স্কুলের মাঠে বর্জ্যের স্তূপ, স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা

লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২১, ০৯: ১৬
আপডেট : ০৪ অক্টোবর ২০২১, ১০: ০০

নাটোরের লালপুরে কচুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কচুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করছে। ভাঙ্গারি বর্জ্যের গন্ধে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীদের শ্বাসরোগে আক্রান্তের আশঙ্কা করছেন শিক্ষক ও অভিভাবকেরা। অভিযোগ উঠেছে এক ব্যবসায়ী বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে ভাঙ্গারি সামগ্রীর স্তূপ করে রেখেছেন। এ বিষয়ে লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করেছেন কচুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। 

অভিযোগে বলা হয়, বিদ্যালয়টি কচুয়া বাজার সংলগ্ন। প্রধান সড়ক হতে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার জন্য বিদ্যালয়ের নিজস্ব রাস্তা রয়েছে। রাস্তার উত্তর পার্শ্বে বিদ্যালয়ের নিজস্ব জমি। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার উত্তর পার্শ্বে জনৈক মো. শফিকুল ইসলাম ভাঙারি ব্যবসায়ী টিনের বেড়া দিয়ে ভাঙারি জিনিসপত্র রাখেন। বাকি অংশে বস্তা ভর্তি বোতল সামগ্রী রাখেন। যা ছোট ছোট ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। ইতিপূর্বে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেও অজ্ঞাত কারণে কোনো ব্যবস্থা নেননি। সারি সারি বস্তা রাখার কারণে প্রধান সড়ক হতে বিদ্যালয়ের পরিবেশ নোংরা দেখায়। তা ছাড়াও বস্তা ভর্তি বোতলের দুর্গন্ধে বিদ্যালয়ে ক্লাস পরিচালনা করা অসম্ভব হয়ে উঠে। শিশু শিক্ষার্থীরা অসুস্থ বোধ করে। পরিদর্শন পূর্বক বিদ্যালয়ের জমি দখলমুক্ত করার ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়। 

সোমবার সরেজমিন দেখা যায়, কচুয়া প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রবেশের রাস্তার দুই ধারে ভাঙ্গারির স্তূপ দখল করে আছে। রাস্তা ছাড়াও বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ দখল করে আবর্জনা রাখা হয়েছে। বস্তাবন্দী কাচের বোতল আর পরিবেশ দূষণকারী প্লাস্টিকসহ বিভিন্ন ভাঙ্গারি দ্রব্য থেকে বিষাক্ত দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। শিক্ষার্থীরা নাক-মুখ চেপে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করছে। 

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সন্ধ্যা আক্তার জানায়, দুর্গন্ধের কারণে নাক-মুখ চেপে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয়।

পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাফিউর রহমান জানায়, তীব্র গন্ধে ক্লাস করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী আসিফ ইকবাল জানায়, বিদ্যালয়ে ঢোকার সময় পচা গন্ধে বমি চলে আসে। ফেরার সময় সে গন্ধ নাকে করেই বাড়ি ফিরতে হয়। 

বিদ্যালয়ের মাঠে স্তূপ করে রাখা হয়েছে বর্জ্যঅষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী সিরাজুম মনিরা বলে, বিষের ঝাঁজালো গন্ধে শ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট হয়। আশপাশের পানিতে হাত-পায়ে ঘা দেখা দেয়। 

অভিভাবক কামাল হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ের প্রবেশ পথে দুর্গন্ধময় ভাঙ্গারি দোকান কাম্য নয়। এতে শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তাঁর সন্তান শ্বাস কষ্টে ভুগছে। 

কচুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠ ও রাস্তা দখল করে পরিবেশ দূষণকারী মালামাল রাখতে নিষেধ করা হলেও ওই ব্যবসায়ী শুনেননি। বিষাক্ত বায়ু দূষণে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। 

অভিযুক্ত মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় রাস্তা ও খেলার মাঠে ভাঙ্গারি মালামাল রেখেছেন। দ্রুত এগুলো সরিয়ে নেবেন। 

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আলেয়া ফেরদৌসী বলেন, প্রধান শিক্ষকের অভিযোগপত্র ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর পাঠানো হয়েছে। 

লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এ কে এম সাহাব উদ্দীন বলেন, বিদ্যালয়ের পাশে এ ধরনের পরিবেশ দূষণ শিশু শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়িয়ে দেবে। দূষিত বায়ু শ্বাস-প্রশ্বাসে ফুসফুসকে ক্ষতিগ্রস্ত ও হৃদ্রোগ দেখা দিতে পারে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মী আক্তার অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সরেজমিন তদন্ত করে অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত