নৌকার বিদ্রোহীর জয় ছেলের বিরুদ্ধে মামলা

রাজশাহী প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৪ নভেম্বর ২০২১, ০৯: ০৩
আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২১, ১৯: ১২

রাজশাহীর তানোর উপজেলার কলমা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানের ছেলে মাসুদ রানা গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলা চেয়ারম্যানের কেব্‌ল লাইন কন্ট্রোল রুমের স্টোরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

তবে মাসুদ রানা চৌধুরীর দাবি, তাঁর বাবা খাদেমুন্নবী চৌধুরী বাবু আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার ভোটের ফলাফল পেতে বাবার সঙ্গে তিনি মধ্যরাত পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়েই ছিলেন। সেখানে বসে থেকে তিনি কীভাবে চেয়ারম্যানের রুমের স্টোরে আগুন দেবেন! এ মামলা প্রতিহিংসামূলক।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি লুৎফর হায়দার রশীদ ময়না বাদী হয়ে গত শুক্রবার রাতে এ মামলাটি দায়ের করেন। তিনি তানোরের কলমা ইউপির চোরখৈর গ্রামের বাসিন্দা। নৌকার প্রার্থী মাইনুল ইসলাম তাঁর অনুসারী। মাসুদ রানার বাড়িও একই গ্রামে।

মাসুদ রানার বাবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে বিজয় ছিনিয়ে নেন। এরপরই তাঁর ছেলেসহ ছয়জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৬ থেকে ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন উপজেলা চেয়ারম্যান। মামলার এক নম্বর আসামি করা হয়েছে মাসুদ রানাকে।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তাঁর এজাহারে উল্লেখ করেছেন, মাসুদ রানা নিজে তাঁর স্টোরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়েছেন। আর অন্য আসামিরা সিসি ক্যামেরা ভেঙে কর্মচারীকে মারধর করেছেন। তিন লাখ টাকা লুট করেছেন। এ ছাড়া তিনটি ইডিএফ মেশিন নিয়ে গেছেন। এর প্রতিটির দাম ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। আর আগুনে বিভিন্ন মেশিনসহ আসবাবপত্র পুড়ে গেছে। এতে ক্ষতি হয়েছে আরও ১০ লাখ টাকার।

স্টোরে আগুনের ক্ষতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের তানোর স্টেশনের স্টেশন অফিসার জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘একটু আগুন ধরেছিল। আমরা যাওয়ার আগেই স্থানীয় লোকজন আগুন নিভিয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এস্টিমেট করার মতো না।’

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য মামলার বাদী লুৎফর হায়দার রশীদ ময়নার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

মামলার প্রধান আসামি মাসুদ রানা চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচনের আগে থেকেই আমাদের নানারকম হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, ভোটে বিড়াল বানিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু ভোটে উপজেলা চেয়ারম্যানের নিজের কেন্দ্রেই নৌকা হেরেছে। তাঁরা লজ্জায় মুখ দেখাতে পারছেন না। এ লজ্জা ঢাকতে এ রকম একটা মিথ্যা মামলা করে জনগণের দৃষ্টি ফেরানো হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মামলায় ঘটনার সময় রাত ৯টা ৪০ মিনিট বলা হয়েছে। সেদিন আমি সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়েই ছিলাম।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পংকজ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, ‘ফল ঘোষণার দিন রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিসে আমি খাদেমুন্নবী চৌধুরীকে দেখেছি। তাঁর ছেলের চেহারা চিনি না। তবে আমার স্টাফ জানিয়েছে, তিনিও উপজেলায় ছিলেন। সাড়ে ১১টায় ফল ঘোষণার পর তাঁরা ফিরেছেন।’ তাহলে মামলা কেন, জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, ‘অভিযোগ যে কেউ করতেই পারে। পুলিশ তদন্ত করবে।’

জেলা পুলিশের মুখপাত্র ইফতেখায়ের আলম বলেন, বিষয়টা তদন্ত করা হচ্ছে। কেউ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত না হলে তদন্তে বেরিয়ে আসবে। সে অনুযায়ী পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত