লক্ষ্মীপুরে বড় ভাই আবদুল হান্নানকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে ছোট ভাই আবদুল মান্নানকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় প্রদান করেন। একই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন বিচারক। 

আবদুল হান্নান ও আবদুল মান্নান সদর উপজেলার পার্বতীনগর ইউনিয়নের চর পার্বতীনগর গ্রামের আনু মুন্সিবাড়ির বাসিন্দা আবুল কালামের ছেলে। রায় ঘোষণাকালে আসামি আবদুল মান্নান আদালতে উপস্থিত ছিলেন। 

মামলার এজাহার ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, হান্নানকে বিয়ে দেওয়ার পর থেকে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। বড় ভাই হান্নান তাঁর স্ত্রী ও মান্নানকে নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেন। পরে ২০১৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি রাত পৌনে ১২টার দিকে হান্নান তাঁর ছোট ভাই মান্নানকে বসতঘরের জানালার পাশে দেখতে পান। এরই জেরে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া শুরু করেন হান্নান। একপর্যায়ে তিনি স্ত্রীকে মারধর করেন। এ সময় জানালার পাশে থাকা মান্নান একটি দা নিয়ে হান্নানের ঘরে ঢোকেন। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে মান্নান তাঁর বড় ভাই হান্নানের ঘাড়ে দা দিয়ে কোপ দেন। দায়ের কোপে হান্নানের ঘাড়ের বেশির ভাগ অংশ আলাদা হয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। পরদিন সকালে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় ২০ ফেব্রুয়ারি তাঁদের বাবা আবুল কালাম বাদী হয়ে ছোট ছেলে মান্নানকে আসামি করে সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরদিন পুলিশ মান্নানকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন তিনি। 

পরে ২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওই সময়ের সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রানা দাস আসামি মান্নানকে অভিযুক্ত করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে প্রায় সাড়ে চার বছর পর আজ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। 

জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘২০১৯ সালের ১৯ ফ্রেব্রুয়ারি রাত পৌনে ১২টার দিকে নিজ বসতঘরে ছোট ভাই আবদুল মান্নান দা দিয়ে কোপ দিয়ে বড় ভাই আবদুল হান্নানকে হত্যা করেন। এ ঘটনায় আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আবদুল মান্নানকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। একই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন বিচারক।