এক সমিতির বাসের তিন শ্রমিককে অপর সমিতির সদস্যরা মারধর করেছে বলে অভিযোগে উঠেছে। এ ঘটনায় কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নাটোর থেকে অভ্যন্তরীণ চারটি রুটে সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে নাটোর জেলা বাস মালিক সমিতি। হঠাৎ করে বাস বন্ধ করার কারণে দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ যাত্রীরা।

তবে নাটোর হয়ে অন্য জেলার বাস চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

এদিকে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে নাটোর-বগুড়া রুটের যাত্রীরা। এ পথে অধিকাংশই জেলা সমিতির গাড়ি চলাচল করায় যাত্রীরা নির্ভরশীল জেলার বাসের ওপর। মেইল গাড়ি না থামায় ও বিআরটিসি বাসের আসনসংখ্যা নির্ধারিত থাকায় দুর্ভোগ বেড়েছে।

রতন সরকার নামে এক যাত্রী বলেন, সিংড়ার চৌগ্রাম পর্যন্ত যাওয়ার জন্য মেইল গাড়ির অপেক্ষা করতে হচ্ছে। অথচ মেইল গাড়ি নির্ধারিত পয়েন্ট ছাড়া থামে না। জেলার গাড়ি চললে এ দুর্ভোগ হতো না। তাই অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে বিকল্প পথে যেতে হচ্ছে।

অপর যাত্রী নুরুল ইসলাম বলেন, পূর্ব ঘোষণা ছাড়া বাস চলাচল বন্ধ করা মানে যাত্রীদের জিম্মি করা। ভবিষ্যতে তাঁরা যেন এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ঘোষণা দেয়। তাহলে সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগ কিছুটা হলেও কমে আসবে।

জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি লক্ষণ পোদ্দার বলেন, বনলতা ট্রাভেলস নামে নাটোর জেলা বাস মালিক সমিতির একটি বাস গত বুধবার সন্ধ্যায় সিংড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। এ সময় শেরকোল এলাকায় বাস থামিয়ে সিংড়া মোটর মালিক সমিতির লোকজন বনলতা ট্রাভেলসের তিন বাস শ্রমিককে মারধর করেন। এর প্রতিবাদে জেলা বাস মালিক সমিতি সব বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।

জানতে চাইলে শ্রমিক মারধরের কথা অস্বীকার করেছেন নাটোর জেলা মোটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাসান ইমাম। তিনি বলেন, নিজেদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে বাস চলাচল বন্ধ রেখে মোটর মালিক সমিতির ওপর দায় চাপানো হচ্ছে।

হাসান ইমাম অভিযোগ করেন, ‘বেশ কয়েক দিন আগে থেকে নাটোর বাস মালিক সমিতি কোনো চিঠি বা মৌখিকভাবে না জানিয়ে হঠাৎ যাত্রী পরিবহন শুরু করে। বিষয়টি আমরা নাটোর মালিক সমিতিকে জানিয়েছি। তারা কোনো কথার কর্ণপাত করেনি। তবুও আমরা কোনো বাস চলাচলে বাধা দিইনি।’

জেলা পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, দুই সমিতির দ্বন্দ্বের কারণে বাস চলাচলে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। উভয় সমিতিকে নিয়ে আলোচনায় বসে বিষয়টি সুরাহা করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।