ফেসবুকে ভুয়া আইডি খুলে প্রতারণার মাধ্যমে এক তরুণীর সাড়ে সাত লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে রাজশাহীতে এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

অভিযুক্ত যুবকের নাম এম ওয়াদুদ জিয়া জুয়েল (৩০)। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবস্থাপনা বিভাগে বিবিএ এবং এমবিএ করা। তাঁর বাড়ি দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার বাঘাডুবি ভবানীপুর গ্রামে।

ভুক্তভোগী ওই তরুণীর বাড়ি রাজশাহী নগরের কাটাখালী থানা এলাকায়। তাঁর পরিবারের অভিযোগ পেয়ে গতকাল বুধবার সকালে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) একটি দল নগরীর বোয়ালিয়া থানার মকবুল হালদার মোড় এলাকা থেকে জুয়েলকে গ্রেপ্তার করে।

এ নিয়ে গতকাল নিজের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন আরএমপি কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক। তিনি জানান, প্রতারক জুয়েল একাই বিভিন্ন চরিত্রে ওই তরুণীর সঙ্গে ফেসবুকে অভিনয় করে হাতিয়ে নিয়েছেন সাড়ে সাত লাখ টাকা। তিনি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, তাঁর আরও নয়টি ভুয়া ফেসবুক আইডি আছে। ওই তরুণীর সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া টাকা দিয়ে গ্রামে জমি কিনেছেন, গরুর খামার করেছেন। এ ব্যাপারে তাঁর বিরুদ্ধে রাজশাহীর কাটাখালী থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ২০১৯ সালে আমিনুল ইসলাম নামের একটি ভুয়া ফেসবুক আইডি দিয়ে ওই তরুণীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন জুয়েল। মেসেঞ্জারে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠলেও কখনো তাঁদের দেখা হয়নি। জুয়েল আরেকটি ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে নিজেকে আমিনুলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু পরিচয় দিয়ে বিয়ের প্রস্তাবের কথা বলে ওই তরুণীর বাসায় যান। তখন ল্যাপটপ হারানোর অজুহাত দেখিয়ে তরুণীর মায়ের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকার চেক নেন। এরপর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত আমিনুলের চিকিৎসার কথা বলে আরেক বন্ধু পরিচয়ে হাতিয়ে নেন তিন লাখ টাকা। টাকা দেওয়ার পর জানানো হয় আমিনুল মারা গেছেন। সবশেষ আমিনুলের বোন পরিচয়ে আরেকটি আইডি থেকে চাকরির আশ্বাসে চাওয়া হয় আরও সাত লাখ টাকা। বলা হয়, আমিনুলের চিকিৎসাবাবদ দেওয়া তিন লাখ দিতে হবে না। চার লাখ টাকা দিলেই চাকরিটা হবে। ওই তরুণীর পরিবার আবারও ফাঁদে পা দেন। সরল বিশ্বাসে দিয়ে দেন আরও চার লাখ টাকা।