গাড়ি ও ঘরসংকটে অরক্ষিত লাশ

আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৭: ৫৩
আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১: ০২

প্রায়ই ঘটছে ট্রেনে কাটা পড়ে নিহতের ঘটনা। সেই মরদেহ সংরক্ষণের জন্য লাশঘরের অভাব। নেই লাশবাহী গাড়ি। নেই নিয়োজিত ডোম। মরদেহটি অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে থাকে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে। বিড়ম্বনায় পড়তে হয় ট্রেনযাত্রীদের।

বলা হচ্ছে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার ঐতিহ্যবাহী রেলওয়ে জংশন স্টেশনের কথা। জনসাধারণের সেবার জন্য এই স্টেশনে আছে রেলওয়ে থানা। কিন্তু সেই রেলওয়ে থানাটিই আছে নানামুখী সংকটে। এদিকে থানায় দায়িত্বরত পুলিশদের দৈনন্দিন কার্যক্রম করতে হচ্ছে অনেকটাই কষ্টের মধ্যে।

জানা যায়, সান্তাহার রেলওয়ে থানাটি পাকশী রেলওয়ে জেলার অন্তর্গত। এই রেলওয়ে থানার আওতাধীন ৩০টি স্টেশন, ৪টি জেলা, একটি পুলিশ ফাঁড়ি ও একটি ক্যাম্প আছে। উত্তরের জয়পুরহাট জেলার (পাঁচবিবি/হিলি) থেকে দক্ষিণে নাটোর জেলার মালঞ্চি এবং পূর্বে বগুড়া জেলার সোনাতলা পর্যন্ত প্রায় ১৮৩ দশমিক ৩১ কিলোমিটার রেলপথের দায়িত্ব পালন করতে হয় এই থানায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের।

ব্রিটিশ আমলের তৈরি এই জংশন স্টেশনে সম্প্রতি উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও লাগেনি রেলওয়ে থানায়। স্থাপনাগুলোতেই খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে থানার কার্যক্রম। থানার ভেতরে নেই নারী হাজতখানা, ভালো শৌচাগার।

এ ছাড়া পুলিশ সদস্যদের আবাসনসংকট এবং ব্যারাকে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে কষ্ট করে থাকতে হয়। অপরদিকে এই রেলওয়ে থানার আওতায় কোথাও না কোথাও প্রায় প্রতিদিনই মরদেহ উদ্ধারের ঘটনা ঘটছে। ঘটছে রেল দুর্ঘটনায় মৃত্যু ঘটনাও।

ঘটনাস্থল থেকে থানা হয়ে মর্গ পর্যন্ত রিকুইজিশন করার জন্য পুরোনো একটি ভ্যানই পুলিশের শেষ ভরসা। লাশ বহনের জন্য নেই নিজস্ব ভালো বাহন।

সরকারি নিয়োগকৃত কোনো ডোম না থাকায় মরদেহটি থাকছে অবহেলায়। আবার উদ্ধারকৃত ওইসব মরদেহ সংরক্ষণের জন্য লাশঘর না থাকায় থানার পাশেই স্টেশন প্ল্যাটফর্মে রাখা হয়। যার ফলে প্রচণ্ড গরম ও ঝড়-বৃষ্টিতে নষ্ট হয় আলামত। এ ছাড়া প্ল্যাটফর্মে অরক্ষিত অবস্থায় রাখার কারণে অনেক সময় বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয় স্টেশনে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের।

স্টেশনে অপেক্ষমাণ রোকনুজ্জামান রুকু নামের এক ট্রেনযাত্রী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সান্তাহার থেকে প্রায় ট্রেনযোগে ঢাকা যাওয়া-আসা করি। মাঝেমধ্যেই সান্তাহার রেলওয়ে থানার সামনে প্ল্যাটফর্মের ওপরে রেলে কাটা লাশ দেখি, যা দেখে কিছুটা বিব্রত হই।’

এনামুল হক নামের আরেক ট্রেনযাত্রী বলেন একই কথা। তিনি বলেন, থানার পাশে রাখা লাশ থেকে রক্ত ও গন্ধ বের হয়। এতে ছোট বাচ্চারা ভয় পায়। ফলে প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ানো যায় না।

সান্তাহার সচেতন নাগরিক ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু আসাদ বলেন, রেলওয়ে থানায় লাশঘর না থাকার কারণে লাশ অরক্ষিত থাকে। ঝড়-বৃষ্টি এবং গরমের চাপে অনেক সময় লাশ বিকৃত হয়ে যায়। যার ফলে পুলিশের লাশের আলামত নষ্ট হয়ে যায়। এ জন্য থানায় লাশবাহী গাড়ি, ডোম এবং লাশঘর প্রয়োজন।

এ বিষয়ে সান্তাহার রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাকিউল আযম আজকের পত্রিকাকে বলেন, রেল সীমানা থেকে উদ্ধারকৃত পুলিশ যে লাশটি থানায় নিয়ে আসবে, তার জন্য নেই লাশবাহী গাড়ি এবং নিয়োজিত ডোম। বেসরকারিভাবে একজন ডোম কাজ করছেন। তাঁকে দিয়ে সব কাজ করানো যায় না। তাই সবার আগে একটি লাশঘর প্রয়োজন। এটি থাকলে লাশটি হেফাজতে রাখা যায়।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত