চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার দুর্লভপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জামায়াত নেতার কাছে বিপুল পরিমাণ ভোটে পরাজিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা। এ নিয়ে জেলাজুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে।

বিজয়ী চেয়ারম্যান হলেন শিবগঞ্জ পৌর জামায়াতের আমির গোলাম আজম। তিনি স্বতন্ত্রভাবে আনারস প্রতীকে নির্বাচন করে ৪ হাজার ৭৮০ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান আবু আহমেদ নজমুল কবির মুক্তাকে। নৌকা প্রতীক নিয়ে মুক্তার প্রাপ্ত ভোট ১২ হাজার ৫৯৪। গোলাম আজম ১৭ হাজার ৩৭৪ ভোট পান।  অন্যদিকে এই নির্বাচনে জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে সাবেক চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুর রশিদ সোনুর। তিনি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেন মোটরসাইকেল প্রতীকে। সব মিলিয়ে তাঁর ঝুলিতে পড়ে ১ হাজার ৮০৭ ভোট। 

জামায়াত নেতার কাছে হারের বিষয়ে আবু আহমদ নজমুল কবির মুক্তা বলেন, ‘বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যানের অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে আমি হেরেছি। তিনিও একজন আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্য ছিলেন। এ ছাড়া নিজ দলের মধ্যে বিভেদ তো রয়েছেই।’ 

এদিকে নবনির্বাচিত জামায়াত-সমর্থিত চেয়ারম্যান গোলাম আজম বলেন, ‘এর আগেও ইউপি নির্বাচনে আমাকে ক্ষমতাসীনেরা জোর করে পরাজিত করে। তখনো আমি বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছিলাম। এবারও দলমত-নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ আমাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করেছেন। আমাদের মধ্যে কোনো রাগ-অনুরাগ নেই। সবার সহযোগিতায় একটি মডেল ইউনিয়ন গড়তে চাই।’ 

এদিকে দলীয় প্রার্থীর পরাজয়ের বিষয়ে শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম টুটুল খান বলেন, ‘জামায়াতের ভোটাররা অতি কৌশলী। তারা ঘাপটি মেরে বসে থাকে। দলীয়ভাবে সব নেতা-কর্মী নৌকার পক্ষে কাজ করেছে। কারও কোনো গাফিলতি নাই। জয়-পরাজয় ভাগ্যের ব্যাপার।’ 

এর আগে বুধবার রাতে বেসরকারিভাবে গোলাম আজমকে চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. তাসিনুর রহমান। 

দুই দফা স্থগিত হওয়ার পর বুধবার ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। দুর্লভপুর ইউপি নির্বাচনে ভোটার ৩৯ হাজার ৯৮৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২০ হাজার ৮০১ জন এবং নারী ভোটার ১৯ হাজার ১৮৩ জন। মোট ১৭টি ভোটকেন্দ্রের ১৫০টি কক্ষে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।