তানিম আহমেদ, ঢাকা
সংবিধান অনুযায়ী চলতি বছরের শেষে কিংবা আগামী বছরের শুরুতে হবে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন। সেই নির্বাচন সামনে রাজনৈতিক দলগুলো তৎপরতা বাড়িয়েছে। বিদেশি কূটনীতিকেরাও সক্রিয়। বিএনপি অনেক আগেই ঘোষণা দিয়েছে, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া নির্বাচনে যাবে না এবং হতেও দেবে না। এমন পরিস্থিতিতে ক্ষমতাসীন দলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হলো নিজেদের ঐক্য বজায় রেখে বিরোধীদের আন্দোলন মোকাবিলা করে সব দলকে নির্বাচনমুখী করা। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগ দলীয় শক্তিতে নির্বাচনী বৈতরণি পার হতে তৃণমূল পর্যায়ে সাংগঠনিকে ঐক্য সুদৃঢ় করতে কাজ শুরু করেছে।
দলটির বেশ কয়েকজন নেতা জানান, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন চ্যালেঞ্জের হবে, এমন আভাস বিভিন্ন সভায় দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলনের সময় বিদেশি কূটনীতিকেরা তেমন একটা সরব ছিলেন না। কিন্তু দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন ঘিরে তাদের তৎপরতা বাড়ায় ক্ষমতাসীনদের মধ্যে একধরনের চাপ সৃষ্টি হলেও নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কোনো মন্তব্য না করায় অনেকটা স্বস্তি পাচ্ছে আওয়ামী লীগ। এমন পরিস্থিতিতে দলটি সাংগঠনিক শক্তির ওপর ভর করে আসন্ন নির্বাচনী বৈতরণি পাড়ি দিতে কাজ শুরু করেছে। এরই মধ্যে রমজানে আওয়ামী লীগ সভাপতি দুই দফায় ১৫-২০টি জেলার দলীয় নেতাদের সঙ্গে গণভবনে বৈঠক করেছেন। সেখানে তিনি দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকাকে বিজয়ী করার জন্য কাজ করতে নির্দেশনা দেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খানের মতে, প্রতিটি নির্বাচনই আওয়ামী লীগের জন্য চ্যালেঞ্জের। আগামী নির্বাচনে এটা আরও বেশি হবে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যেহেতু বিএনপি বারবার বলছে নির্বাচনে আসবে না, করতেও দেবে না; তাই এখানে আওয়ামী লীগের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ, সরকারের জন্য আরেকটা চ্যালেঞ্জ।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি যদি নির্বাচনে না আসে, আমরাও একতরফা নির্বাচন চাই না। আমরা চাই, বাংলাদেশে প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন। তার মাধ্যমে আমরা জয়লাভ করব। বিএনপির কথার মাধ্যমে প্রমাণ হচ্ছে, তারা গণতন্ত্র চায় না। তারা অবৈধ সরকারব্যবস্থা চায়। এ অবস্থায় জনগণকে ভোটদানে উদ্বুদ্ধ করার জন্য তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন দলীয় সভাপতি।’
সুযোগসন্ধানীদের নিয়ে দুশ্চিন্তা
আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা বলেন, টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকায় দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা চাওয়া-পাওয়ার হিসাব মেলাচ্ছেন। আর দলের মধ্যে একটা সুযোগসন্ধানী গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় আমলা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর প্রভাব বিস্তার করার অভিযোগে আছে। এসব কারণে দুর্দিনের পোড়খাওয়া অনেক নেতা-কর্মী রাজনীতিবিমুখ হয়ে পড়েছেন। স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে তৃণমূলে দলীয় নেতাদের মধ্যে তৈরি বিভেদ বিস্ফোরণে রূপ নিতেও দেখা যায় বিভিন্ন সময়ে। কয়েক জায়গায় দলের মনোনীত প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় অনেক নেতা-কর্মী সেই প্রার্থীর বিরোধিতাও করেন। তাতে অনেক জায়গায় নৌকার ভরাডুবি হয়। বড় উদাহরণ রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনেও এর পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে। তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে নির্বাচনী ফলে। এমন পরিণতি এড়াতেই তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের কোন্দল ভুলে নির্বাচনমুখী করানোর লক্ষ্যে বৈঠক করছেন খোদ দলীয় প্রধান।
