মো. হারুনুর রশিদ
প্রতিবছর দেশের লাখো শিক্ষার্থীর স্বপ্ন থাকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আসনে ভর্তি নিশ্চিত করা। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় শিক্ষার মান, আবাসিক সুযোগ-সুবিধা বেশি হওয়ায় এবং খরচ অনেক কম হওয়ায় এখনো দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কাঙ্ক্ষিত আসনের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষার জন্য আবেদন করে থাকে। ফলে শিক্ষার্থীদের তীব্র প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে বাছাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। এই পর্বে আমরা দেশের সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি প্রক্রিয়ার প্রস্তুতি সম্পর্কে আলোকপাত করব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে পরীক্ষার সিলেবাস নিয়ে সাধারণ নির্দেশনা দেওয়া থাকলেও প্রকৃতপক্ষে নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্য থেকে প্রশ্ন হয় না; তাই শিক্ষার্থীদের আমরা বহুমুখী প্রস্তুতির পরামর্শ প্রদান করে থাকি। প্রাথমিক ও নিম্ন মাধ্যমিকের মৌলিক বিষয়গুলোতে যেসব শিক্ষার্থী এগিয়ে থাকে, তারা প্রতিযোগিতায়ও এগিয়ে থাকে। সুনির্দিষ্টভাবে উচ্চমাধ্যমিক তথা একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির সিলেবাস অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য ভর্তি-ইচ্ছুকদের পরামর্শ দেওয়া হলেও একজন সচেতন শিক্ষার্থীর উচিত নবম-দশম শ্রেণি থেকেই তার প্রস্তুতি শুরু করা; এ ক্ষেত্রে প্রতিটি বোর্ড বা বোর্ড অনুমোদিত বইগুলোর প্রতিটি বিষয়কেই যত্নের সঙ্গে রপ্ত করা প্রয়োজন।
আবেদন কখন এবং কীভাবে করব?
সাধারণত প্রতিবছর এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের কিছুদিন পরই ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রাম, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী এবং বিশেষায়িত কিছু বিশ্ববিদ্যালয় স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে থাকে। গত দুই বছর গুচ্ছ পদ্ধতিতে ২২টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রক্রিয়া পরিচালনা করছে। এ ছাড়া কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ে কৃষি গুচ্ছ এবং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ে আরেকটি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করা হয়; বুয়েট স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে থাকে। এইচএসসির ফল প্রকাশের পরই শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এবং গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটগুলোতে নিয়মিত বিরতিতে খেয়াল রাখতে হবে। ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা নির্দেশনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের আগে আবেদন নিশ্চিত করতে হবে।
কীভাবে নিজেকে তৈরি করব?
বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার শিক্ষার্থীকে তাদের বিষয়সংশ্লিষ্ট পাঠ্যবইগুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে বুঝে পড়তে হবে। পাঠ্যবইয়ের অনুশীলনগুলো অবশ্যই সমাধান করতে হবে। পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি বিষয়সংশ্লিষ্ট স্বীকৃত বইগুলোর সহায়তা নেওয়া দরকারি ভূমিকা পালন করবে। নবম-দশম শ্রেণির সংশ্লিষ্ট পাঠ্যবইগুলো থেকে বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি শিক্ষার্থীকে কিছুটা এগিয়ে দেবে। বাংলা ও ইংরেজি উভয় পত্রের বোর্ড বই এবং স্বীকৃত মৌলিক বইগুলো যত্ন নিয়ে বুঝে পড়া চাই। অনেক শিক্ষার্থী বইগুলো উপেক্ষা করে, সেটা উচিত নয়। সাধারণ জ্ঞানের ক্ষেত্রে বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতির পাশাপাশি আরও বেশ কিছু বিষয়ের প্রতি নজর দিতে হবে। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পৌরনীতি ও সুশাসন, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়, ভূগোল, অর্থনীতি, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির স্বীকৃত বইগুলো বেশ কাজের; কিন্তু যথেষ্ট নয়। দৈনন্দিন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সাম্প্রতিক ঘটনাবলির খোঁজখবর রাখতে হবে। এ জন্য নিয়মিত সংবাদপত্র পাঠ এবং সাম্প্রতিক সাধারণ জ্ঞানের বইগুলো সংগ্রহে রাখা বাঞ্ছনীয়।
সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ববর্তী বছরগুলোর প্রশ্ন সম্পর্কে ধারণা না থাকলে প্রস্তুতি অসম্পূর্ণ থাকবে, তাই প্রশ্নব্যাংক সংগ্রহে রাখা উপযুক্ত একটি কাজ হবে। পরীক্ষার আগে বিষয়ভিত্তিক ও পরীক্ষার আদলে মডেল টেস্ট দিতে পারলে আত্মবিশ্বাস বাড়বে। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে এমসিকিউর পাশাপাশি লিখিত পরীক্ষা পদ্ধতি চালু আছে, সেখানে ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা সিলেবাস অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে হবে।
পরীক্ষার সময় করণীয়?
