পারিবারিক কলহের জেরে কুষ্টিয়ায় ব্যাংক কর্মকর্তার বিশেষ অঙ্গ কেটে পালানোর অভিযোগ উঠেছে তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে। গুরুতর আহত অবস্থায় আরিফুলকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার অবস্থা সংকটাপন্ন। আরিফুল ইসলাম (৪০) নামের ওই ব্যাংক কর্মকর্তা কুষ্টিয়া পৌরসভার চৌড়হাস এলাকার বাসিন্দা। তাঁর স্ত্রীর নাম খালেদা পারভীন (৩২)। 

গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কুষ্টিয়া পৌরসভার চৌড়হাস এলাকার তাঁর নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী আরিফুল ইসলাম সোনালী ব্যাংক কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হরিনারায়ণপুর শাখার প্রিন্সিপাল কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। 

অভিযুক্ত খালেদা পারভীন যশোর জেলার চুরামনকাঠি এলাকার কাজী হাফিজুল্লাহর মেয়ে। আর আহত আরিফুল ইসলাম কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কাচারি খাদিমপুর এলাকার মৃত আজিজুল হকের ছেলে। আরিফুল সোনালী ব্যাংকে চাকরির সুবিধার্থে চৌড়হাসে বাড়ি করে সেখানে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। ১৪-১৫ বছর আগে তাঁদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। 

আরিফুলের বড় ছেলে নাজমুস সাকিব বলেন, ‘রাত ৮টার দিকে মা আমাকে নামাজ পড়ার কথা বলে মসজিদে পাঠান। এবং নামাজ শেষে ফেরার পথে দোকান থেকে কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনে আনতে বলেন। সরকারি ছুটি থাকায় ওই সময় বাসায় কোনো ভাড়াটিয়া ছিলেন না। বাড়ি ফাঁকা ছিল। নামাজ থেকে ফিরে বাড়িতে ঢুকেই বাবার চিৎকার শুনতে পাই। দ্রুত তাঁর রুমে গিয়ে দেখি বাবা চিৎকার দিয়ে ডাকাডাকি করছে এবং হাঁটতে গিয়ে নিচে পড়ে যাচ্ছেন। আমাকে দেখে দ্রুত অটোরিকশা ডেকে আনতে বলেন। আমি দ্রুতই একটা অটোরিকশা ডেকে বাবাকে নিয়ে হাসপাতালে আসি। তবে এ সময় বাড়িতে মাকে দেখতে পাইনি। তাঁকে ডাক দিলেও কোনো সাড়া দেননি।’ 

পারিবারিক কলহ ছিল কি না, এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাকিব বলেন, ‘এ ঘটনার আগে কোনো ঝগড়াঝাঁটি হয়নি। তবে পূর্ব থেকে মা বাবাকে সন্দেহ করতেন এবং এসব বিষয় নিয়ে মাঝেমধ্যে মা-বাবার মধ্যে অশান্তি হতো।’ 

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম বলেন, আরিফুলের বিশেষ অঙ্গের ৮০ ভাগ কেটে পড়ে গেছে, কেটে যাওয়া অংশ খুঁজে না পাওয়ায় বিশেষ অঙ্গ আর আগের মতো স্বাভাবিক করা সম্ভব হবে না। তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে তাঁর শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন খান বলেন, এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি মামলা হয়েছে। আরিফুল ইসলামের স্ত্রী অভিযুক্ত খালেদা পারভীনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।