ওই নেতারা আরও বলেন, আওয়ামী লীগের প্রাণ শেখ হাসিনা। তাঁর সঙ্গে দেখা করলে, কথা বললে নেতা-কর্মীদের উচ্ছ্বাস বাড়ে। দলের প্রতি তাঁদের আনুগত্য ও দরদবোধ বাড়ে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে আমাদের দ্বিমুখী চ্যালেঞ্জ আছে। একটা অপশক্তি এ নির্বাচনে অংশ নিতে চায় না এবং নির্বাচন হতে দিতে চায় না। তাদের মোকাবিলা করা একটি চ্যালেঞ্জ। পক্ষান্তরে মানুষকে নির্বাচনমুখী করা এবং আওয়ামী লীগের পক্ষে ভোটদানের জন্য নেতা-কর্মীদের তৃণমূলের সব মানুষের কাছে যাওয়া। সেই নির্দেশনাই তিনি (শেখ হাসিনা) দিয়ে থাকেন।’
আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, ‘নির্বাচন সামনে রেখে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন শক্তি এরই মধ্যে মাঠে নেমেছে। তাতে মনে হচ্ছে, আমাদের ক্ষমতায় যাওয়ার রাস্তা এখনো মসৃণ নয়। দলীয় নেতা-কর্মীদের অলআউট সাংগঠনিক তৎপরতার মাধ্যমে নির্বাচনী বৈতরণি পার হতে হবে। কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় নিজেদের মধ্যে যে কোন্দল রয়েছে, তাতে আমাদের ভুগতে হতে পারে। এ জন্য বিতর্কিত এমপিদের বাদ দিতে হবে। যদি তা না হয়, দলের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা মাঠে না-ও থাকতে পারেন।’
স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের দ্বন্দ্বের কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, বিভেদ দূর করতে দলীয় সভাপতি এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছেন। সব দ্বন্দ্ব ভুলে নির্বাচন সামনে রেখে একসঙ্গে প্রস্তুতি নিতের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
সংলাপের তাগিদ ম্রিয়মাণ
চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংলাপের তাগিদ দিয়েছিল পশ্চিমা দেশগুলো। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দূতেরা বলেছেন, বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা ও সুশাসনের স্বার্থে আগামী সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক, সুষ্ঠু ও অবাধ হওয়া জরুরি। এ কারণে নির্বাচনের আগে দুই প্রধান দলের মধ্যে রাজনৈতিক সমঝোতা দরকার। এই সমঝোতার জন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ, কিংবা উভয় পন্থায় দুই দলের মধ্যে ‘আলাপ’ হওয়া দরকার, তা সেটা সংলাপ বা আলোচনা—যে নামেই হোক না কেন। তবে দুই মাসেও আলোর মুখ দেখেনি সংলাপ।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে এই মুহূর্তে আমাদের সংলাপের কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ, আলোচনায় বসার জন্য তারা রাজনৈতিক কোনো চাপ সৃষ্টি করতে পারেনি।’
চাপের মুখেও স্বস্তি বোধ
এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইইউভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠক করেছে আওয়ামী লীগ। বিএনপিও ওই দূতদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। বড় দুই দলের সঙ্গে বিদেশিদের আলোচনায় মূল বিষয়ই ছিল নির্বাচন। সেখানে অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার কথা দিয়েছে সরকার। অন্যদিকে বিএনপি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার কথা জানিয়েছে।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, পশ্চিমারা নির্বাচন নিয়ে আগ বাড়িয়ে বিভিন্ন কথা বলছে, যা আওয়ামী লীগের জন্য অস্বস্তির। কিন্তু স্বস্তির জায়গাও আছে। কারণ, তারা সংবিধানের আলোকে সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। যেটা আওয়ামী লীগও চায়। বিদেশিদের পরামর্শের কোথাও নির্দলীয় সরকার প্রসঙ্গ ছিল না।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক নেতা বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ আছে। সে নিয়ে কূটনৈতিক চ্যানেলে আমরা প্রশ্নেরও সম্মুখীন হচ্ছি। সামনের নির্বাচন নিয়ে যাতে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে না হয়, সেই চেষ্টা এখন থেকেই শুরু করেছি আমরা। বিদেশিদের বক্তব্যে বোঝা যাচ্ছে, তারা সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়। এখানে আমাদের চাওয়ার সঙ্গে তাদের চাওয়ার মিল আছে।’
বিদেশি কূটনীতিকদের তৎপরতাকে রুটিন কার্যক্রম বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা মতিয়া চৌধুরী। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যিনিই রাষ্ট্রদূত হয়ে আসুক, তিনি এটা বলবেন। পর্দার আড়ালে কে কী বলবেন, ওইটা দুই দিন পরে বোঝা যাবে। আওয়ামী লীগ এতে কোনো চাপ অনুভব করে না। আমাদের মেরুদণ্ড শক্ত।’
