কথিত আছে, ঈশ্বর বিশ্ব সৃষ্টি করেছেন মাত্র ছয় দিনে। সপ্তম দিনে নিয়েছিলেন বিশ্রাম। এই কারণে ৭ নম্বর সংখ্যাটি পবিত্র বাইবেলে সম্পূর্ণতা বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। আব্রাহামীয় অন্য দুই ধর্ম ইহুদি ও ইসলামে রয়েছে সপ্তম স্বর্গের কথা। বৌদ্ধরাও সপ্তম স্বর্গে বিশ্বাস করেন। ৭ নম্বর সংখ্যাটিকে হয়তো এই কারণে ‘লাকি সেভেন’ বলে থাকেন কেউ কেউ।

ফুটবলে অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার বা উইঙ্গারকে ৭ নম্বর জার্সি পরে খেলতে দেখা যায়। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক দুই তারকা ডেভিড বেকহাম ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে ক্যারিয়ারের বেশির ভাগ সময় দেখা গেছে ৭ নম্বর জার্সিতে। দুই ফরাসি কিলিয়ান এমবাপ্পে ও আঁতোয়া গ্রিজমানেরও প্রিয় এই জার্সি নম্বর।

তবে ৭ কারও কাছে ট্রেডমার্ক জার্সি বা ভাগ্যের হলেও কারও কাছে বেদনা ও লজ্জার। গত রোববার ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে তেমন এক লজ্জায় লাল হয়েছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। লিভারপুলের মাঠ অ্যানফিল্ডে ৭-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিল রেড ডেভিলরা। চির প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে তো বটে, নিজেদের ইতিহাসেও ইউনাইটেডের এটি সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হার। এর আগে আরও তিনবার সমান ব্যবধানে হারের লজ্জায় পড়েছিল তারা। প্রতিবারই প্রতিপক্ষের মাঠে। 

চিন্তা করুন তো, ইউনাইটেড সমর্থনের পাশাপাশি ব্রাজিলের সাম্বা ফুটবলের ভক্ত কারও কথা। তার জন্য ৭ সংখ্যাটি যন্ত্রণার ছাড়া আর কী হতে পারে! ২০১৪ বিশ্বকাপে বেলো হরিজোন্তের সেমিফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে ৭-১ গোলে হারের দুঃস্বপ্ন এখনো ভূতের বেশে তাড়া করে ব্রাজিলিয়ানদের। এরপর তো সেলেসাও সমর্থকদের বিদ্রুপ করে ‘সেভেন আপ’ ডাকারও প্রচলন হয়ে যায়।

বিশ্ব ফুটবলে ৭ গোলের ব্যবধানে জয় বা প্রতিপক্ষের জালে সমান গোল দেওয়ার নজির কম নেই। ২০১০ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে উত্তর কোরিয়াকে ৭-০ গোলে হারিয়েছিল ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর্তুগাল। ২০২২ বিশ্বকাপে কাতারে কোস্টারিকাকেও ৭-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল স্পেন। তবে গোলবন্যার জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে ১৯৫৪ সুইজারল্যান্ড বিশ্বকাপ। সেই বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে তুরস্ক ৭-০ গোলে দক্ষিণ কোরিয়াকে এবং উরুগুয়ে একই স্কোর গড়ে হারিয়েছিল স্কটল্যান্ডকে। তবে জমজমাট ম্যাচটি হয়েছিল কোয়ার্টার ফাইনালে। স্বাগতিক সুইসদের ৭-৫ গোলে হারায় অস্ট্রিয়া। অবশ্য সেমিফাইনালে গিয়ে অস্ট্রিয়ানরা ৬-১ গোলে হারে জার্মানির কাছে।