ধার করেছে থানা-পুলিশ। আজ শনিবার সকালে কাটলা ইউনিয়নের দাউদপুর ময়নার মোড়ের অদূরে ধানখেত থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
২৮ মিনিট আগেমাহিদ হাসান শিশির বলেন, ‘পেছনের বাস থেকে হঠাৎ করে ডাক চিৎকার করে বলছে, ‘‘তোমাদের কাছে পানি আছে দ্রুত পানি দাও। আমাদের বাসে আগুন লাগছে। পানি দাও
২৯ মিনিট আগেমাছ বিক্রেতার স্ত্রী তিনি। স্বামীর মাছ বিক্রির লাভের টাকায় টেনেটুনে দিন চলত। সংসারে অভাব লেগেই থাকত। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থা। একটা অভাব মিটলে, নতুন করে হাজির হতো আরেকটি। ধারদেনা করেই চলতে হতো।
৪০ মিনিট আগে