রাহুল শর্মা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
হল দখল, বিশ্ববিদ্যালয়ে আধিপত্য বিস্তার থেকে শুরু করে চাঁদাবাজি, নিয়োগ, দরপত্রে ভাগ বসানোসহ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে বারবার নাম আসছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের। গত মঙ্গলবার থেকে তিন দিন ক্যাম্পাসে অবস্থানকালে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বেপরোয়া কর্মকাণ্ডে সবাই অসহায়। কারণ, ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় জমলেও কোনো ব্যবস্থাই নেয় না প্রশাসন।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, ছাত্রত্ব শেষ হলেও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের অর্ধশত নেতা বছরের পর বছর ক্যাম্পাসে ঘাঁটি গেড়ে আছেন। কেউ কেউ ক্যাম্পাসে আছেন অর্ধযুগ, এমনকি দেড় যুগ ধরে। এ কারণে ছাত্রলীগকে অনেকে ‘আদু ভাইদের আখড়া’ বলে থাকেন। ওই নেতারা আবাসিক হলের কক্ষ এককভাবে দখলে রেখে মাদক কারবারসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন।
সূত্রমতে, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর পাস করেন ২০১৩ সালে। আর সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন মার্কেটিং বিভাগ থেকে স্নাতক শেষ করেন ২০১৬ সালে। এরপর তিনি স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেননি। ছাত্রলীগের একাধিক নেতার দাবি, বর্তমান কমিটির আরও অন্তত ৫০ জনের নিয়মিত ছাত্রত্ব নেই।
অছাত্র হয়েও হলে থাকার বিষয়ে রেজাউল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রশাসন সিট বরাদ্দ দিলে নতুন শিক্ষার্থীরা হলে উঠবে। সে ক্ষেত্রে ছাত্রলীগ সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে। তাঁর দাবি, অন্যান্য অভিযোগ মিথ্যা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নূরুল আজিম সিকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, খুব শিগগির সিন্ডিকেটে হলের সিটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, এরপর প্রশাসনিক ব্যবস্থা। আর কারও বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দরপত্র ও নিয়োগ-বাণিজ্যে ভাগ
শিক্ষক-শিক্ষার্থী, প্রশাসন, ঠিকাদারসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নকাজের দরপত্র ও নিয়োগ-বাণিজ্যের ভাগ পেতে মরিয়া ছাত্রলীগ। এ জন্য তারা একাধিকবার সংঘর্ষেও জড়িয়েছে। পছন্দের প্রার্থীকে শিক্ষক পদে নিয়োগ না দেওয়ায় উপাচার্যের দপ্তরে ভাঙচুরও চালিয়েছে, আটকে দেওয়া হয়েছে শাটল ট্রেন। এ ছাড়া ক্যাম্পাসে বিভিন্ন দোকান থেকে মাসোহারা নেওয়ারও অভিযোগ আছে ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে।
সূত্রমতে, ক্যাম্পাসে গত দুই দশকে আটটি বড় প্রকল্পে মোট ২২৩ কোটি ৮১ লাখ টাকার কাজ হয়েছে। এখনো চলছে চার প্রকল্পসহ সৌন্দর্যবর্ধন ও সংস্কারকাজ। অভিযোগ আছে, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন সময়ে এসব কাজ থেকে চাঁদা দাবি করে কাজ বন্ধ করার হুমকিও দিয়েছেন। এসব নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বেশ কয়েকবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বিভিন্ন ঠিকাদার। এ ছাড়া নিয়োগ দিতে গেলেই ভাগ চান ছাত্রলীগ নেতারা। এ জন্য তারা বিভিন্নভাবে প্রশাসনকে চাপে রাখেন। অভিযোগ আছে, গত দুই বছরে প্রশাসন শিক্ষকসহ বিভিন্ন পদে যে ১৮৭ জনকে নিয়োগ দিয়েছে, এর মধ্যে অন্তত ৫০টি বাগিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতারা।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একাধিক শীর্ষ ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, চাঁদা না পেয়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়া ছাত্রলীগের রুটিন ওয়ার্কে পরিণত হয়েছে।
এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন একটি অনুষদের তৎকালীন ডিন এস এম সালামত উল্যা ভূঁইয়া। আর নিয়োগে ভাগ চাওয়া তো ওপেন সিক্রেট।
তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক বলেন, এগুলো সত্য নয়, সব মিথ্যা ও বানোয়াট। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে নানা প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে।
সব হল দখলে
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১টি আবাসিক হলই ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রণে। ছাত্রলীগে না জড়ালে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হলে থাকার সুযোগও তেমন হয় না।
ছাত্রলীগের একাধিক সূত্রে জানা যায়, ৭টি ছাত্র হলের ১ হাজার ৮৮টি কক্ষের মধ্যে অন্তত ১ হাজারটি ছাত্রলীগের দখলে। ছাত্রীদের চারটি হলেরও অধিকাংশ কক্ষ ছাত্রলীগের দখলে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে একসময় ইসলামী ছাত্রশিবিরের আধিপত্য ছিল। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর হলসহ ক্যাম্পাসের নিয়ন্ত্রণ নেয় ছাত্রলীগ। ২০১৪ সালের দিকে ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবিরের প্রকাশ্য কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।
একচ্ছত্র আধিপত্য, উপদলীয় সংঘাত
জানা যায়, ক্যাম্পাসে এখন ছাত্রলীগের কোনো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই। তবে প্রায়ই তারা নিজেদের মধ্যে কোন্দলে জড়ায়। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগে দুটি পক্ষ—এক পক্ষ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর এবং অপরটি নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। দুটি পক্ষ আবার ১১টি উপদলে বিভক্ত।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, গত ১৪ বছরে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা নিজেদের মধ্যে অন্তত ৩৫০ বার সংঘর্ষে জড়িয়েছেন। এ নিয়ে ক্যাম্পাস অবরোধ করা হয়েছে অন্তত ৩০ বার। ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে আর প্রতিপক্ষের সঙ্গে সংঘর্ষে ২০১০ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে ক্যাম্পাসে পাঁচটি হত্যাকাণ্ড ঘটে, যার একটিরও বিচার শেষ হয়নি।
জানা যায়, অন্য ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রফ্রন্ট, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, ছাত্র ফেডারেশনের কার্যক্রম নামমাত্র। কালেভদ্রে তাঁদের কয়েকজনকে ঝটিকা মিছিল করতে দেখা যায়। অন্যদিকে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্র সেনা, ছাত্র অধিকার পরিষদের প্রকাশ্যে কোনো কার্যক্রম নেই।
আরও যত অভিযোগ
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে হলের নিদিষ্ট কক্ষে মাদক সেবন ও বেচাকেনা, পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনকালে ধরে ফেলায় শিক্ষককে হুমকি দেওয়া, রাতের আঁধারে গাছ কাটার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে। ছাত্রী হেনস্তার ঘটনায় একাধিক ছাত্রলীগ নেতাকে বহিষ্কারও করেছে কর্তৃপক্ষ। ছাত্রলীগেরই একাধিক নেতা জানান, এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত তাঁদের সংগঠনের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা।
জানা যায়, ক্যাম্পাস ছাত্রশিবিরের নিয়ন্ত্রণে থাকাকালে শাটল ট্রেনের বগি ঘিরে গড়ে উঠেছিল একাধিক গ্রুপ। পরে ছাত্রলীগও বগিকেন্দ্রিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় হয়। এ নিয়ে একাধিকবার সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে ২০১৯ সালে বগিকেন্দ্রিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। তবে এখনো থেমে নেই ছাত্রলীগের বগিকেন্দ্রিক কর্মকাণ্ড।
সার্বিক বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কারও বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলোর বিষয়েও আমরা শিগগির পদক্ষেপ নেব।’
হল দখল, বিশ্ববিদ্যালয়ে আধিপত্য বিস্তার থেকে শুরু করে চাঁদাবাজি, নিয়োগ, দরপত্রে ভাগ বসানোসহ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে বারবার নাম আসছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের। গত মঙ্গলবার থেকে তিন দিন ক্যাম্পাসে অবস্থানকালে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বেপরোয়া কর্মকাণ্ডে সবাই অসহায়। কারণ, ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় জমলেও কোনো ব্যবস্থাই নেয় না প্রশাসন।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, ছাত্রত্ব শেষ হলেও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের অর্ধশত নেতা বছরের পর বছর ক্যাম্পাসে ঘাঁটি গেড়ে আছেন। কেউ কেউ ক্যাম্পাসে আছেন অর্ধযুগ, এমনকি দেড় যুগ ধরে। এ কারণে ছাত্রলীগকে অনেকে ‘আদু ভাইদের আখড়া’ বলে থাকেন। ওই নেতারা আবাসিক হলের কক্ষ এককভাবে দখলে রেখে মাদক কারবারসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন।
সূত্রমতে, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর পাস করেন ২০১৩ সালে। আর সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন মার্কেটিং বিভাগ থেকে স্নাতক শেষ করেন ২০১৬ সালে। এরপর তিনি স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেননি। ছাত্রলীগের একাধিক নেতার দাবি, বর্তমান কমিটির আরও অন্তত ৫০ জনের নিয়মিত ছাত্রত্ব নেই।
অছাত্র হয়েও হলে থাকার বিষয়ে রেজাউল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রশাসন সিট বরাদ্দ দিলে নতুন শিক্ষার্থীরা হলে উঠবে। সে ক্ষেত্রে ছাত্রলীগ সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে। তাঁর দাবি, অন্যান্য অভিযোগ মিথ্যা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নূরুল আজিম সিকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, খুব শিগগির সিন্ডিকেটে হলের সিটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, এরপর প্রশাসনিক ব্যবস্থা। আর কারও বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দরপত্র ও নিয়োগ-বাণিজ্যে ভাগ
শিক্ষক-শিক্ষার্থী, প্রশাসন, ঠিকাদারসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নকাজের দরপত্র ও নিয়োগ-বাণিজ্যের ভাগ পেতে মরিয়া ছাত্রলীগ। এ জন্য তারা একাধিকবার সংঘর্ষেও জড়িয়েছে। পছন্দের প্রার্থীকে শিক্ষক পদে নিয়োগ না দেওয়ায় উপাচার্যের দপ্তরে ভাঙচুরও চালিয়েছে, আটকে দেওয়া হয়েছে শাটল ট্রেন। এ ছাড়া ক্যাম্পাসে বিভিন্ন দোকান থেকে মাসোহারা নেওয়ারও অভিযোগ আছে ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে।
সূত্রমতে, ক্যাম্পাসে গত দুই দশকে আটটি বড় প্রকল্পে মোট ২২৩ কোটি ৮১ লাখ টাকার কাজ হয়েছে। এখনো চলছে চার প্রকল্পসহ সৌন্দর্যবর্ধন ও সংস্কারকাজ। অভিযোগ আছে, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন সময়ে এসব কাজ থেকে চাঁদা দাবি করে কাজ বন্ধ করার হুমকিও দিয়েছেন। এসব নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বেশ কয়েকবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বিভিন্ন ঠিকাদার। এ ছাড়া নিয়োগ দিতে গেলেই ভাগ চান ছাত্রলীগ নেতারা। এ জন্য তারা বিভিন্নভাবে প্রশাসনকে চাপে রাখেন। অভিযোগ আছে, গত দুই বছরে প্রশাসন শিক্ষকসহ বিভিন্ন পদে যে ১৮৭ জনকে নিয়োগ দিয়েছে, এর মধ্যে অন্তত ৫০টি বাগিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতারা।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একাধিক শীর্ষ ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, চাঁদা না পেয়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়া ছাত্রলীগের রুটিন ওয়ার্কে পরিণত হয়েছে।
এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন একটি অনুষদের তৎকালীন ডিন এস এম সালামত উল্যা ভূঁইয়া। আর নিয়োগে ভাগ চাওয়া তো ওপেন সিক্রেট।
তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক বলেন, এগুলো সত্য নয়, সব মিথ্যা ও বানোয়াট। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে নানা প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে।
সব হল দখলে
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১টি আবাসিক হলই ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রণে। ছাত্রলীগে না জড়ালে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হলে থাকার সুযোগও তেমন হয় না।
ছাত্রলীগের একাধিক সূত্রে জানা যায়, ৭টি ছাত্র হলের ১ হাজার ৮৮টি কক্ষের মধ্যে অন্তত ১ হাজারটি ছাত্রলীগের দখলে। ছাত্রীদের চারটি হলেরও অধিকাংশ কক্ষ ছাত্রলীগের দখলে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে একসময় ইসলামী ছাত্রশিবিরের আধিপত্য ছিল। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর হলসহ ক্যাম্পাসের নিয়ন্ত্রণ নেয় ছাত্রলীগ। ২০১৪ সালের দিকে ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবিরের প্রকাশ্য কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।
একচ্ছত্র আধিপত্য, উপদলীয় সংঘাত
জানা যায়, ক্যাম্পাসে এখন ছাত্রলীগের কোনো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই। তবে প্রায়ই তারা নিজেদের মধ্যে কোন্দলে জড়ায়। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগে দুটি পক্ষ—এক পক্ষ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর এবং অপরটি নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। দুটি পক্ষ আবার ১১টি উপদলে বিভক্ত।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, গত ১৪ বছরে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা নিজেদের মধ্যে অন্তত ৩৫০ বার সংঘর্ষে জড়িয়েছেন। এ নিয়ে ক্যাম্পাস অবরোধ করা হয়েছে অন্তত ৩০ বার। ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে আর প্রতিপক্ষের সঙ্গে সংঘর্ষে ২০১০ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে ক্যাম্পাসে পাঁচটি হত্যাকাণ্ড ঘটে, যার একটিরও বিচার শেষ হয়নি।
জানা যায়, অন্য ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রফ্রন্ট, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, ছাত্র ফেডারেশনের কার্যক্রম নামমাত্র। কালেভদ্রে তাঁদের কয়েকজনকে ঝটিকা মিছিল করতে দেখা যায়। অন্যদিকে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্র সেনা, ছাত্র অধিকার পরিষদের প্রকাশ্যে কোনো কার্যক্রম নেই।
আরও যত অভিযোগ
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে হলের নিদিষ্ট কক্ষে মাদক সেবন ও বেচাকেনা, পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনকালে ধরে ফেলায় শিক্ষককে হুমকি দেওয়া, রাতের আঁধারে গাছ কাটার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে। ছাত্রী হেনস্তার ঘটনায় একাধিক ছাত্রলীগ নেতাকে বহিষ্কারও করেছে কর্তৃপক্ষ। ছাত্রলীগেরই একাধিক নেতা জানান, এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত তাঁদের সংগঠনের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা।
জানা যায়, ক্যাম্পাস ছাত্রশিবিরের নিয়ন্ত্রণে থাকাকালে শাটল ট্রেনের বগি ঘিরে গড়ে উঠেছিল একাধিক গ্রুপ। পরে ছাত্রলীগও বগিকেন্দ্রিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় হয়। এ নিয়ে একাধিকবার সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে ২০১৯ সালে বগিকেন্দ্রিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। তবে এখনো থেমে নেই ছাত্রলীগের বগিকেন্দ্রিক কর্মকাণ্ড।
সার্বিক বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কারও বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলোর বিষয়েও আমরা শিগগির পদক্ষেপ নেব।’
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৪ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৪ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৪ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৪ দিন আগে