সংবিধান অনুযায়ী চলতি বছরের শেষে কিংবা আগামী বছরের শুরুতে হবে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন। সেই নির্বাচন সামনে রাজনৈতিক দলগুলো তৎপরতা বাড়িয়েছে। বিদেশি কূটনীতিকেরাও সক্রিয়। বিএনপি অনেক আগেই ঘোষণা দিয়েছে, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া নির্বাচনে যাবে না এবং হতেও দেবে না। এমন পরিস্থিতিতে ক্ষমতাসীন দলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হলো নিজেদের ঐক্য বজায় রেখে বিরোধীদের আন্দোলন মোকাবিলা করে সব দলকে নির্বাচনমুখী করা। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগ দলীয় শক্তিতে নির্বাচনী বৈতরণি পার হতে তৃণমূল পর্যায়ে সাংগঠনিকে ঐক্য সুদৃঢ় করতে কাজ শুরু করেছে।
দলটির বেশ কয়েকজন নেতা জানান, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন চ্যালেঞ্জের হবে, এমন আভাস বিভিন্ন সভায় দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলনের সময় বিদেশি কূটনীতিকেরা তেমন একটা সরব ছিলেন না। কিন্তু দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন ঘিরে তাদের তৎপরতা বাড়ায় ক্ষমতাসীনদের মধ্যে একধরনের চাপ সৃষ্টি হলেও নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কোনো মন্তব্য না করায় অনেকটা স্বস্তি পাচ্ছে আওয়ামী লীগ। এমন পরিস্থিতিতে দলটি সাংগঠনিক শক্তির ওপর ভর করে আসন্ন নির্বাচনী বৈতরণি পাড়ি দিতে কাজ শুরু করেছে। এরই মধ্যে রমজানে আওয়ামী লীগ সভাপতি দুই দফায় ১৫-২০টি জেলার দলীয় নেতাদের সঙ্গে গণভবনে বৈঠক করেছেন। সেখানে তিনি দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকাকে বিজয়ী করার জন্য কাজ করতে নির্দেশনা দেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খানের মতে, প্রতিটি নির্বাচনই আওয়ামী লীগের জন্য চ্যালেঞ্জের। আগামী নির্বাচনে এটা আরও বেশি হবে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যেহেতু বিএনপি বারবার বলছে নির্বাচনে আসবে না, করতেও দেবে না; তাই এখানে আওয়ামী লীগের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ, সরকারের জন্য আরেকটা চ্যালেঞ্জ।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি যদি নির্বাচনে না আসে, আমরাও একতরফা নির্বাচন চাই না। আমরা চাই, বাংলাদেশে প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন। তার মাধ্যমে আমরা জয়লাভ করব। বিএনপির কথার মাধ্যমে প্রমাণ হচ্ছে, তারা গণতন্ত্র চায় না। তারা অবৈধ সরকারব্যবস্থা চায়। এ অবস্থায় জনগণকে ভোটদানে উদ্বুদ্ধ করার জন্য তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন দলীয় সভাপতি।’
সুযোগসন্ধানীদের নিয়ে দুশ্চিন্তা
আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা বলেন, টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকায় দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা চাওয়া-পাওয়ার হিসাব মেলাচ্ছেন। আর দলের মধ্যে একটা সুযোগসন্ধানী গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় আমলা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর প্রভাব বিস্তার করার অভিযোগে আছে। এসব কারণে দুর্দিনের পোড়খাওয়া অনেক নেতা-কর্মী রাজনীতিবিমুখ হয়ে পড়েছেন। স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে তৃণমূলে দলীয় নেতাদের মধ্যে তৈরি বিভেদ বিস্ফোরণে রূপ নিতেও দেখা যায় বিভিন্ন সময়ে। কয়েক জায়গায় দলের মনোনীত প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় অনেক নেতা-কর্মী সেই প্রার্থীর বিরোধিতাও করেন। তাতে অনেক জায়গায় নৌকার ভরাডুবি হয়। বড় উদাহরণ রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনেও এর পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে। তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে নির্বাচনী ফলে। এমন পরিণতি এড়াতেই তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের কোন্দল ভুলে নির্বাচনমুখী করানোর লক্ষ্যে বৈঠক করছেন খোদ দলীয় প্রধান।
ওই নেতারা আরও বলেন, আওয়ামী লীগের প্রাণ শেখ হাসিনা। তাঁর সঙ্গে দেখা করলে, কথা বললে নেতা-কর্মীদের উচ্ছ্বাস বাড়ে। দলের প্রতি তাঁদের আনুগত্য ও দরদবোধ বাড়ে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে আমাদের দ্বিমুখী চ্যালেঞ্জ আছে। একটা অপশক্তি এ নির্বাচনে অংশ নিতে চায় না এবং নির্বাচন হতে দিতে চায় না। তাদের মোকাবিলা করা একটি চ্যালেঞ্জ। পক্ষান্তরে মানুষকে নির্বাচনমুখী করা এবং আওয়ামী লীগের পক্ষে ভোটদানের জন্য নেতা-কর্মীদের তৃণমূলের সব মানুষের কাছে যাওয়া। সেই নির্দেশনাই তিনি (শেখ হাসিনা) দিয়ে থাকেন।’
আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, ‘নির্বাচন সামনে রেখে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন শক্তি এরই মধ্যে মাঠে নেমেছে। তাতে মনে হচ্ছে, আমাদের ক্ষমতায় যাওয়ার রাস্তা এখনো মসৃণ নয়। দলীয় নেতা-কর্মীদের অলআউট সাংগঠনিক তৎপরতার মাধ্যমে নির্বাচনী বৈতরণি পার হতে হবে। কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় নিজেদের মধ্যে যে কোন্দল রয়েছে, তাতে আমাদের ভুগতে হতে পারে। এ জন্য বিতর্কিত এমপিদের বাদ দিতে হবে। যদি তা না হয়, দলের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা মাঠে না-ও থাকতে পারেন।’
স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের দ্বন্দ্বের কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, বিভেদ দূর করতে দলীয় সভাপতি এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছেন। সব দ্বন্দ্ব ভুলে নির্বাচন সামনে রেখে একসঙ্গে প্রস্তুতি নিতের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
সংলাপের তাগিদ ম্রিয়মাণ
চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংলাপের তাগিদ দিয়েছিল পশ্চিমা দেশগুলো। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দূতেরা বলেছেন, বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা ও সুশাসনের স্বার্থে আগামী সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক, সুষ্ঠু ও অবাধ হওয়া জরুরি। এ কারণে নির্বাচনের আগে দুই প্রধান দলের মধ্যে রাজনৈতিক সমঝোতা দরকার। এই সমঝোতার জন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ, কিংবা উভয় পন্থায় দুই দলের মধ্যে ‘আলাপ’ হওয়া দরকার, তা সেটা সংলাপ বা আলোচনা—যে নামেই হোক না কেন। তবে দুই মাসেও আলোর মুখ দেখেনি সংলাপ।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে এই মুহূর্তে আমাদের সংলাপের কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ, আলোচনায় বসার জন্য তারা রাজনৈতিক কোনো চাপ সৃষ্টি করতে পারেনি।’
চাপের মুখেও স্বস্তি বোধ
এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইইউভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠক করেছে আওয়ামী লীগ। বিএনপিও ওই দূতদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। বড় দুই দলের সঙ্গে বিদেশিদের আলোচনায় মূল বিষয়ই ছিল নির্বাচন। সেখানে অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার কথা দিয়েছে সরকার। অন্যদিকে বিএনপি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার কথা জানিয়েছে।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, পশ্চিমারা নির্বাচন নিয়ে আগ বাড়িয়ে বিভিন্ন কথা বলছে, যা আওয়ামী লীগের জন্য অস্বস্তির। কিন্তু স্বস্তির জায়গাও আছে। কারণ, তারা সংবিধানের আলোকে সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। যেটা আওয়ামী লীগও চায়। বিদেশিদের পরামর্শের কোথাও নির্দলীয় সরকার প্রসঙ্গ ছিল না।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক নেতা বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ আছে। সে নিয়ে কূটনৈতিক চ্যানেলে আমরা প্রশ্নেরও সম্মুখীন হচ্ছি। সামনের নির্বাচন নিয়ে যাতে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে না হয়, সেই চেষ্টা এখন থেকেই শুরু করেছি আমরা। বিদেশিদের বক্তব্যে বোঝা যাচ্ছে, তারা সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়। এখানে আমাদের চাওয়ার সঙ্গে তাদের চাওয়ার মিল আছে।’
বিদেশি কূটনীতিকদের তৎপরতাকে রুটিন কার্যক্রম বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা মতিয়া চৌধুরী। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যিনিই রাষ্ট্রদূত হয়ে আসুক, তিনি এটা বলবেন। পর্দার আড়ালে কে কী বলবেন, ওইটা দুই দিন পরে বোঝা যাবে। আওয়ামী লীগ এতে কোনো চাপ অনুভব করে না। আমাদের মেরুদণ্ড শক্ত।’
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে