নারায়ণগঞ্জ শহরে মা এবং অন্তঃসত্ত্বা মেয়ের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় রক্তমাখা ছুরিসহ এক যুবককে এলাকাবাসীর সহায়তায় আটক করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার বিকেলে শহরের ডালপট্টি এলাকার একটি ৬ তলা ভবনের ফ্ল্যাট থেকে দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, আটক যুবক জুবায়ের (৩২) ওই ঘরে প্রবেশ করে দুজনকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে। নিহতেরা হলেন, রুমা চক্রবর্তী (৪৬) এবং ঋতু চক্রবর্তী (২২)।

জুবায়ের (৩২) নারায়ণগঞ্জ শহরের পাইকপাড়া এলাকার আলাউদ্দিন মিয়ার ছেলে। তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য রাম প্রসাদ (৫৫) বলেন, ‘আমি ঘটনার সময় দোকানে কাজ করছিলাম। দুপুরে আমার বাড়িওয়ালার ভাতিজা দৌড়ে এসে বলল, “আংকেল বাসায় চলেন বাসায় ঝামেলা হইসে।” আমি সঙ্গে সঙ্গে ফোন দিলাম আমার স্ত্রীকে (রুমা)। আমার ফোন তখন ধরছে ওই ছেলেটা (জোবায়েদ)। সে বলে, “টাকা পয়সা, স্বর্ণ-গয়না কই আছে বল? নাহলে ওদের মাইরা ফেলব।” পরে আমি বললাম, “আর কি চাও?” ততক্ষণে আমার বউ আর মেয়েকে মাইরা ফেলছে ওই ছেলেটা।’

রাম প্রসাদ আরও বলেন, ‘যখন এই ছেলেটা আইসা হামলা চালাইসে তখন আমার ছেলের স্ত্রী শিলা ঘরের ভেতর ছিল। ছেলেটা যখন দা নিয়ে কোপ দিতে আসছিল তখন আমার ছেলের স্ত্রী দা ধরে কেড়ে নেয় এবং দৌড়ে নিচে এসে চিৎকার করে। পরেই এলাকাবাসী এগিয়ে এসে ছেলেটাকে আটক করে। এই ছেলেটাকে আমরা আগে কখনো দেখিনি। তাঁর সঙ্গে আমাদের পরিবারেরও কারও সম্পর্ক নেই।’

ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, ‘আমরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছি। তিনি আমাদের জিজ্ঞাসাবাদে নানান সময় নানান কথা বলছেন। তবে এই বাসায় তিনি প্রথম এসেছেন বলে জানিয়েছেন। আমরা তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করব এবং প্রয়োজনে রিমান্ডে এনে মূল রহস্য জানার চেষ্টা করব। সে নিজেই জড়িত, নাকি অন্য কেউ সঙ্গে ছিল তা জানার চেষ্টা চলছে। সে বাদেও যদি কেউ এখানে থাকে, তাহলে তাকেও গ্রেপ্তার করা হবে।’ 

ঘটনাস্থলে যাওয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আমির খসরু বলেন, ‘মা ও মেয়ের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে জেলা পুলিশ, সিআইডি কাজ করছে। ঘটনার মোটিভ বা কারণ এখনই বলা যাচ্ছে না। তদন্তের স্বার্থে বিষয়গুলো পরে প্রকাশ করা হবে।’