স্বতন্ত্রদের কাছে নৌকার ভরাডুবি যে কারণে

ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০২১, ০৬: ৫৪
আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২১, ১৪: ০৮

ধামরাইয়ে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যোগ্য ব্যক্তিদের মনোনয়ন দেওয়া হয়নি দাবি তৃণমূল নেতা-কর্মীদের। যার কারণে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীদের কাছে ভরাডুবি হয়েছে আওয়ামী লীগের মনোনীত ৭ চেয়ারম্যান প্রার্থীর।

জানা যায়, সোমভাগ ইউনিয়নের মোট ১৮ হাজার ২৩৫ বৈধ ভোটের মধ্যে নৌকার মনোনীত প্রার্থী আজহার আলী পেয়েছেন মাত্র ৫ হাজার ১৩৬ ভোট। আর জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রভাষক মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন পেয়েছেন ১৩ হাজার ১১ ভোট। ধামরাই ইউনিয়নে মোট ৮ হাজার ৫৭৭ বৈধ ভোট ও ৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মধ্যে নৌকার মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. শাহাবদ্দিন পেয়েছেন মাত্র ৫৭৬ ভোট। আর স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. মশিউর রহমান ৩ হাজার ৬০৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। এ ছাড়াও নৌকার মনোনয়ন পাওয়া ৫ ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভরাডুবি ঘটিয়েছেন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীরা।

নৌকার এমন ভরাডুবিতে সাধারণ মানুষ বলছে, ধামরাই ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কথামতো জনপ্রিয়তার শীর্ষে ও ক্লিন ইমেজের লোককে নৌকার মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। যার কারণে বিপুল ভোটে পরাজয় হয়েছে নৌকার প্রার্থীর।

উপজেলার শরীফভাগ এলাকার শমেজ আলী বলেন, ‘ধামরাই ইউপি নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল ভুল ব্যক্তিদের। যার কারণে বিপুল ভোটের ব্যবধানে নৌকার প্রার্থীকে হারিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। আওয়ামী লীগের ঊর্ধ্বতন নেতা-কর্মীদের ভুলের কারণেই এমনটা হয়েছে।’

গত ১১ নভেম্বর ইউপি নির্বাচনে ধামরাই উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে ৭ জন স্বতন্ত্র ও ৮ জন আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু ৭ জন স্বতন্ত্র প্রার্থীই আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থীকে বিশাল ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন।

ধামরাইয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন সানোড়া ইউনিয়নের খালেদ মাসুদ খান লাল্টু, বাইশাকান্দা ইউনিয়নের মিজানুর রহমান মিজান, গাংগুটিয়া ইউনিয়নের আবদুল কাদের মোল্লা, রোয়াইল ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা কাজিম উদ্দিন, কুশুরা ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান, বালিয়া ইউনিয়নের মুজিবর রহমান, সূয়াপুর ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা কফিল উদ্দিন, আমতা ইউনিয়নে মো. আরিফ হোসেন বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

অপরদিকে সোমভাগ ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেছেন প্রভাষক মো. আওলাদ হোসেন, যাদবপুর ইউনিয়নের মো. মিজানুর রহমান মিজু, ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের মোসলেম উদ্দিন মাসুম, ধামরাই ইউনিয়নের মো. মশিউর রহমান, কুল্লা ইউনিয়নের হাজি লুৎফর রহমান, নান্নার ইউনিয়নের মো. আলতাব হোসেন মোল্লা, চৌহাট ইউনিয়নের পারভিন হাসান প্রীতি বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

তবে আওয়ামী লীগ মনোনীত ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলে ১৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ১১ জন নতুন মুখ চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।

সোমভাগ ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জুলহাস উদ্দিন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী চেয়েছিলেন ইউপি নির্বাচনে যাঁরা জনপ্রিয়তার শীর্ষে ও ক্লিন ইমেজের থাকবেন, তাঁদেরই শুধু নৌকার মনোনয়ন দেওয়া হবে। কিন্তু আমাদের ধামরাইয়ে তার ব্যতিক্রম হয়েছে। তার প্রমাণও মিলেছে ৭ স্বতন্ত্র প্রার্থী নৌকার মনোনীত প্রার্থীকে বিশাল ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন।’

জুলহাস উদ্দিন আরও বলেন, ‘নৌকার মনোনীত প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী দুজনই আওয়ামী লীগের। কিন্তু একজনের থেকে আরেক জনের জনপ্রিয়তা বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক। তাই আমি মনে করি, ইউপি নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও বেশি খোঁজখবর নিয়ে দেওয়া উচিত ছিল। সঠিক ব্যক্তিকে মনোনয়ন না দেওয়ায় এই নির্বাচন নৌকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে রেখে গেল।’

ধামরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. সিরাজ উদ্দিন বলেন, ‘স্থানীয় মনোনয়ন বোর্ড আছে একটা। যেটার সভাপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভাপতি। সদস্য কারা তা তো আপনারা জানেনই। ইউনিয়নের প্রস্তাবিত নামগুলো থানা কমিটির মাধ্যমে শুধু জেলা কমিটির কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। থানা কমিটির এখানে কিছুই করার সুযোগ ছিল না।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

ভারতের পাল্টা আক্রমণে দিশেহারা অস্ট্রেলিয়া

ঢাকা কলেজে সংঘর্ষকালে বোমা বিস্ফোরণে ছিটকে পড়েন সেনাসদস্য—ভাইরাল ভিডিওটির প্রকৃত ঘটনা

ঐশ্বরিয়ার বিচ্ছেদের খবরে মুখ খুললেন অমিতাভ

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত