বকেয়া পরিশোধ করে এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে কেন্দ্রে বসার ব্যবস্থা করে দিলেন ডিসি

নাটোর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৩ ডিসেম্বর ২০২১, ০২: ১৪
আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০২১, ০২: ২৯

কলেজের বকেয়া টাকা এবং ফরম পূরণের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় নাটোর সদরের চন্দ্রকলা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কলেজের এক এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে প্রবেশপত্র দেয়নি কলেজ কর্তৃপক্ষ। ওই পরীক্ষার্থীর নাম জরিপ আলী। তিনি নাটোর সদর উপজেলার তেবাড়িয়া ইউনিয়নের বাঙ্গাবাড়িয়া গ্রামের মৃত সামসুদ্দিন মণ্ডলের ছেলে। গতকাল বৃহস্পতিবার নাটোর মহিলা কলেজ কেন্দ্রে তাঁর হিসাব বিজ্ঞান পরীক্ষা ছিল। 

বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পেরে জেলা প্রশাসক (ডিসি) শামীম আহমেদ ওই শিক্ষার্থীর পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। 

পরীক্ষার্থী জরিপ আলীর মা শরিফ বেওয়া বলেন, ‘২০১৮ সালে আমার স্বামী মারা যায়। এর পর থেকে জরিপের উপার্জনেই সংসার চলছে। পড়াশোনার পাশাপাশি জরিপ কখনো দিনমজুর আবার কখনো রাজমিস্ত্রির সহযোগী হিসেবে কাজ করে। অভাবের কারণে কলেজের টাকা দিতে পারেনি বলে কলেজ থেকে তাঁকে পরীক্ষার প্রবেশপত্র দেওয়া হয়নি। ডিসি সাহেব আমার ছেলের বকেয়া পাওনাদি পরিশোধ করে পরীক্ষার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।’ 

পরীক্ষার্থী জরিপ আলী জানান, সংসার চালাতে গিয়ে তিনি কলেজের সেশন ফিসহ পরীক্ষার ফি'র পুরো টাকা দিতে পারেননি। গত শনিবার তিনি কলেজে গিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রবেশপত্র চান কিন্তু কলেজ থেকে প্রবেশপত্র দেওয়া হয়নি। নিরুপায় হয়ে তিনি ফিরে আসেন। 

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় নাটোর মহিলা কলেজ কেন্দ্রে প্রথম পরীক্ষা (হিসাব বিজ্ঞান) শুরু হয়। তিনি কেন্দ্রেও আসেন কিন্তু প্রবেশপত্র না থাকায় পরীক্ষা কক্ষে ঢুকতে পারেননি। মহিলা কলেজের একজন স্টাফ বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান। সাংবাদিকদের কাছে শুনে পরীক্ষা শুরু হওয়ার এক ঘণ্টা ২০ মিনিট পর ডিসির সহযোগিতায় পরীক্ষায় অংশ নেন জরিপ। ৩.০০ টা থেকে ৪.৩০ মিনিট পর্যন্ত তাঁর পরীক্ষা নেওয়া হয়।

কেন্দ্রসচিব রেজাউল করিম বলেন, ‘চন্দ্রকলা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কলেজের শিক্ষার্থী জরিপ আলীর পরীক্ষা দিতে না পারার বিষয়টি জানতে পেরে ডিসি শামীম আহমেদ তাৎক্ষণিক ওই কেন্দ্রে চলে আসেন। তাঁর উপস্থিতি এবং নির্দেশনায় জরিপ আলীর পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।’ 

জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ জানান, তিনি জরিপ আলীর সময়মতো পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারার খবর শুনে তাৎক্ষণিক পরীক্ষা কেন্দ্রে ছুটে যান। তিনি ব্যক্তিগতভাবে জরিপ আলীর কলেজের পাওনাদি পরিশোধ করে তার পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। টাকার জন্য প্রবেশপত্র না দিয়ে পরীক্ষা দিতে না দেওয়া একজন শিক্ষার্থীর জীবন নষ্ট করার শামিল। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

তবে ঘটনাস্থলে জেলা প্রশাসক ছুটে এলেও আসেননি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কলেজের অধ্যক্ষ মৌসুমি পারভীন। 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক গোবিন্দ কুমার দত্ত জানান, জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ জরিপ আলীর বকেয়া টাকা পরিশোধ করে দিয়েছেন। 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কলেজের অধ্যক্ষ মৌসুমি পারভিন জানান, প্রবেশপত্র না পাওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে আমাকে কিছুই জানায়নি জরিপ আলী বা তার পরিবার। ডিসি কেন্দ্রে গেলেও তিনি কেন গেলেন না এমন প্রশ্নের জবাবে মৌসুমি পারভীন জানান, পারিবারিক ব্যস্ততায় তিনি যেতে পারেননি।       

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত