দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতিবাদে রাজশাহীতে এখনো নানা সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে সহিংসতায় জড়িত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো গাফিলতি থাকলে এ বিষয়েও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রাষ্ট্রের কাছে দাবি জানানো হয়।

সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতিবাদে রাজশাহী কলেজ রিপোর্টার্স ইউনিটি গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় রাজশাহী কলেজের বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের সামনে একটি মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুল খালেকের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য দেন রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হক, রাজশাহী টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদী হাসান শ্যামল, সিনিয়র সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈয়বুর রহমান, সিনিয়র ফটোসাংবাদিক সেলিম জাহাঙ্গীর, রাজশাহী মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার ঘোষ, মুক্তিযুদ্ধের তথ্য সংগ্রাহক ওলিউর রহমান বাবু, রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি বাবর মাহমুদ প্রমুখ। সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান সোহাগ ও অর্থ সম্পাদক মাহাবুল ইসলাম কর্মসূচি পরিচালনা করেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে রাজশাহী নগরীর সাহেব বাজার জিয়োপয়েন্টে মানববন্ধন করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শহীদ জামিল ব্রিগেড। এতে সভাপতিত্ব করেন শহীদ জামিল ব্রিগেডের প্রধান সমন্বয়ক দেবাশিষ প্রামানিক দেবু। বক্তব্য দেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির রাজশাহী জেলার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আশরাফুল হক তোতা, প্রমুখ।

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট রাখার পক্ষে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ)। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন স্বাচিপের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ডা. তবিবুর রহমান শেখ, রাজশাহী বিএমএর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. আতাউর রহমান বাবু প্রমুখ।

এদিকে আশির দশকের ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ, রাজশাহীর উদ্যোগে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় নগরীর গণকপাড়ার মোড়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সাবেক ছাত্রনেতা সরিফুল ইসলাম বাবু। বক্তব্য দেন সাবেক ছাত্রনেতা রাগীব আহসান মুন্না, আসাদুজ্জামান আসাদ, হাবিবুর রহমান বাবু, কামরান হাফিজ ইয়ামিন, আব্দুল্লাহ আল মাসুদ শিবলী প্রমুখ।

এর আগে বুধবার দুপুর ১২টায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আয়োজনে প্রতিষ্ঠানটির মিলনায়তনে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে আলোচনা সভায়ও সম্প্রীতির কথা বলা হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। যাঁর যাঁর ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করবে, এটাই ধর্মের শিক্ষা। ইসলাম ধর্মে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের কোনো স্থান নেই। যাঁরা সামাজিক পরিমণ্ডলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন ও নৈতিকতা বর্জিত অনৈসলামিক কর্মকাণ্ড চালান, তাঁরা কখনো শান্তির ধর্ম ইসলামের অনুসারী হতে পারেন না। ধর্ম কখনো অশান্তি ও রক্তপাতের উদ্দেশ্যে সৃষ্টি হয় নাই। কোনো ধর্ম গ্রহণ বা বর্জন করলে ইসলামে এর কোনো ধরনের শাস্তির বিধান নেই।’