ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় সম্মেলন ছাড়াই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবু জাহেরের নেতৃত্বে উপজেলার আটটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের একাংশের নেতা-কর্মীরা এতে অংশ নেন।

প্রতিবাদ সমাবেশে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গঠিত কমিটি বাতিল করে সম্মেলনের মাধ্যমে আটটি ইউনিয়নের কমিটি গঠন করা না হলে অবস্থান ধর্মঘটের মতো কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

আওয়ামী লীগের দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটিগুলো হলো শিদলাই, চান্দলা, দুলালপুর, মালাপাড়া ও সাহেবাবাদ ইউনিয়ন। পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, ওই কমিটি গঠনে ত্যাগী নেতাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কমিটি গঠন করা হয়নি।

গতকালের বিক্ষোভ মিছিল উপজেলা সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ভগবান সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠ সংলগ্ন এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সমাবেশে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থবিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মদ আবু জাহের সভাপতিত্ব করেন।

সমাবেশে বলা হয়, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কমিটি বাতিল করে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কমিটি দিতে হবে। দাবি মানা না হলে কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান ধর্মঘট পালন করা হবে।

প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ আবদুল কাফী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিদ্দিকুর রহমান, জেলা মৎস্যজীবী লীগের আহ্বায়ক শাহ আলম ঠিকাদার, মালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন, উপজেলা মৎস্যজীবী লীগের আহ্বায়ক মনির হোসেন চৌধুরী, যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক জাহিদুল হাসান পলাশ, যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন, আলমগীর হোসেন ও এনামুল হক এনাম, সাহেবাবাদ ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শরীফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন প্রমুখ।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবু জাহের আজকের পত্রিকাকে বলেন, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হয়নি। গঠনতন্ত্রের বহির্ভূতভাবে পাঁচটি ইউনিয়নের কমিটি করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘রাতের আঁধারে এ পকেট কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এতে প্রকৃত আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা বাদ পড়ছেন। উপজেলার আটটি ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর খান চৌধুরী আজ পত্রিকাকে বলেন, ‘দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সম্মেলনের মাধ্যমেই পাঁচটি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচনের সময় বিএনপি ও জামাত-শিবির নিয়ে নির্বাচন করেছেন। ঠিক তেমনি বর্তমানে জামায়াত-শিবির ও বিএনপির লোকজন নিয়ে আন্দোলন করছেন। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ীই পরবর্তী ইউনিয়নগুলোর কমিটি গঠন করা হবে।’