দগ্ধ এক নারীর মৃত্যু ভবনমালিক রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ০৪ নভেম্বর ২০২১, ১০: ২৩
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২১, ১১: ৫৫

নগরীর উত্তর কাট্টলীতে বাসায় জমে থাকা গ্যাস বিম্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ সাজেদা বেগম (৪৯) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ভবন মালিক মমতাজ মিয়ার (৫৭) একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমান এ আদেশ দেন।

মঙ্গলবার গভীর রাতে মরিয়ম ভিলা নামের ছয়তলা ওই ভবনের ওই মালিককে গ্রেপ্তার করা হয়।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) কামরুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, আকবর শাহ থানা-পুলিশ আসামির তিন দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে সতর্কতার সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন।

আসামির আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, ‘আমরা জামিনের আবেদন করেছি। মামলার সাবগুলো ধারা জামিনযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও আদালত আসামির জামিন মঞ্জুর করেননি। রিমান্ড শেষে আমরা আবার জামিন চাইব।’ জামিনযোগ্য ধারার মামলায় রিমান্ড চাওয়ার ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি।

আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহির হোসেন বলেন, গত সোমবার রাতে মরিয়ম ভিলায় একই পরিবারের ৬ জন অগ্নিদগ্ধ হন। এদের মধ্যে সাজেদা বেগম (৪২) গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ও হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

পরে নিহতের স্বামী জামাল শেখ রাতে থানায় মামলা করলে এই মামলায় ভবন মালিক মমতাজ মিয়াকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এই মামলায় মমতাজের শ্যালক ও বাসাটির তত্ত্বাবধায়ক মো. বখতিয়ার মিয়াকেও আসামি করা হয়েছে। তবে তাঁরা পলাতক আছেন।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, গ্যাস লিকেজ হওয়ার বিষয়ে কেয়ারটেকার ও বাড়িওয়ালাকে বারবার অভিযোগ দেওয়ার পরও তারা মেরামতের ব্যবস্থা নেননি।

জানা যায়, এ ঘটনায় দগ্ধদের মধ্যে শাহজাহান শেখ (২৫), মাহিয়া আক্তার (৯), জীবন শেখ (১৪), স্বাধীন শেখ (১৭) ও দিলরুবা বেগম (১৮) এখনো বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন। প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা, রান্না ঘরের জমে থাকা গ্যাসের কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। বাসার একটি কক্ষে মশা মারার ইলেকট্রিক ব্যাট চালু করার সঙ্গে সঙ্গে আগুনের সূত্রপাত হয় হয়। গত বছরের নভেম্বরেও একই ভবনে গ্যাস বিস্ফোরণে নয়জন দগ্ধ হন। এদের মধ্যে পরে তিনজনের মৃত্যু হয়।

এর আগে ছয়জন দগ্ধ হওয়ার পর গত মঙ্গলবার ভবনটি পরিদর্শন করে গ্যাসের রাইজার বন্ধ করে দেয় কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) একটি দল। সেই সঙ্গে গ্যাস লাইনের সংযোগটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এই ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেজিডিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (কোম্পানি সচিব) প্রকৌশরী রওনাকুল ইসলাম। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই বাসায় গ্যাসের লাইনের কোনো সমস্যা ছিল না। লাইন ঠিকঠাকমতো পেয়েছি। আমাদের ধারণা, চুলা চালু থাকায় গ্যাস জমে গিয়েছিল। ওই জমে থাকা গ্যাস থেকে আগুন লাগতে পারে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত