নগরীতে ছয়টি অত্যাধুনিক ভিওআইপি মেশিনসহ তৃতীয়বারের মতো র‍্যাবের হাতে আটক হয়েছেন মো. নাছির উদ্দিন (৪০) নামের এক ভিওআইপি কারবারি। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ৩ হাজারের বেশি সিম কার্ডসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।

অভিযুক্তের বরাত দিয়ে র‍্যাব বলেছে, নাছিরের অবৈধ ভিওআইপি মেশিন থেকে দিনে ৩০ থেকে ৪০ হাজার মিনিট কল আসে। তবে র‍্যাব বলছে, এই কলের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।

গত সোমবার রাতে নগরীর পাঁচলাইশ থানার মোহাম্মদপুর আবাসিক এলাকায় ইমাম টাওয়ারের পঞ্চম তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে এসব সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। অভিযুক্ত নাছির লোহাগাড়া উপজেলার বড় হাতিয়া গ্রামের আব্দুল মোনাফের ছেলে।

পরদিন গতকাল মঙ্গলবার পতেঙ্গায় র‍্যাব-৭-এর কার্যালয়ের সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস এম ইউসুফ সাংবাদিকদের বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি এর আগে ২০১৬ ও ২০১৮ সালে র‍্যাবের হাতে আটক হয়েছিলেন। দু’বার জেল খেটেছিলেন। জেল থেকে বেরিয়ে কিছুদিন বন্ধ থাকার পর পুনরায় এই ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তিনি ওই ব্যবসার সঙ্গে সাত বছর ধরে যুক্ত রয়েছে। একসময় অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায় যুক্ত আরেকজনের অধীনে কাজ করেছিলেন। পরে ওই ব্যবসায়ী বিদেশে চলে যাওয়ায় তিনি নিজে এই ব্যবসায় বিনিয়োগ করেন।

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘তাঁর কাছ থেকে মোট ছয়টি মেশিন পাওয়া যায়। এসব মেশিন থেকে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ হাজার মিনিট কল আসার কথা বলা হলেও আমাদের ধারণা, কল আরও বেশি আসে। একটা ভিওআইপি মেশিনে একসঙ্গে ৫০০টি সিম ব্যবহার করা যায়। আমরা ৩ হাজার সিম জব্দ করেছি।’

এস এম ইউসুফ বলেন, জব্দ সিমগুলো বিভিন্ন এজেন্টদের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে এসব সিম সংগ্রহ হয়। বিভিন্নজনের এনআইডি ব্যবহার করে এসব সিম ব্যবহার হয়। এই অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার মাধ্যমে সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে বলে জানান তিনি।

পাশাপাশি দেশের বাইরে থেকে বিভিন্ন সময় দেশবিরোধী ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালানোর ঘটনায় অবৈধভাবে এসব ভিওআইপি কল ব্যবহৃত হয় বলে জানান তিনি।

এস এম ইউসুফ বলেন, ‘চট্টগ্রামে আরও দু-একটি অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা রয়েছে বলে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে। তা ধারাবাহিক অভিযানে দোষীদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করা হবে। আবাসিক ভবনের মালিকদের প্রতি অনুরোধ, ভাড়াটিয়া সম্পর্কে খোঁজখবর রাখেন।’

ওই বাসা থেকে জব্দ সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে, ছয়টি অত্যাধুনিক ভিওআইপি মেশিন, ২ হাজার ৮৩০টি টেলিটক সিম, ১৬৫টি এয়ারটেল সিম, একটি ল্যাপটপ, চারটি মোবাইল, ছয়টি পাওয়ার সাপ্লাই, রাউটার, কেবল, এন্টেনা।