কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ছেলে আব্দুল জলিলের (২৬) হাতে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন তাঁর বাবা পয়ার উদ্দিন (৫৫)। আজ সোমবার দুপুরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

ছেলের আঘাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হয়েছেন মা জুলেখা খাতুনও (৪৫)। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের খিতাবখা সলিমবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর থেকে ছেলে আব্দুল জলিল পলাতক রয়েছে।

রাজারহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু সরকার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মামুন উর রশীদ জানান, অভিযুক্ত আব্দুল জলিল একাধিক বিয়ে করেছেন। তাঁর প্রথমদিকের দুই স্ত্রী তাঁকে তালাক দিয়ে চলে যান। গত ৩ মাস পূর্বে তৃতীয় স্ত্রীও নির্যাতন ও যৌতুক মামলা দিয়ে তাঁকে তালাক দেন। সেই মামলায় আসামি হয়ে জামিন নিয়েছেন পয়ার উদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী জুলেখা খাতুন। ছেলে আব্দুল জলিলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। এ নিয়ে তৃতীয় স্ত্রীর সঙ্গে রফা দফার চেষ্টা করছিল আব্দুল জলিল। এ জন্য বাবা পয়ার উদ্দিনকে টাকার জন্য চাপ দিচ্ছিল তিনি।

এ নিয়ে গতকাল রোববার সন্ধ্যার দিকে বাবা-ছেলের বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে পয়ার উদ্দিনকে আঘাত করে জলিল। উপর্যুপরি আঘাতে পয়ার উদ্দিন রক্তাক্ত অবস্থায় সেখানেই লুটিয়ে পড়েন। এ ঘটনায় স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে স্ত্রী জুলেখা খাতুনও আঘাতপ্রাপ্ত হন। ঘটনার পরই পালিয়ে যায় জলিল। পরে রাত ৯টার দিকে গুরুতর আহত পয়ার উদ্দিনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। মাথায় ও বাম হাতে আঘাতপ্রাপ্ত জুলেখা খাতুনকেও চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে রাতেই বাড়িতে ফিরে রাজারহাট থানায় ছেলের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে এনে এজাহার দায়ের করেন জুলেখা খাতুন। একদিন পর আজ সোমবার দুপুরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুরে পয়ার উদ্দিন মারা যান।

ওসি রাজু সরকার জানান, রাতেই নিহতের স্ত্রী জুলেখা খাতুন বাদী হয়ে রাজারহাট থানায় মামলা করেছেন। নিহতের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে দাফনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত জলিল পলাতক থাকলেও তাঁকে গ্রেপ্তারে জোর চেষ্টা চলছে।