ভর্তি পরীক্ষার আগেই নির্দেশিত ডকুমেন্টস, প্রবেশপত্র, কলম, পেনসিল ইত্যাদি গুছিয়ে রাখা উচিত। স্নায়ুচাপ এড়াতে পরীক্ষার আগের দিন পর্যাপ্ত ঘুম বেশ কাজের। পরীক্ষার কেন্দ্রে কমপক্ষে এক ঘণ্টা আগে উপস্থিত থাকা চাই। পরীক্ষার হলে পরিদর্শকদের নির্দেশাবলি খুব মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে; ধীরস্থিরভাবে সতর্কতার সঙ্গে ওএমআর পূরণ করতে হবে। না জেনে উত্তর প্রদান করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে; কেননা প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য প্রাপ্ত নম্বর থেকে নম্বর কেটে রাখা হয়। পরীক্ষার হলে বিচলিত হওয়া এড়াতে আগেই মানসিক প্রস্তুতি জরুরি। মনে রাখতে হবে ভর্তি পরীক্ষা তীব্র প্রতিযোগিতামূলক, তাই সময় ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখা চাই। প্রশ্নের ধরন বুঝে কৌশল ঠিক করলে উপকৃত হতে পারেন।
পরীক্ষার পরবর্তী সময়ে কী করব?
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তিসংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে নিয়মিত খোঁজ রাখতে হবে। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের নম্বরপত্র, সনদপত্র, প্রশংসাপত্র, ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র, ছবি, বিভিন্ন ফি পরিশোধের সংশ্লিষ্ট ডকুমেন্টস গুছিয়ে রাখা ভালো; যেসব ডকুমেন্টের সত্যায়িত করা প্রয়োজন সেগুলো কয়েক কপি সত্যায়িত করে রাখলে শেষের দিকে অনেকটা ঝামেলামুক্ত থাকা যাবে। বিষয় ও বিশ্ববিদ্যালয় বাছাইয়ের সময় সতর্ক থাকতে হবে, এ জন্য অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের পরামর্শ এবং সংশ্লিষ্ট নির্দেশনা মান্য করলে পরবর্তীকালে জটিলতা কমবে। পুরো ভর্তি প্রক্রিয়ায় শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়, তাই শুরুর সময়ে কাজ করা গুরুত্বপূর্ণ।
অভিভাবকদের প্রতি পরামর্শ
এইচএসসি পরীক্ষার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি শুরু করতে হয়, প্রচলিত ধারণাটি সঠিক নয়। বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ জ্ঞান, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে ন্যূনতম দক্ষতা না থাকলে প্রস্তুতিতে পেছনে পড়ে যাওয়ার বিষয়টি অবধারিত। বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বপ্নের বিষয়ে ভর্তি নিশ্চিত করার জন্য প্রস্তুতি যেন শুরু হয় গোড়া থেকেই। তাই ছোটবেলা থেকেই আপনার সন্তানেরা পাঠ্যবইগুলো সঠিকভাবে বুঝে আত্মস্থ করছে কি না, মৌলিক দক্ষতাগুলো অর্জন করছে কি না, সে বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখা চাই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর বিষয় পছন্দের সময় বেশ কয়েকটি বিষয়ের বিচার-বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যেমন—শিক্ষার্থীর মেরিট পজিশন ও পছন্দ, বর্তমান ও ভবিষ্যতে বাজারের চাহিদা, ভবিষ্যতে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ প্রভৃতি। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের ওপর যেন কোনো বিষয় চাপিয়ে না দেওয়া হয়। বিষয় ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনে অভিজ্ঞদের পরামর্শ গ্রহণ করাও গুরুত্বপূর্ণ।
স্বপ্নের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আকাঙ্ক্ষিত বিষয়ে ভর্তি নিশ্চিত করার জন্য চাই অবিচল ইচ্ছা ও ধারাবাহিক অধ্যবসায়। সঠিক নির্দেশনা অনুযায়ী কঠোর
পরিশ্রমের মাধ্যমে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারলে কাঙ্ক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন অসম্ভব কিছু নয়।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক , জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়
অনুলিখন: মো. আশিকুর রহমান
