মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী
ইতিহাসে কখনো কোনো ঘটনার হুবহু পুনরাবৃত্তি হয় না, এক দেশের ভালোমন্দের সঙ্গে অন্য দেশের ভালোমন্দের তুলনা করা যায় না। প্রতিটি রাষ্ট্রের নিজস্ব সবলতা ও দুর্বলতা নিজ দেশের রাজনৈতিক ও সরকারের নীতিকৌশলের ওপর নির্ভর করে অনেকটাই। এর সঙ্গে অবশ্য ভূরাজনৈতিক এবং আন্তর্জাতিক শক্তিসমূহের যোগাযোগ, সংযোগ ও বোঝাপড়া নানাভাবে ক্রিয়া করতে পারে। সে সঙ্গে শাসকগোষ্ঠীর দেশ পরিচালনার অভিজ্ঞতা এবং ভবিষ্যৎ দেখতে পারা না-পারার বিষয়গুলোও বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এক দেশে গভীর রাজনৈতিক সংকট দেখা দিলে অন্য দেশেও হুবহু তা ঘটার কোনো যথাযথ কারণ নেই।
গত কয়েক মাসে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট শ্রীলঙ্কাকে হুমকির সম্মুখীন করেছে। অথচ দেশটি একটি উচ্চ মধ্যম আয়ের রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত ছিল। দেশটির সঙ্গে ইউরোপের অনেক দেশের তুলনা করা হতো। যেখানে শতভাগ মানুষ শিক্ষিত। এর ব্যবসা-বাণিজ্য আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও যথেষ্ট বিকাশ লাভ করেছিল। কিন্তু সেই দেশটি হঠাৎ করে একটি দেউলিয়া রাষ্ট্রে পরিণত হবে, এটি কেউ ভাবতে পারেনি। একটি রাষ্ট্রে হঠাৎ করে সবকিছু এতটা বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে, তা-ও ভাবা ঠিক নয়। অতীতের কোনো না-কোনো সমস্যা সরকার যথাযথভাবে নিরূপণ করতে না পারার কারণে সংকট ভেতরে-ভেতরে তীব্রতর হয়েছে। এর ফলে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে অস্থিরতা সৃষ্টির ক্ষেত্র তৈরিতে ভূমিকা রেখেছে। শ্রীলঙ্কায় দীর্ঘদিন তামিল এবং লঙ্কানদের মধ্যে জাতিগত বিরোধ এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে রূপ নিয়েছিল। ২০০৫ সালে শ্রীলঙ্কান ফ্রিডম পার্টির নেতা মাহিন্দা রাজাপক্ষে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর এই যুদ্ধের পরিসমাপ্তি টানতে উদ্যোগ নেন। ২০০৯ সালে সামরিক শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমেই গৃহযুদ্ধের আপাতসমাপ্তি ঘটে। মাহিন্দা রাজাপক্ষে শ্রীলঙ্কার মানুষের কাছে নায়ক হয়ে ওঠেন। ২০১০ সালের নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন।
দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট থাকাকালে মাহিন্দা তাঁর অবস্থানকে আরও সুসংহত করেন। ২০১৫ সালের নির্বাচনে তাঁরই মন্ত্রিসভার সদস্য মাইথ্রিরিপালা সিরিসেনার কাছে তিনি পরাজিত হন। এরপর ২০১৯ সালের নির্বাচনে তাঁর ছোট ভাই গোতাবায়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর বড় ভাই মাহিন্দাকেই সরকার গঠনে আমন্ত্রণ জানান। প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী পদে দুই ভাই অবস্থানকালে পরিবার এবং নিকটাত্মীয়দের রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন করা হয়। এর মধ্যে বাসিল রাজাপক্ষেকে অর্থমন্ত্রী ও চামাল রাজাপক্ষেকে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন করা হয়। নামাল রাজাপক্ষে নামের যাঁকে পরিবারের ভবিষ্যৎ হিসেবে দেখা হয়, তাঁর বিরুদ্ধেও বিদেশে অর্থ পাচার ও দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ আছে। মাহিন্দা রাজাপক্ষে ২০১০ সালে দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হওয়ার পর মাত্রাতিরিক্ত বৈদেশিক ঋণ শ্রীলঙ্কায় নানা ধরনের বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য গ্রহণ করেন। মাহিন্দা রাজাপক্ষে ২০০৫ সালে নির্বাচিত হয়ে আসার পর সমুদ্রের দেশ শ্রীলঙ্কাকে সিঙ্গাপুরের মতো সমুদ্রবন্দরবান্ধব করার লক্ষ্যেই চীনের সঙ্গে হাম্বানটোটা বন্দর প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। প্রথম ধাপে খরচ পড়েছিল ৩৬০ মিলিয়ন ডলার। ২০১২ সালে এটির আয় ১১ দশমিক ৮১ মিলিয়ন ডলার হলেও প্রশাসনিক ব্যয় হয় ১০ মিলিয়ন ডলার। এই বন্দর নির্মাণ সম্পন্ন ও পরিচালনা নিয়ে শ্রীলঙ্কা অর্থনৈতিকভাবে চরম সংকটে পড়ে। শেষ পর্যন্ত চীনা কোম্পানির কাছে তা ৯৯ বছরের লিজ দিতে বাধ্য হয়। অনুরূপভাবে হাম্বানটোটা থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে ২০ কোটি ডলারের চীনা ঋণে বানানো হয়েছে রাজাপক্ষে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।
তবে বিমানবন্দরটি এখন বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছে। ২০১৯ সালে ইস্টার বোমা হামলায় ২৭০ জনের মতো পর্যটক ও সাধারণ মানুষ নিহত হওয়ায় শ্রীলঙ্কা আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার সংকটে পড়ে। ২০১৯ সালের নির্বাচনে গোতাবায়া কতগুলো অবিবেচনাপ্রসূত প্রতিশ্রুতি দেন, যা দেশের অর্থনীতির ওপর ভয়ানক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এর একটি হচ্ছে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে জৈব সার ব্যবহার করা। অন্যটি, ভ্যাট-ট্যাক্স কমিয়ে দেওয়া। ফলে দেশে কৃষি উৎপাদন যেমন রাসায়নিক সারের অভাবে কমে যায়, একইভাবে রাষ্ট্রের রাজস্ব আয়ও কমে যায়। অন্যদিকে ২০২০ সাল থেকে দুই বছর করোনার ঢেউ শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। দেশটি মূলত পর্যটন ও চা-শিল্পে একসময় সমৃদ্ধ ছিল। সেটি করোনার অভিঘাতে মুখ থুবড়ে পড়ে। জৈব সার প্রয়োগের ফলে ধান, শস্য, শাকসবজি এবং চা-শিল্পের উৎপাদনে বড় ধরনের ধস নামিয়ে দেয়। গোতাবায়ার এসব নীতি ও পরিকল্পনা চাপিয়ে দেওয়ার পরিণতি কত ভয়াবহ হতে পারে, তা তিনি ভেবে দেখেননি। করোনা সংক্রমণ মোকাবিলাতেও সরকার ততটা সাফল্য দেখাতে পারেনি।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর দেশের অর্থনীতির ওপর নতুন করে সংকট তৈরি হয়। দেশের অর্থনৈতিক এই সংকট সামাল দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কাগজের নোট ছাপায়। মুদ্রাস্ফীতি এখন বেড়ে ২৯ দশমিক ৮ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। মার্চ মাসে শ্রীলঙ্কার রিজার্ভ নেমে দাঁড়ায় ১ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারে। দেশটি এখন বিদেশি ঋণ পরিশোধ করা দূরে থাক, আমদানির সক্ষমতাও হারিয়েছে। শ্রীলঙ্কার দায় এখন ৫ হাজার ১০০ কোটি ডলার, যা দেওয়ার ক্ষমতা দেশটির নেই। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক গত বছরের আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে শ্রীলঙ্কাকে ২০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে। যেটি এখন তারা পরিশোধ করতে পারছে না। শ্রীলঙ্কায় এই মুহূর্তে চরম খাদ্য, ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর সংকট চলছে, যা বাজারে দুষ্প্রাপ্য। সম্প্রতি বাংলাদেশ ২০ কোটি টাকার ওষুধ শ্রীলঙ্কায় পাঠিয়েছে।
শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক অস্থিরতা অতীতের সব মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। সেখানে দীর্ঘদিন মানুষ রাস্তায় গোতাবায়া এবং মাহিন্দার সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে পদত্যাগ করার পর সহিংসতা আরও বেড়ে যায়। তাঁর বাসভবনে হামলা হয়। তিনি একটি নৌঘাঁটিতে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় সপরিবার আশ্রয় নেন। একজন সাংসদসহ আট ব্যক্তি সহিংসতায় প্রাণ হারান। আন্দোলনকারীরা ফুঁসে ওঠায় দেশের অভ্যন্তরে সহিংসতার বিস্তার ঘটেছে। সহিংসতা দমনে সেনাবাহিনী ও পুলিশকে গুলি চালানোর ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে আইএমএফ এবং বিশ্বব্যাংক শ্রীলঙ্কায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কোনো ঋণ দেওয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে। শ্রীলঙ্কার পাশে এ মুহূর্তে বড় দেশগুলো নেই বললেই চলে। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া পদত্যাগ করার আগপর্যন্ত বিরোধী দলগুলোর সরকারের কোনো দায়িত্ব নেওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। সংসদের স্পিকার বিরোধী দলকে দায়িত্ব নেওয়ার যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তা যত দ্রুত বাস্তবায়িত হবে ততই মঙ্গল। দ্রুত রাজনৈতিক সমঝোতা না হলে দেশটির
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর পদত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছেন।
শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি এমন জটিল আকার ধারণ করার পেছনে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার পরিবার এবং প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দার সরকারের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি এবং অপরিণামদর্শী নীতিকৌশল যেমন দায়ী, তেমনি এর পেছনে আন্তর্জাতিক শক্তিসমূহের কারও কারও ভূমিকা ও ইন্ধনও থাকতে পারে। এ অবস্থায় শ্রীলঙ্কা যত দ্রুত সংকট মোকাবিলায় কার্যকর ভূমিকা নিতে পারবে এবং আন্তর্জাতিক সাহায্যদাতা সংস্থাগুলোর আস্থা অর্জন করতে পারবে, তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। শ্রীলঙ্কার এই জটিল পরিস্থিতির সঙ্গে বাংলাদেশের পরিস্থিতির মিল কেউ কেউ খুঁজে দেখার চেষ্টা করেন। কিন্তু সেই মিল-অমিলের বিষয়গুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। শ্রীলঙ্কার উত্তাল পরিস্থিতি থেকে বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল যেভাবে উল্লাস প্রকাশ করছে এবং বাংলাদেশেও এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে বলে দাবি করছে, তাতে তাদের বগল বাজানোর মানসিকতারই প্রকাশ ঘটেছে। এখনই তারা সরকারের বঙ্গোপসাগরে নিক্ষিপ্ত হওয়ার কল্পনা করছে। কিন্তু শ্রীলঙ্কার মানুষ বর্তমানে যে অর্থনৈতিক এবং জীবনযাত্রার সংকটে পড়ছে, তাতে জনজীবনের কষ্টের দিকটি কত অমানবিক, সেটি যাঁরা বুঝতে চান না, তাঁরাই বাংলাদেশকে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলছেন।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতা মোটেও শ্রীলঙ্কার মতো নয়। কোভিড-উত্তরকালে বিশ্ব অর্থনীতির সংকটের কারণে আমাদের দেশেও বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য উচ্চমূল্যে আমদানি করতে হচ্ছে। ভোজ্যতেল, আটা, ময়দাসহ বেশ কিছু আমদানি করা পণ্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। কিন্তু দেশে ধান, খাদ্যশস্য, শাকসবজিসহ অন্যান্য পণ্যসামগ্রী যথেষ্ট উৎপন্ন হয়েছে, বাজারে সেসবের কোনো ঘাটতি নেই। তা ছাড়া, আমাদের দেশে যেসব মেগা প্রকল্প চলছে সেগুলোর নির্মাণ এখন শেষ পর্যায়ে, কোনো কোনোটি শিগগিরই উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। দেশের রিজার্ভও এখন ৪১ বিলিয়ন ডলারের ওপরে রয়েছে। উচ্চমূল্যে বেশ কিছু পণ্য আমদানি করতে হয়।
এ কারণে রিজার্ভে কিছু চাপ পড়লেও বাংলাদেশের রেমিট্যান্সপ্রবাহ এখনো স্বাভাবিক গতিতে চলছে। আমাদের রপ্তানি ব্যয় আমদানির চেয়ে কিছুটা কমে গেছে। কিন্তু এর জন্য দুশ্চিন্তা করার পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। গত দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও বাংলাদেশে পরিবারতন্ত্র ও কর্তৃত্ববাদী শাসন জেঁকে বসেছে, তেমন অভিযোগ সরকারবিরোধী মহল ছাড়া প্রবল নয়। কোভিড-উত্তর পরিস্থিতি কোনো দেশেই স্বাভাবিক নয়। তারপরও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার জরিপে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে ভালো এবং অন্যান্য দেশের মধ্যেও বেশ সন্তোষজনক বলে অভিহিত করা হয়েছে। সরকারের উচিত হবে সব ধরনের অপচয়, দুর্নীতি এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি কমিয়ে আনা, দেশকে বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতির কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যুক্ত না হয়ে দেশের শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং জনগণের দুর্ভোগ বাড়তে না দেওয়া।
ইতিহাসে কখনো কোনো ঘটনার হুবহু পুনরাবৃত্তি হয় না, এক দেশের ভালোমন্দের সঙ্গে অন্য দেশের ভালোমন্দের তুলনা করা যায় না। প্রতিটি রাষ্ট্রের নিজস্ব সবলতা ও দুর্বলতা নিজ দেশের রাজনৈতিক ও সরকারের নীতিকৌশলের ওপর নির্ভর করে অনেকটাই। এর সঙ্গে অবশ্য ভূরাজনৈতিক এবং আন্তর্জাতিক শক্তিসমূহের যোগাযোগ, সংযোগ ও বোঝাপড়া নানাভাবে ক্রিয়া করতে পারে। সে সঙ্গে শাসকগোষ্ঠীর দেশ পরিচালনার অভিজ্ঞতা এবং ভবিষ্যৎ দেখতে পারা না-পারার বিষয়গুলোও বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এক দেশে গভীর রাজনৈতিক সংকট দেখা দিলে অন্য দেশেও হুবহু তা ঘটার কোনো যথাযথ কারণ নেই।
গত কয়েক মাসে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট শ্রীলঙ্কাকে হুমকির সম্মুখীন করেছে। অথচ দেশটি একটি উচ্চ মধ্যম আয়ের রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত ছিল। দেশটির সঙ্গে ইউরোপের অনেক দেশের তুলনা করা হতো। যেখানে শতভাগ মানুষ শিক্ষিত। এর ব্যবসা-বাণিজ্য আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও যথেষ্ট বিকাশ লাভ করেছিল। কিন্তু সেই দেশটি হঠাৎ করে একটি দেউলিয়া রাষ্ট্রে পরিণত হবে, এটি কেউ ভাবতে পারেনি। একটি রাষ্ট্রে হঠাৎ করে সবকিছু এতটা বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে, তা-ও ভাবা ঠিক নয়। অতীতের কোনো না-কোনো সমস্যা সরকার যথাযথভাবে নিরূপণ করতে না পারার কারণে সংকট ভেতরে-ভেতরে তীব্রতর হয়েছে। এর ফলে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে অস্থিরতা সৃষ্টির ক্ষেত্র তৈরিতে ভূমিকা রেখেছে। শ্রীলঙ্কায় দীর্ঘদিন তামিল এবং লঙ্কানদের মধ্যে জাতিগত বিরোধ এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে রূপ নিয়েছিল। ২০০৫ সালে শ্রীলঙ্কান ফ্রিডম পার্টির নেতা মাহিন্দা রাজাপক্ষে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর এই যুদ্ধের পরিসমাপ্তি টানতে উদ্যোগ নেন। ২০০৯ সালে সামরিক শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমেই গৃহযুদ্ধের আপাতসমাপ্তি ঘটে। মাহিন্দা রাজাপক্ষে শ্রীলঙ্কার মানুষের কাছে নায়ক হয়ে ওঠেন। ২০১০ সালের নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন।
দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট থাকাকালে মাহিন্দা তাঁর অবস্থানকে আরও সুসংহত করেন। ২০১৫ সালের নির্বাচনে তাঁরই মন্ত্রিসভার সদস্য মাইথ্রিরিপালা সিরিসেনার কাছে তিনি পরাজিত হন। এরপর ২০১৯ সালের নির্বাচনে তাঁর ছোট ভাই গোতাবায়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর বড় ভাই মাহিন্দাকেই সরকার গঠনে আমন্ত্রণ জানান। প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী পদে দুই ভাই অবস্থানকালে পরিবার এবং নিকটাত্মীয়দের রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন করা হয়। এর মধ্যে বাসিল রাজাপক্ষেকে অর্থমন্ত্রী ও চামাল রাজাপক্ষেকে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন করা হয়। নামাল রাজাপক্ষে নামের যাঁকে পরিবারের ভবিষ্যৎ হিসেবে দেখা হয়, তাঁর বিরুদ্ধেও বিদেশে অর্থ পাচার ও দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ আছে। মাহিন্দা রাজাপক্ষে ২০১০ সালে দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হওয়ার পর মাত্রাতিরিক্ত বৈদেশিক ঋণ শ্রীলঙ্কায় নানা ধরনের বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য গ্রহণ করেন। মাহিন্দা রাজাপক্ষে ২০০৫ সালে নির্বাচিত হয়ে আসার পর সমুদ্রের দেশ শ্রীলঙ্কাকে সিঙ্গাপুরের মতো সমুদ্রবন্দরবান্ধব করার লক্ষ্যেই চীনের সঙ্গে হাম্বানটোটা বন্দর প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। প্রথম ধাপে খরচ পড়েছিল ৩৬০ মিলিয়ন ডলার। ২০১২ সালে এটির আয় ১১ দশমিক ৮১ মিলিয়ন ডলার হলেও প্রশাসনিক ব্যয় হয় ১০ মিলিয়ন ডলার। এই বন্দর নির্মাণ সম্পন্ন ও পরিচালনা নিয়ে শ্রীলঙ্কা অর্থনৈতিকভাবে চরম সংকটে পড়ে। শেষ পর্যন্ত চীনা কোম্পানির কাছে তা ৯৯ বছরের লিজ দিতে বাধ্য হয়। অনুরূপভাবে হাম্বানটোটা থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে ২০ কোটি ডলারের চীনা ঋণে বানানো হয়েছে রাজাপক্ষে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।
তবে বিমানবন্দরটি এখন বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছে। ২০১৯ সালে ইস্টার বোমা হামলায় ২৭০ জনের মতো পর্যটক ও সাধারণ মানুষ নিহত হওয়ায় শ্রীলঙ্কা আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার সংকটে পড়ে। ২০১৯ সালের নির্বাচনে গোতাবায়া কতগুলো অবিবেচনাপ্রসূত প্রতিশ্রুতি দেন, যা দেশের অর্থনীতির ওপর ভয়ানক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এর একটি হচ্ছে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে জৈব সার ব্যবহার করা। অন্যটি, ভ্যাট-ট্যাক্স কমিয়ে দেওয়া। ফলে দেশে কৃষি উৎপাদন যেমন রাসায়নিক সারের অভাবে কমে যায়, একইভাবে রাষ্ট্রের রাজস্ব আয়ও কমে যায়। অন্যদিকে ২০২০ সাল থেকে দুই বছর করোনার ঢেউ শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। দেশটি মূলত পর্যটন ও চা-শিল্পে একসময় সমৃদ্ধ ছিল। সেটি করোনার অভিঘাতে মুখ থুবড়ে পড়ে। জৈব সার প্রয়োগের ফলে ধান, শস্য, শাকসবজি এবং চা-শিল্পের উৎপাদনে বড় ধরনের ধস নামিয়ে দেয়। গোতাবায়ার এসব নীতি ও পরিকল্পনা চাপিয়ে দেওয়ার পরিণতি কত ভয়াবহ হতে পারে, তা তিনি ভেবে দেখেননি। করোনা সংক্রমণ মোকাবিলাতেও সরকার ততটা সাফল্য দেখাতে পারেনি।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর দেশের অর্থনীতির ওপর নতুন করে সংকট তৈরি হয়। দেশের অর্থনৈতিক এই সংকট সামাল দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কাগজের নোট ছাপায়। মুদ্রাস্ফীতি এখন বেড়ে ২৯ দশমিক ৮ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। মার্চ মাসে শ্রীলঙ্কার রিজার্ভ নেমে দাঁড়ায় ১ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারে। দেশটি এখন বিদেশি ঋণ পরিশোধ করা দূরে থাক, আমদানির সক্ষমতাও হারিয়েছে। শ্রীলঙ্কার দায় এখন ৫ হাজার ১০০ কোটি ডলার, যা দেওয়ার ক্ষমতা দেশটির নেই। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক গত বছরের আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে শ্রীলঙ্কাকে ২০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে। যেটি এখন তারা পরিশোধ করতে পারছে না। শ্রীলঙ্কায় এই মুহূর্তে চরম খাদ্য, ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর সংকট চলছে, যা বাজারে দুষ্প্রাপ্য। সম্প্রতি বাংলাদেশ ২০ কোটি টাকার ওষুধ শ্রীলঙ্কায় পাঠিয়েছে।
শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক অস্থিরতা অতীতের সব মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। সেখানে দীর্ঘদিন মানুষ রাস্তায় গোতাবায়া এবং মাহিন্দার সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে পদত্যাগ করার পর সহিংসতা আরও বেড়ে যায়। তাঁর বাসভবনে হামলা হয়। তিনি একটি নৌঘাঁটিতে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় সপরিবার আশ্রয় নেন। একজন সাংসদসহ আট ব্যক্তি সহিংসতায় প্রাণ হারান। আন্দোলনকারীরা ফুঁসে ওঠায় দেশের অভ্যন্তরে সহিংসতার বিস্তার ঘটেছে। সহিংসতা দমনে সেনাবাহিনী ও পুলিশকে গুলি চালানোর ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে আইএমএফ এবং বিশ্বব্যাংক শ্রীলঙ্কায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কোনো ঋণ দেওয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে। শ্রীলঙ্কার পাশে এ মুহূর্তে বড় দেশগুলো নেই বললেই চলে। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া পদত্যাগ করার আগপর্যন্ত বিরোধী দলগুলোর সরকারের কোনো দায়িত্ব নেওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। সংসদের স্পিকার বিরোধী দলকে দায়িত্ব নেওয়ার যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তা যত দ্রুত বাস্তবায়িত হবে ততই মঙ্গল। দ্রুত রাজনৈতিক সমঝোতা না হলে দেশটির
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর পদত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছেন।
শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি এমন জটিল আকার ধারণ করার পেছনে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার পরিবার এবং প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দার সরকারের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি এবং অপরিণামদর্শী নীতিকৌশল যেমন দায়ী, তেমনি এর পেছনে আন্তর্জাতিক শক্তিসমূহের কারও কারও ভূমিকা ও ইন্ধনও থাকতে পারে। এ অবস্থায় শ্রীলঙ্কা যত দ্রুত সংকট মোকাবিলায় কার্যকর ভূমিকা নিতে পারবে এবং আন্তর্জাতিক সাহায্যদাতা সংস্থাগুলোর আস্থা অর্জন করতে পারবে, তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। শ্রীলঙ্কার এই জটিল পরিস্থিতির সঙ্গে বাংলাদেশের পরিস্থিতির মিল কেউ কেউ খুঁজে দেখার চেষ্টা করেন। কিন্তু সেই মিল-অমিলের বিষয়গুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। শ্রীলঙ্কার উত্তাল পরিস্থিতি থেকে বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল যেভাবে উল্লাস প্রকাশ করছে এবং বাংলাদেশেও এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে বলে দাবি করছে, তাতে তাদের বগল বাজানোর মানসিকতারই প্রকাশ ঘটেছে। এখনই তারা সরকারের বঙ্গোপসাগরে নিক্ষিপ্ত হওয়ার কল্পনা করছে। কিন্তু শ্রীলঙ্কার মানুষ বর্তমানে যে অর্থনৈতিক এবং জীবনযাত্রার সংকটে পড়ছে, তাতে জনজীবনের কষ্টের দিকটি কত অমানবিক, সেটি যাঁরা বুঝতে চান না, তাঁরাই বাংলাদেশকে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলছেন।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতা মোটেও শ্রীলঙ্কার মতো নয়। কোভিড-উত্তরকালে বিশ্ব অর্থনীতির সংকটের কারণে আমাদের দেশেও বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য উচ্চমূল্যে আমদানি করতে হচ্ছে। ভোজ্যতেল, আটা, ময়দাসহ বেশ কিছু আমদানি করা পণ্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। কিন্তু দেশে ধান, খাদ্যশস্য, শাকসবজিসহ অন্যান্য পণ্যসামগ্রী যথেষ্ট উৎপন্ন হয়েছে, বাজারে সেসবের কোনো ঘাটতি নেই। তা ছাড়া, আমাদের দেশে যেসব মেগা প্রকল্প চলছে সেগুলোর নির্মাণ এখন শেষ পর্যায়ে, কোনো কোনোটি শিগগিরই উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। দেশের রিজার্ভও এখন ৪১ বিলিয়ন ডলারের ওপরে রয়েছে। উচ্চমূল্যে বেশ কিছু পণ্য আমদানি করতে হয়।
এ কারণে রিজার্ভে কিছু চাপ পড়লেও বাংলাদেশের রেমিট্যান্সপ্রবাহ এখনো স্বাভাবিক গতিতে চলছে। আমাদের রপ্তানি ব্যয় আমদানির চেয়ে কিছুটা কমে গেছে। কিন্তু এর জন্য দুশ্চিন্তা করার পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। গত দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও বাংলাদেশে পরিবারতন্ত্র ও কর্তৃত্ববাদী শাসন জেঁকে বসেছে, তেমন অভিযোগ সরকারবিরোধী মহল ছাড়া প্রবল নয়। কোভিড-উত্তর পরিস্থিতি কোনো দেশেই স্বাভাবিক নয়। তারপরও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার জরিপে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে ভালো এবং অন্যান্য দেশের মধ্যেও বেশ সন্তোষজনক বলে অভিহিত করা হয়েছে। সরকারের উচিত হবে সব ধরনের অপচয়, দুর্নীতি এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি কমিয়ে আনা, দেশকে বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতির কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যুক্ত না হয়ে দেশের শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং জনগণের দুর্ভোগ বাড়তে না দেওয়া।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৪ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৪ দিন আগে