৪০ থেকে ৭০ হাজার টাকা চুক্তিতে ‘প্রক্সি’ দিতে গিয়েছিলেন তাঁরা

রাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩১ মে ২০২৩, ১৬: ০৯
আপডেট : ৩১ মে ২০২৩, ১৬: ১৯

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে ১৬ জনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাদের মধ্যে ছাত্রলীগ নেতা, সরকারি কর্মকর্তা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় ৪০ থেকে ৭০ হাজার টাকায় প্রক্সি দিতে গিয়েছিলেন তাঁরা। 
 
আজ বুধবার সকালে নগরীর মতিহার ও চন্দ্রিমা থানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে মামলাগুলো দায়ের করেন রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালাম। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বিজয় কুমার বসাক এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

মামলার আসামিরা হলেন—হাসিবুল ইসলাম শান্ত, এনামুল হক, তানভীর আহমেদ, কাওসার আলী বিদ্যুৎ, মো. মাইনুল ইসলাম, মো. আব্দুর রাকিব, মো. স্বপন হোসেন, তানভীর আহমেদ, মো. ইসরাফিল হোসাইন, জাহিদ আল হাসান সিয়াম, রূপম সরকার ও শেখ আবু হানিফ। বাকি চারজনের নাম পরিচয় এখনো জানা যায়নি। 

তাদের মধ্যে হাসিবুল ইসলাম শান্ত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ও নাটোর জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। মো. স্বপন হোসেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র এবং এনামুল হক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। অপরদিকে শেখ আবু হানিফ বরিশালের গৌরনদী উপজেলা সহকারী সমাজসেবা কর্মকর্তা।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মো. ইসরাফিল হোসাইন ৭০ হাজার টাকা চুক্তিতে মূল পরীক্ষার্থী জাহিদ আল হাসান সিয়ামের হয়ে প্রক্সি দেন। তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের ৪২৪ নম্বর কক্ষ থেকে আটক করা হয়। 

এনামুল হককে ৫০ হাজার টাকায় চুক্তি করেন হাসিবুল ইসলাম শান্ত। তিনি মূল পরীক্ষার্থী তানভীর আহমেদের হয়ে প্রক্সি দেন। তাঁকে ড. এম ওয়াজেদ মিয়া একাডেমিক ভবনের ৪৩৮ নম্বর কক্ষ থেকে আটক করা হয়। 

মো. স্বপন হোসেন কৃষি অনুষদ ভবনের ১৩৫ নম্বর রুমে তানভীর আহমেদের হয়ে পরীক্ষায় অংশ নেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। তাঁকে ৫০ হাজার টাকায় চুক্তি করেন শান্ত। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের ১৩৯ নম্বর কক্ষ থেকে আটক হন শেখ আবু হানিফ। তিনি বরিশালের গৌরনদী উপজেলা সহকারী সমাজ সেবা অফিসার। তিনি মূল পরীক্ষার্থী রূপম সরকারের হয়ে পরীক্ষায় অংশ নেন। 

আব্দুর রাকিবকে ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রবেশপত্রের ছবি পরিবর্তনের মাধ্যমে অজ্ঞাতনামা পরীক্ষার্থীর হয়ে প্রক্সি দেওয়ার জন্য চুক্তি করেন হাসিবুল ইসলাম শান্ত। তবে গতকাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিজেই মূল পরীক্ষার্থী বলে দাবি করেন। 

কাওসার আলী বিদ্যুৎ ৬০ হাজার টাকা চুক্তিতে মূল পরীক্ষার্থী মাইনুল ইসলামের হয়ে পরীক্ষায় অংশ নেন। তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া একাডেমিক ভবনের ২৩৪ নম্বর কক্ষ থেকে আটক করা হয়। 

ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তারের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘আমরা কিছুক্ষণ আগে বিষয়টি জানলাম। যদি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকে তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে মামলা দায়ের করেছি। এখন বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’ 

সার্বিক বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বিজয় কুমার বসাক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গতকাল (মঙ্গলবার) যাদেরকে আটক করেছি তাদেরকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তাদের দেওয়া তথ্যমতে একজনকে গ্রেপ্তার করেছি। তবে তিনি মূল হোতা নন। মূল হোতা এখনো আমাদের ধরা ছোঁয়ার বাইরে আছে। আশা করছি আমরা অতি শিগগিরই তাঁকেও গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হব। একই সঙ্গে গতবারের জালিয়াতির সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরকেও গ্রেপ্তার করব।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত