জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার তারাকান্দিতে অবস্থিত যমুনা সারকারখানার যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি (সিবিএ) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ফের দুই পক্ষের মধ্যে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহতদের সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

গত শুক্রবার রাতে যমুনা সার কারখানা এলাকার চরপাড়া গ্রামে এই সংঘর্ষ হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সরিষাবাড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল মজিদ। তিনি বলেন, স্থানীয় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এলাকায় চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

জানা গেছে, যমুনা সার কারখানার নিয়ন্ত্রণ নিতে শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সিবিএ নির্বাচনকে সামনে রেখে মড়িয়া আওয়ামী লীগের দুই নেতা। স্থানীয় এই দুই নেতার মধ্যে একজন হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ট্রাক ও ট্যাংকলরি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম। অপরজন উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য, পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও তারাকান্দি ট্রাক ও ট্যাংকলরি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম মানিক। এ দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে।

এ বিরোধকে কেন্দ্র করে গত ৭ জানুয়ারি তারাকান্দি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি যমুনা সার কারখানার নিয়ন্ত্রণ নিতে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় হামলা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশসহ উভয় পক্ষে ৩০ জন আহত হন। এরপর থেকে কারখানা এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করে আসছে। চলমান ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফের ওই দুই পক্ষের সমর্থকেরা লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা ও সংঘর্ষে লিপ্ত হন। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে জহুরুল ইসলাম, শিশির মিয়া, সাগর মিয়া, লালন মিয়া, রফিকুল, কামরুল হাসানসহ ১০ জন গুরুতর আহত হন। ওই এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার রাতে হঠাৎ করে আশরাফুল ইসলাম মানিকের সমর্থকেরা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। পরে তাঁর লোকজনদের ওপর হামলা চালিয়ে লাঠিসোঁটা দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম মানিক বলেন, চরপাড়া গ্রামে পারিবারিক ঘটনার সূত্র ধরে হামলা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার সঙ্গে কোনো সিবিএ নির্বাচন ও যমুনা সারকারখানার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। রফিকুল ইসলাম ঘটনাটি অন্যদিকে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।

সরিষাবাড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল মজিদ সাংবাদিকদের বলেন, স্থানীয় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এলাকায় চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে কোনো পক্ষ অভিযোগ করেনি।