প্রতিবছর দেশের লাখো শিক্ষার্থীর স্বপ্ন থাকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আসনে ভর্তি নিশ্চিত করা। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় শিক্ষার মান, আবাসিক সুযোগ-সুবিধা বেশি হওয়ায় এবং খরচ অনেক কম হওয়ায় এখনো দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কাঙ্ক্ষিত আসনের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষার জন্য আবেদন করে থাকে। ফলে শিক্ষার্থীদের তীব্র প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে বাছাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। এই পর্বে আমরা দেশের সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি প্রক্রিয়ার প্রস্তুতি সম্পর্কে আলোকপাত করব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে পরীক্ষার সিলেবাস নিয়ে সাধারণ নির্দেশনা দেওয়া থাকলেও প্রকৃতপক্ষে নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্য থেকে প্রশ্ন হয় না; তাই শিক্ষার্থীদের আমরা বহুমুখী প্রস্তুতির পরামর্শ প্রদান করে থাকি। প্রাথমিক ও নিম্ন মাধ্যমিকের মৌলিক বিষয়গুলোতে যেসব শিক্ষার্থী এগিয়ে থাকে, তারা প্রতিযোগিতায়ও এগিয়ে থাকে। সুনির্দিষ্টভাবে উচ্চমাধ্যমিক তথা একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির সিলেবাস অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য ভর্তি-ইচ্ছুকদের পরামর্শ দেওয়া হলেও একজন সচেতন শিক্ষার্থীর উচিত নবম-দশম শ্রেণি থেকেই তার প্রস্তুতি শুরু করা; এ ক্ষেত্রে প্রতিটি বোর্ড বা বোর্ড অনুমোদিত বইগুলোর প্রতিটি বিষয়কেই যত্নের সঙ্গে রপ্ত করা প্রয়োজন।
আবেদন কখন এবং কীভাবে করব?
সাধারণত প্রতিবছর এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের কিছুদিন পরই ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রাম, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী এবং বিশেষায়িত কিছু বিশ্ববিদ্যালয় স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে থাকে। গত দুই বছর গুচ্ছ পদ্ধতিতে ২২টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রক্রিয়া পরিচালনা করছে। এ ছাড়া কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ে কৃষি গুচ্ছ এবং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ে আরেকটি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করা হয়; বুয়েট স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে থাকে। এইচএসসির ফল প্রকাশের পরই শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এবং গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটগুলোতে নিয়মিত বিরতিতে খেয়াল রাখতে হবে। ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা নির্দেশনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের আগে আবেদন নিশ্চিত করতে হবে।
কীভাবে নিজেকে তৈরি করব?
বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার শিক্ষার্থীকে তাদের বিষয়সংশ্লিষ্ট পাঠ্যবইগুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে বুঝে পড়তে হবে। পাঠ্যবইয়ের অনুশীলনগুলো অবশ্যই সমাধান করতে হবে। পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি বিষয়সংশ্লিষ্ট স্বীকৃত বইগুলোর সহায়তা নেওয়া দরকারি ভূমিকা পালন করবে। নবম-দশম শ্রেণির সংশ্লিষ্ট পাঠ্যবইগুলো থেকে বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি শিক্ষার্থীকে কিছুটা এগিয়ে দেবে। বাংলা ও ইংরেজি উভয় পত্রের বোর্ড বই এবং স্বীকৃত মৌলিক বইগুলো যত্ন নিয়ে বুঝে পড়া চাই। অনেক শিক্ষার্থী বইগুলো উপেক্ষা করে, সেটা উচিত নয়। সাধারণ জ্ঞানের ক্ষেত্রে বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতির পাশাপাশি আরও বেশ কিছু বিষয়ের প্রতি নজর দিতে হবে। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পৌরনীতি ও সুশাসন, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়, ভূগোল, অর্থনীতি, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির স্বীকৃত বইগুলো বেশ কাজের; কিন্তু যথেষ্ট নয়। দৈনন্দিন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সাম্প্রতিক ঘটনাবলির খোঁজখবর রাখতে হবে। এ জন্য নিয়মিত সংবাদপত্র পাঠ এবং সাম্প্রতিক সাধারণ জ্ঞানের বইগুলো সংগ্রহে রাখা বাঞ্ছনীয়।
সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ববর্তী বছরগুলোর প্রশ্ন সম্পর্কে ধারণা না থাকলে প্রস্তুতি অসম্পূর্ণ থাকবে, তাই প্রশ্নব্যাংক সংগ্রহে রাখা উপযুক্ত একটি কাজ হবে। পরীক্ষার আগে বিষয়ভিত্তিক ও পরীক্ষার আদলে মডেল টেস্ট দিতে পারলে আত্মবিশ্বাস বাড়বে। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে এমসিকিউর পাশাপাশি লিখিত পরীক্ষা পদ্ধতি চালু আছে, সেখানে ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা সিলেবাস অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে হবে।
পরীক্ষার সময় করণীয়?
ভর্তি পরীক্ষার আগেই নির্দেশিত ডকুমেন্টস, প্রবেশপত্র, কলম, পেনসিল ইত্যাদি গুছিয়ে রাখা উচিত। স্নায়ুচাপ এড়াতে পরীক্ষার আগের দিন পর্যাপ্ত ঘুম বেশ কাজের। পরীক্ষার কেন্দ্রে কমপক্ষে এক ঘণ্টা আগে উপস্থিত থাকা চাই। পরীক্ষার হলে পরিদর্শকদের নির্দেশাবলি খুব মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে; ধীরস্থিরভাবে সতর্কতার সঙ্গে ওএমআর পূরণ করতে হবে। না জেনে উত্তর প্রদান করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে; কেননা প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য প্রাপ্ত নম্বর থেকে নম্বর কেটে রাখা হয়। পরীক্ষার হলে বিচলিত হওয়া এড়াতে আগেই মানসিক প্রস্তুতি জরুরি। মনে রাখতে হবে ভর্তি পরীক্ষা তীব্র প্রতিযোগিতামূলক, তাই সময় ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখা চাই। প্রশ্নের ধরন বুঝে কৌশল ঠিক করলে উপকৃত হতে পারেন।
পরীক্ষার পরবর্তী সময়ে কী করব?
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তিসংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে নিয়মিত খোঁজ রাখতে হবে। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের নম্বরপত্র, সনদপত্র, প্রশংসাপত্র, ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র, ছবি, বিভিন্ন ফি পরিশোধের সংশ্লিষ্ট ডকুমেন্টস গুছিয়ে রাখা ভালো; যেসব ডকুমেন্টের সত্যায়িত করা প্রয়োজন সেগুলো কয়েক কপি সত্যায়িত করে রাখলে শেষের দিকে অনেকটা ঝামেলামুক্ত থাকা যাবে। বিষয় ও বিশ্ববিদ্যালয় বাছাইয়ের সময় সতর্ক থাকতে হবে, এ জন্য অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের পরামর্শ এবং সংশ্লিষ্ট নির্দেশনা মান্য করলে পরবর্তীকালে জটিলতা কমবে। পুরো ভর্তি প্রক্রিয়ায় শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়, তাই শুরুর সময়ে কাজ করা গুরুত্বপূর্ণ।
অভিভাবকদের প্রতি পরামর্শ
এইচএসসি পরীক্ষার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি শুরু করতে হয়, প্রচলিত ধারণাটি সঠিক নয়। বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ জ্ঞান, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে ন্যূনতম দক্ষতা না থাকলে প্রস্তুতিতে পেছনে পড়ে যাওয়ার বিষয়টি অবধারিত। বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বপ্নের বিষয়ে ভর্তি নিশ্চিত করার জন্য প্রস্তুতি যেন শুরু হয় গোড়া থেকেই। তাই ছোটবেলা থেকেই আপনার সন্তানেরা পাঠ্যবইগুলো সঠিকভাবে বুঝে আত্মস্থ করছে কি না, মৌলিক দক্ষতাগুলো অর্জন করছে কি না, সে বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখা চাই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর বিষয় পছন্দের সময় বেশ কয়েকটি বিষয়ের বিচার-বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যেমন—শিক্ষার্থীর মেরিট পজিশন ও পছন্দ, বর্তমান ও ভবিষ্যতে বাজারের চাহিদা, ভবিষ্যতে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ প্রভৃতি। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের ওপর যেন কোনো বিষয় চাপিয়ে না দেওয়া হয়। বিষয় ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনে অভিজ্ঞদের পরামর্শ গ্রহণ করাও গুরুত্বপূর্ণ।
স্বপ্নের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আকাঙ্ক্ষিত বিষয়ে ভর্তি নিশ্চিত করার জন্য চাই অবিচল ইচ্ছা ও ধারাবাহিক অধ্যবসায়। সঠিক নির্দেশনা অনুযায়ী কঠোর
পরিশ্রমের মাধ্যমে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারলে কাঙ্ক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন অসম্ভব কিছু নয়।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক , জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়
অনুলিখন: মো. আশিকুর রহমান
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
৭ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
১১ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
১১ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
১১ দিন আগে