বিশ্বের অন্যতম টেক জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান গুগল এবং মাইক্রোসফটে চাকরি পেয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সাবেক দুই শিক্ষার্থী। তাঁদের মধ্যে গুগলে চাকরি পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০০৭-০৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. মাকসুদ হোসাইন। অন্যদিকে মাইক্রোসফটে চাকরি পেয়েছেন একই বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী কাজী নাঈম। 

আজ বুধবার দুপুরে সাবেক এই দুই শিক্ষার্থী বিষয়টি নিশ্চিত করেন। 

মাকসুদ হোসাইন গুগলের আয়ারল্যান্ড অফিসে আগামী অক্টোবরে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার (সাইট রিলাইএভিলিটি) হিসেবে যোগদান করবেন। অন্যদিকে কাজী নাঈম মাইক্রোসফটের লন্ডন অফিসে সিনিয়র সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে আগামী জুলাই মাসে যোগদান করবেন বলে জানান তাঁরা। 

মাকসুদ হোসাইন বলেন, ‘বিশ্বের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হতে পারছি বলে ভালো লাগছে। এতটুকু আসতে পেরে আমি অনেক খুশি। অনেকবার ইন্টারভিউ দিয়েছি। কিন্তু কৃতকার্য হতে পারিনি। অবশেষ আমি তাদের দেওয়া ইন্টারভিউ গুলোতে পাস করি এবং আমাকে নিয়োগ দেওয়া হয়।’ 

যারা এ রকম টেক জায়ান্টগুলোতে চাকরি করতে ইচ্ছুক তাঁদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বেশি করে অনুশীলন করতে হবে। কঠোর অধ্যবসায় ছাড়া এগিয়ে যাওয়া সম্ভব না। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্রদের বেশি করে কোডিং শিখতে হবে। এটার সঙ্গে কাজ করে নতুন ধারণার উদ্ভব ঘটাতে হবে।’ 

কাজী নাঈম বলেন, ‘মাইক্রোসফট বড় কোম্পানি। এখানে কাজ করা রীতিমতো ভাগ্যের ব্যাপার। আমি অনেক খুশি। সেখানে যোগদান করে অনেক দক্ষ ও বিচিত্র মানুষের সঙ্গে দেখা হবে, কথা হবে। নতুন অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারব। এক সিনিয়র ভাই আমাকে মাইক্রোসফটে ইন্টারভিউ দিতে বলেন। আমি গত ফেব্রুয়ারিতে প্রথম ইন্টারভিউ দেই। মোট চারটি ইন্টারভিউ নেওয়া হয় আমার। সবগুলোই ছিল টেকনিক্যাল পার্ট।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘সবশেষে ইন্টারভিউ সিস্টেম ডিজাইনের ওপরে নেওয়া হয়। পরে মাইক্রোসফটের অফিস থেকে আমাকে জানানো হয়, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নিয়োগ দেবেন তারা। আমিও চাকরি করতে ইচ্ছুক বলে তাদেরকে জানাই। অফিস থেকে আমাকে নিয়োগপত্র পাঠানো হয়। কোনো সমস্যা না হলে আগামী মাসে জয়েন করব।’ 

মাইক্রোসফটের এ পদে যারা চাকরি প্রত্যাশীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘কম্পিউটার সায়েন্স ও সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্রদের প্রোগ্রামিংয়ের জন্য প্রচুর কোড লিখতে হয়। আমি বলব কোডের সঙ্গে তাত্ত্বিক জ্ঞানও শিখে রাখতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় যে, তাত্ত্বিক জ্ঞান না থাকার কারণে কোডগুলোকে অপটিমাইজেশন করা যায় না। আর বিষয়গুলো নিয়ে নিয়মিত চর্চা করতে হবে।’

এ বিষয়ে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহম্মদ রেজা সেলিম বলেন, ‘প্রোগ্রামিংয়ে আমাদের শিক্ষার্থীরা অনেক ভালো করছে। এর আগেও আমাদের বেশ কিছু শিক্ষার্থী গুগল এবং মাইক্রোসফটে চাকরি পেয়েছে। প্রোগ্রামিং সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকার ফলে তাঁরা এই সাফল্য অর্জন করতে পেরেছে বলে মনে করি। ভবিষ্যতেও আমাদের বিভাগ থেকে শিক্ষার্থীরা এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে।’